জাপান-বাংলাদেশ চুক্তি সই
পরিবহনের দূষণ পরিমাপে চট্টগ্রামের সড়কে বসবে জাপানি যন্ত্র
সিভয়েস২৪ ডেস্ক

পরিবহন কি পরিমাণে নগর দূষণ করছে তা পরিমাপ করতে সড়কের পাশে বসছে যন্ত্র। সাড়ে ৭ কোটির চেয়ে বেশি টাকায় জাপান থেকে এসব যন্ত্র কিনবে সরকার। চট্টগ্রাম ও ঢাকা নগরের বিভিন্ন সড়কে এসব যন্ত্র বসানো হবে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের মধ্যে ‘বিনিময় নোট’ ও ‘অনুদান চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহ্রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ‘বিনিময় নোট’ ও ‘অনুদান চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন। জাপান সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনচি ‘বিনিময় নোট’ এবং ঢাকায় নিযুক্ত জাইকা’র চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদি ‘অনুদান চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, ‘দ্যা প্রজেক্ট ফর ইম্প্রুভমেন্ট অব ইক্যুইপমেন্ট ফর এয়ার পলুশন মনিটরিং প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মোট ৮টি জাপানি প্রযুক্তির যন্ত্র স্থাপন করা হবে। রাজধানীর উত্তরার হাউজবিল্ডি, বনানী, রামপুরা, যাত্রবাড়ী ও ধানমিন্ডর সড়কের পাশে এই স্টেশন স্থাপন করা হবে। অন্যদিকে চট্টগ্রামের সিডিএ(চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) এবং বিএসআই-এর(বাংলাদেশ সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন) জমিতে দুটি স্টেশন স্থাপন করা হবে। একটি স্টেশন থাকবে ভ্রাম্যমাণ। যানবাহন যে সব এলাকায় বেশি সেই সব এলাকায় এটা টহল দেবে। এসব যন্ত্রপাতি ২৪ ঘণ্টা বায়ুর মান দেবে এবং পরিবহন কি পরিমাণে দুই নগরীতে দুষণ বাড়াছে তার তথ্য দেবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, আধুনিক যন্ত্র ২৪ ঘণ্টা ডাটা সরবরাহ করবে। কোন পরিবহন কি পরিমাণে দূষণ করছে দূষণ রোধে সরকারের করণীয় বিষয়ও নির্ধারণ হবে এর মাধ্যমে। দুষণরোধে পরিবহন খাত পরিবর্তন ও আধুনিকতায় করণীয় বিষয়ে অবগত হতে পারবে সরকার। এর পরে পরিবহন খাতকে ঢেলে সাজাতে পারবে সরকার। পরিবহন খাতে বড় আকারে বিনিয়োগও করেতে চায় জাপান। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাপানি প্রযুক্তি স্থাপনের পর এগুলো ১০ বছর সেবা দেবে।
প্রকল্পের প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ১০৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪১ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং জাপানি অনুদান ৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। মার্চ ২০২৫ হতে জুন ২০২৮ পর্যন্ত। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রাস্তার পাশের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করা এবং সড়ক ও পরিবহন সম্পর্কিত দূষনে অবদান মূল্যায়ন করা।
নতুন একটি প্রকল্পের আওতায় পরিবহন থেকে বায়ুদূষণের মাত্রা নিরুপণের জন্য দুটি শহরের রোডসাইড মনিটরিং স্টেশন স্থাপন কর হবে এবং বায়ুদূষণ কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যন্ত্রপাতিগুলো জাপান থেকে আমদানি করা হবে। পরিবহন ছাড়াও অন্যান্য যেসব কারণে বায়ুদূষণ হয় তা নিরুপণ করা এবং বায়ুদূষণের ফলে মানব স্বাস্থ্যের উপর যে প্রতিকূল প্রভাব পড়ে তা নিরুপণ করাসহ বায়ুদূষ সংক্রান্ত অন্যান্য চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করে তা সমাধানের কৌশল এবং কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। প্রকল্পটির ডিপিপি(উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি(প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভায় অনুমোদন হয়েছে। সামনের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির(একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে যাচ্ছে প্রকল্পটি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মোহাম্মাদ আব্দুল মোতালিব বলেনন, প্রকল্পের আওতায় মোট ৮টি আধুনিক জাপানি প্রযুক্তির এয়ার পলুশন মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করা হবে। যন্ত্রগুলোর এয়ার কোয়ালিটির ২৪ ঘণ্টা ডাটা দেবে। রোড সাইডের দূষণ কাউন্ট করা হবে। কি পরিমাণে পরিবহন দুষণ করছে তা আইডেন্টিফাই করা হবে। এর পরে সরকার পলিসি ঠিক করবে কি করা যায়।
জাতীয় সব খবর