আপাত রক্ষা আউটার স্টেডিয়াম, সিআরবিতেই বিজয়মেলা
মিনহাজ মুহী, সিভয়েস২৪
তামিম নাফিস আফতাবদের মতো উঠে আসা একঝাঁক ক্রীড়াতারকার ‘জন্মস্থান’ চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামে ফের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার আয়োজন প্রায় সেরেই ফেলেছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। অথচ বছরধরে ‘খেলার মাঠে মেলা নয়’— ঢাকঢোল পিটিয়ে এমন ‘নীতিবাণী’ প্রচার করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। যেন ‘যে নালে উৎপত্তি সে নালেই বিনাশ’। খেলোয়াড়, ক্রীড়ামোদিদের তোপের মুখে এমন বিনাশী সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো জেলা প্রশাসন। আউটার স্টেডিয়ামে নয়, মেলা হবে রেলওয়ের মালিকানাধীন সিআরবির মাঠে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী মেলা করার সিদ্ধান্ত নেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সেই হিসেবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চট্টগ্রামেও বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়। তবে দেশব্যাপী একদিনের মেলা হলেও চট্টগ্রামে আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে সাতদিনব্যাপী বিজয় মেলা বসবে। আর সেভাবেই মেলার স্টলগুলো সাজাতে নগরের আউটার স্টেডিয়াম মাঠে লাগানো হচ্ছিল বাঁশের খুঁটি। তবে এখন আউটার স্টেডিয়াম মাঠ থেকে সরিয়ে বিজয় মেলার আয়োজন সিআরবিতে করা হবে। তাই মেলা একদিন পিছিয়ে শুরু হবে আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল সাড়া দেননি। তবে মেলার স্থান পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান। তিনি সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘আউটার স্টেডিয়ামে মেলার আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে। মেলার ভেন্যু পরিবর্তন করে সিআরবিতে করা হবে। তবে আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকেই বিজয় মেলা বসবে।’
উল্লেখ্য, আউটার স্টেডিয়াম সারা বছরই বিভিন্ন মেলাসহ ইভেন্ট আয়োজনের জন্য দখলে থাকতো। এছাড়াও, মাঠটি বিভিন্ন গাড়ির পাকিংসহ ব্যবহার হতো পরিত্যক্ত কোনো ট্রাক টার্মিনাল। সেই মাঠের প্রাণ ফিরিয়ে খেলার উপযুক্ত করতে আন্দোলন করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের মানুষ। পরে ২০২৩ সালে আউটার স্টেডিয়াম এলাকায় দুই পাশে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদ করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর আউটার স্টেডিয়াম উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে এক কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১১ হাজার বর্গফুট আয়তনের মাঠের মধ্যে ৮ হাজার বর্গফুটে ফুটবল খেলার মাঠ হিসেবে রাখা হয়। সেই সময় তৎকালীন জেলা প্রশাসক বলেছিলেন, ‘আউটার স্টেডিয়ামে আর কোনো মেলা হতে পারবে না। নতুন আঙ্গিক দেওয়ার পর এখানে নিয়মিত খেলাই হবে। এর মাধ্যমে মাঠটির অতীত ঐতিহ্য ফিরে আনা হবে।’