Cvoice24.com

‘বাংলার জ্যোতি’তে আগুন : বিপিসির তদন্ত প্রতিবেদন
অতিরিক্ত দাহ্য গ্যাসে বিস্ফোরণ

সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:৫২, ১ অক্টোবর ২০২৪
অতিরিক্ত দাহ্য গ্যাসে বিস্ফোরণ

এমটি বাংলার জ্যোতি জাহাজের ফোর পিক স্টোরে অতিরিক্ত পরিমাণে দাহ্য গ্যাস জমা হওয়ায় আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এছাড়া আগুন নির্বাপণের পর জাহাজটি ভেড়ানোর সময় ডলফিন জেটি-৭ এর পশ্চিম পাশের ফেন্ডার সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। 

ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শরিফ হাসনাতকে আহ্বায়ক করা হয় তদন্ত কমিটিতে।

তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আবুধাবী হতে আমদানি করা প্রায় ৯৮ হাজার ৩৮৩ মেট্রিক টন মারবান ক্রুড অয়েলবাহী মাদারভ্যাসেল 'ওমেরা ল্যাগাসি' ১৭ সেপ্টেম্বর কুতুবদিয়া বহির্নোঙ্গরে আগমন করে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে জাহাজটি থেকে ক্রুড অয়েল খালাসের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল খালাসের পরমহূর্তে জাহাজটির ফোর পিক স্টোরে (জাহাজের রশি, নোঙ্গর, স্পেয়ার পার্টস রাখার স্থান) অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফোর পিক স্টোরে ডেক ক্যাডেট সৌরভ কুমার সাহা, বিএসসির ফোরম্যান নুরুল ইসলাম ও শ্রমিক মো. হারুন রুটিন কাজ করতে গেলে সেখানে জমে থাকা অতিরিক্ত দাহ্য গ্যাসের কারণে বিস্ফোরণ হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাহাজটিতে থাকা ১০ হাজার ৯১৬ দশমিট ৮৪৬ মেট্রিক টন কার্গো নিরাপদে রয়েছে। কার্গো খালাস সম্পন্ন করতে প্রায় ২২ ঘন্টা সময়ের প্রয়োজন হবে। কার্গো খালাস সম্পন্ন করা হলে জাহাজটি মেরামত বা সংস্কারের উদ্দেশ্যে সরিয়ে নেওয়া হবে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) সূত্রে উল্লেখ করা হয়, জাহাজে থাকা অবশিষ্ট কার্গো খালাসের লক্ষ্যে জাহাজের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রতিনিধি পরিদর্শন করবেন। জাহাজটি নিরাপদ হিসেবে প্রত্যয়িত হলে জাহাজের অন্যান্য মেশিনারিজ ঠিক থাকা সাপেক্ষে কার্গো খালাসের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এম.টি. বাংলার জ্যোতি ও এম.টি. বাংলার সৌরভ জাহাজ দুটি ১৯৮৭ সালে নির্মিত। জাহাজ দুটির আয়ুষ্কাল প্রায় ৩৭ (সায়ত্রিশ) বছর। এই দুইটি জাহাজের বিকল্প জাহাজ দেশের অভ্যন্তরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ ধরনের জাহাজের বিকল্প না থাকায় উক্ত জাহাজ ২টি যথাযথ মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে চালু রাখা হয়েছে। 

এছাড়া তদন্ত কমিটির পক্ষে চারটি সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ ও বিদ্যমান লাইটার জাহাজ দুইটির ব্যবহারের উপযুক্ততা নির্ধারণের লক্ষ্যে একটি কারিগরী কমিটি গঠনের জন্য বিএসসিকে অনুরোধ করা যেতে পারে। বিএসসি'র লাইটার জাহাজ এম.টি. বাংলার জ্যোতি ও এম.টি. বাংলার সৌরভ ব্যবহার করে ক্রুড অয়েল লাইটারিং কার্যক্রম পরিচালনা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমদানি করা ক্রুড অয়েল খালাসের জন্য সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন অবিলম্বে চালু করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণে (ওএন্ডএম) ঠিকাদার নিয়োগ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা গেলে নিরাপদে ক্রুড অয়েল খালাস করা সম্ভব হবে। এসপিএম-এর মাধ্যমে জ্বালানি তেল খালাস কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ওএন্ডএম ঠিকাদার নিয়োগ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এমটি বাংলার জ্যোতি জাহাজকে কার্যকরভাবে ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব হবে কি না বা সম্ভাব্য বিকল্প এর বিষয়ে বিএসসির মতামত গ্রহণ করা যেতে পারে। জেটিসমূহে থাকা অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থাদি আরও আধুনিকায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শরিফ হাসনাতকে আহ্বায়ক, সংস্থাটির উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্ল্যানিং ও শিপিং) মো. মোস্তাফিজার রহমানকে সদস্য সচিব, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের মহাব্যবস্থাপক (কার্গো সুপারভিশন অ্যান্ড অপারেশন) ক্যাপ্টেন জামাল হোসেন তালুকদার, বিপিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন) মো. জাহিদ হোসাইন, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী, পদ্মা অয়েল কোম্পানী লিমিটেড উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আসিফ মালিক ও যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপককে (অপারেশন) মো. হেলাল উদ্দিন বিপিসি গঠিত এ কমিটিতে ছিলেন।

আরও পড়ুন :-

 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়

: