ফুটপাতের ড্রেনে স্ল্যাব নেই, এবড়ো-থেবড়ো সড়ক
সিআরবিতে পথচলতে নতুন ঝুঁকি
শাহরুখ, সিভয়েস২৪
দিনেরাতে ছিনতাইকারীর ঝুঁকি তো আছেই এখন পথ চলতে ভয় কখন পা পিছলে পড়তে হয় ড্রেনে! চট্টগ্রাম নগরের ‘ফুসফুস’ খ্যাত সিআরবিতে আসা যাওয়ার পথে এমন ঝুঁকি। সাত রাস্তার মোড় থেকে কাজীর দেউড়ি যাওয়ার পথে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্র পর্যন্ত ফুটপাতের নিচে ড্রেনের অন্তত ৮০ শতাংশ স্ল্যাব নেই। এতে নারী-শিশু, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষের চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। রাতের অন্ধকারে ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। একটু মাথা নোয়ালেই খুঁজে পাওয়া যাবে অসংখ্য পথচারীর জুতা-স্যান্ডেল।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকা হলেও সিআরবি এলাকার সড়ক, ফুটপাত ও ওয়াকওয়ের নির্মাণ, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। দীর্ঘদিন ধরে স্ল্যাবহীন ড্রেন পড়ে থাকলেও চোখে পড়েনি সংশ্লিষ্ট কারো।
ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সিআরবি এলাকায় বিনোদনপ্রেমীদের খুব বেশি আনাগোনা। নিয়মিত ব্যয়াম করতেও অসংখ্য মানুষ ছুঁটে আসেন এখাানে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সিআরবি সড়কের সাত রাস্তার মোড় থেকে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্র পর্যন্ত এবং ফুটপাতের সাত রাস্তার মোড় থেকে বক্ষ ব্যাধি হাসপাতালের সামনে পর্যন্ত ৩৯টি স্ল্যাবের ৩২টি নেই। ঢাকনা না থাকায় ড্রেনে ময়লা আবর্জনা পরে বিভিন্ন স্থানে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআরবি এলাকার একজন টং দোকানি বলেন, সিআরবি এলাকা মাদকসেবীদের আখড়া। মাদকসেবীরা মাদক কেনার টাকা যোগাড় করতেই ঢাকনা চুরি করে ভাঙারির দোকানে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছে।
সিআরবি এলাকার এক ভ্রাম্যমাণ নারী ব্যবসায়ী জানান, ধাপে ধাপে স্ল্যাবগুলো চুরি করে নিয়ে গেছে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে খোলা ড্রেনে। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা না থাকায় চোরেরা সহজেই স্ল্যাবগুলো খুলে নিয়ে যায়। অনেকদিন যাবত স্ল্যাবগুলো নেই।
ফুটপাত ধরে হেটে আসা এক বৃদ্ধ পথচারী বলেন, ‘এই এলাকায় কিছু অপরাধী চক্র আছ, যারা রাতের আধারে স্ল্যাবগুলো খুলে নিয়ে গেছে। এতে পথচারীরা দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এখানে আমাদের চরিত্রের অভাব আছে। প্রশাসন কতক্ষণ পাহারা দিবে।
মাহবুবুর রহমান নামের একজন পথচারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই ফুটপাতের স্ল্যাব নেই। খোলা ড্রেনে মানুষ পরে আহত হচ্ছে। ঢাকনা না থাকায় প্লাস্টিক-পলিথিন জাতীয় ময়লা আবর্জনায় ড্রেন ভরে যাচ্ছে। পানি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এসব দিকে কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্ল্যাব বসানোর হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। সিভয়েস২৪’কে বলেন, একজন সহকারী প্রকৌশলীকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্ল্যাবগুলো বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।