কোটা আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসক
ওমরের নামে হবে সড়ক, শান্তর বাবা পাবেন চাকরি
সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ-সহিংসতায় চট্টগ্রামের তিনজন নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর ও ঢাকায় নিহত হয়েছেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক হিসেবে সদ্য যোগদান করা ফরিদা খানম। এসময় বিভিন্নভাবে সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি। এরমধ্যে ঢাকায় নিহত হওয়া বিএটিসি’র প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র ও বোয়ালখালীর মো. ওমর বিন আবছারের নামে সড়ক, ওমর গণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিবিএ’র ছাত্র শহীদ ফয়সাল আহমদ শান্তর বাবাকে চাকরি এবং বহদ্দারহাটে গুলিতে মারা যাওয়া ফার্নিচার মিস্ত্রী মো. ফারুকের সন্তানদের সরকারি স্কুলে ভর্তিসহ বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার কথা জানান জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নগরের বহদ্দারহাট, লালখানবাজার এবং বোয়ালখালীর তিন শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
বোয়ালখালীর নিহত ওমরের নামে হবে সড়ক—
গত ৫ আগস্ট বৈষাম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় নিহত হন বিএটিসি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও বোয়ালখালীর মো. ওমর বিন আবছার। তাঁর গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর আকুবদণ্ডী ওয়ার্ডে। সেখানে ওমরের কবর জেয়ারত করেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। পরে তাঁর বাবা হাজী নুরুল আবছার ও মা রুবি আক্তারসহ স্বজনদের সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানান তিনি। এসময় জেলা প্রশাসকের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শহীদ ওমরের পরিবারের সদস্যরা। শহীদ ওমরের কবরে যাওয়ার রাস্তা সংস্কার ও পাশে একটি সড়ক ‘শহীদ ওমরের’ নামে নামকরণের ঘোষণা দেন তিনি। নিহত ওমর ৫ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তৃতীয়। বড় বোন এমবিবিএস ডাক্তার ও ছোট তিন ভাই কোরআনে হাফেজ।
শান্তর বাবা পাবেন চাকরি—
গত ১৬ জুলাই নগরের মুরাদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হন ওমর গণি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল আহমদ শান্ত। তাঁর নগরের লালখান বাজারের বাঘঘোনা এলাকার বাসায় যান জেলা প্রশাসক। এসময় শান্তের বাবা জাকির হোসেন ও মা কোহিনুর আক্তারসহ স্বজনদের সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানান তিনি। এসময় আর্থিক ও মানবিক সহায়তা হিসেবে শান্তের মায়ের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। একইসঙ্গে শান্তর বাবার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। পরিবারে এক ভাই এক বোনের মধ্যে শান্ত বড়। তার ছোট বোন সিএমপি স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৭ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত।
ফারুকের সন্তানদের সরকারি স্কুলে ভর্তিসহ বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ—
গত ১৬ জুলাই নগরের বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিহত হন ফার্নিচার মিস্ত্রী মো. ফারুক। তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে নগরের লালখান বাজারের টাংকির পাহাড় এলাকার বাসায় যান জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। এসময় জেলা প্রশাসককে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ফারুকের স্ত্রী সীমা আক্তার। ফারুকের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা জানান। এসময় সীমা আক্তারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন জেলা প্রশাসক। এছাড়াও, ছেলে-মেয়েকে সরকারি স্কুলে ভর্তিসহ বিনাবেতনে পড়ালেখার সুযোগ করে দেবেন বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাদি-উর রহিম জাদিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা হিমাদ্রী খীসা প্রমুখ।
-সিভয়েস/মিমু