Cvoice24.com


মৃত্যুর দুয়ার থেকে যেভাবে ফিরলেন মেয়র নাছির! (ভিডিওসহ)

প্রকাশিত: ১২:৪৭, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
মৃত্যুর দুয়ার থেকে যেভাবে ফিরলেন মেয়র নাছির! (ভিডিওসহ)

ছবি: সিভয়েস

আ জ ম নাছির উদ্দীন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রিয় মেয়র। দায়িত্ব পালন করছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। এক বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবন তাঁর। ১৯৬৯ সালে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। এরপর ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর শোককে শক্তিতে পরিণত করে পুরোদমে সক্রিয় হন ছাত্র রাজনীতিতে। সেই থেকে শুরু রাজনীতির মাঠে পথচলা। তবে খুব একটা মসৃণ ছিলোনা তাঁর এই পথচলা। বন্ধুর এই পথে মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে আসার ঠিক তেমনি একটি রোমহর্ষক অনুভূতি তুলে ধরেছেন তিনি সিভয়েস’এর কাছে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সিভয়েস প্রতিবেদক হিমাদ্রী রাহা। পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো তাঁর সেই বর্ণনা।

-তখন অপারেশন ক্লিনহার্ট চলছিল দেশব্যাপী। সন্ত্রাস দমনের নামে বিএনপি সরকার দেশব্যাপী আওয়ামী নেতাকর্মীদের চরম নির্যাতন করছিলো। তবে তখন আমার কিছু শুভাকাঙ্খী ছিলো। তারা আমাকে জানালো  বিরোধী রাজনীতিকে দমনের জন্য বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে যারা কাজ করছে, যারা খুব ভালো সংগঠক, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের নামে বিএনপি বেশকিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে আমি ছিলাম টার্গেট। তো এসব কথার কিছু বিশ্বাস করেছি কিছু করিনি।

তখন আমার এক অন্যতম শুভাকাঙ্খী রেজ্জাকুল হায়দার ডিজিএফআইতে ছিলেন। যিনি এখন গ্রেফতার আছেন। তিনি আমাকে বললেন, আমি কিছু কথা শুনেছি আপনাকে নিয়ে। একটু সরাসরি কথা বলতে চাই। এরপর তিনি আমাকে জানালেন যে, আমি বিএনপির রাজনীতির জন্য পথের কাঁটা। আমি দুই দিক থেকেই শক্তিশালী। একদিকে ভালো সংগঠক আরেকদিকে ভালো মাঠকর্মী। তাই আমাকে অপারেশন ক্লিন হার্টের প্রধান টার্গেট বানানো হয়েছে। এর কয়েকদিন পরই তিনি আমাকে আবার ফোন দিলেন। তখন প্রবর্তক মোড়ে গাড়িতে ছিলাম। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট থেকে একটি সামাজিক অনুষ্ঠান শেষ করে আরেকটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। তো রেজ্জাকুল হায়দার জানালেন, তোমার বিষয়টিতো এভাবে ভাববে বুঝিনি, বিষয়টা খুবই সিরিয়াস। এখন বিস্তারিত কিছুই বলতে পারবো না। পরে কখনো বলবো। তবে তুমি সময়ক্ষেপণ না করে যত দ্রুত পারো সরে যাও। তখন আমি কিশলয় ক্লাব থেকে কিং অব চিটাগাংয়ে আরেকটি সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলাম। তখন আরেক শুভাকাঙ্খীও জানালো একই কথা। বললো তুমি সরে যাও।

তো এসব সামাজিক অনুষ্ঠান শেষ করে আমি বাসায় ফিরলাম রাত বারোটার একটু আগে কি পরে হবে। তবে আমার মধ্যে কেন জানি একটা অস্থিরতা কাজ করছিলো। এটাই স্বাভাবিক। এরপর রাত তিনটার দিকে উঠে শেভ করি। তারপর ভাবলাম আমি নামায পড়তে চলে যাই মসজিদে। যেহেতু বাসার সামনেই আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ সামনেই আমি সেখানে তাহাজ্জুত আর ফজরের নামায পড়তে চলে গেলাম। পরে সেখানে নামায আদায় করলাম। পরে নামায শেষ করে রাস্তা পার হয়ে বাসার দিকে যেতেই আমার ছোটভাইয়ের সাথে দেখা। ও জানালো যে ভাইয়া আমাদের বাসা তো আর্মি ঘিরে রেখেছে। আপনি বাসায় যাবেন না। পরে সেখান থেকেই আমি ভাগ্যক্রমে একটা গাড়ি পেয়ে যায়। সেটা করে তাড়াতাড়ি এলাকা ত্যাগ করি আমি। এরপর তো আত্মগোপনে চলে যাই। তো এই বিষয়টা তো আমার কাছে এখনো মিরাকেল মনে হয়। আমি যে বাসায় রাতে ঢুকেছি এটা আর্মিরা নিশ্চিত ছিলো। কারণ তারা আমাকে ফলো করছিলো। সেসময় মিরসরাইয়ের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দীনকেও আটক করে তারা। পরে তার কাছ থেকে জানতে পারি আমাকে পেলেই নাকি মেরে ফেলতো তারা। বলা যায় কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানেই অলৌকিক ভাবে বেঁচে যাই আমি।

-সিভয়েস/এসএ/কেএম

হিমাদ্রী রাহা

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়