এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দিলেন মেয়র
গৃহকর খেলাপিদের তালিকা হচ্ছে
সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক
৪১ ওয়ার্ডে ১০০ জন করে গৃহকর খেলাপির তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তালিকা তৈরির জন্য এক সপ্তাহ সময়ও বেঁধে দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে প্রকৌশল ও রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মেয়র এ নির্দেশ দেন।
শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডের শীর্ষ ১০০ জন করে গৃহকর খেলাপিদের তালিকা ১ সপ্তাহের মধ্যে জমা দিন। রবিবার থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যাব। এদের বকেয়া গৃহকর দিতে বলব। কেউ আর্থিক সংকটে থাকলে আলাদা বিষয়। তবে কেউ গায়ের জোরে কর না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।’
দোকান-মার্কেট হাটবাজারের রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘চসিকের যে সমস্ত মার্কেট আছে, হাট-বাজার-ঘাট আছে সেগুলো থেকেও রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও কোনো মামলা থাকলে জানাবেন; সেগুলোও নিষ্পত্তি করতে উদ্যোগ নিব। হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর পরিবর্তে যারা কর দিচ্ছে না তাদের কাছ থেকে কর আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কর প্রদান আটোমেশনের মাধ্যমে নাগরিকদের কর প্রদান সহজ করতে হবে।’
কেউ নিম্নমানের কাজ করলে বিল দিব না
কেউ নিম্নমানের কাজ করলে বিল দেওয়া হবে না জানিয়ে চসিক মেয়র বলেন, ‘নগরের অবকাঠামোগত সক্ষমতার সাথে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জড়িত। এজন্য প্রকৌশল কাজের মান বাড়াতে হবে। ঠিকাদাররা যেসব নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে তা পরীক্ষা করে নিতে হবে। কেউ নিম্নমানের কাজ করলে বিল দিব না। যে সমস্ত সড়ক ভেঙে গেছে সেগুলো সংস্কারের দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।’
চসিকের আয় বাড়াতে জোর দিয়ে মেয়র বলেন, ‘প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলো থেকে সার উৎপাদন করে আয় করা যায় কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। এজন্য সংগৃহীত বর্জ্য থেকে পচনশীল জৈব পদার্থগুলোকে আলাদা করতে হবে। এরপর সেই সংগৃহীত জৈব পদার্থ থেকে সার উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়া যে সমস্ত মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলোকে প্রক্রিয়া করে প্লাস্টিকের দানায় রূপান্তর করে বিক্রি করে আয় বাড়ানো সম্ভব। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের যে সমস্ত স্থাপনা থেকে আয় আসার সম্ভব সেগুলোকেও কাজে লাগাতে হবে।’
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্জ্যের বিন নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা থেকে শুরু করে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল যা করা প্রয়োজন করতে হবে।’
বারইপাড়া খালের জলাবদ্ধতা দূর করতে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ
বারইপাড়া খাল প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়ে মেয়র বলেন, ‘নগরের জলাবদ্ধতা দূর করার ক্ষেত্রে বারইপাড়া খাল প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্প শেষ না হওয়ায় জনগণ খুবই কষ্টে আছে। দ্রুত এ প্রকল্পটি শেষ করতে হবে। নগরীতে সড়ক আলোকায়ন বাড়াতে হবে। নগরবাসীর অন্যতম প্রধান অভিযোগ সড়কে বাতি না থাকা। সড়কে আলোকায়ন নিশ্চিত করতে হবে, ব্যবহার করতে হবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি। এ সময় প্রধান প্রকৌশলীকে কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের নির্দেশ দেন মেয়র।
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা অফিসার মো. সাব্বির রহমান সানি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় ‘এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পিডি মো. আনিসুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, জসিম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, আনোয়ার জাহান, রিফাতুল করিম, তাসমিয়া তাহসিন, নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর প্রমুখ।