Cvoice24.com


খেজুরের ঔষধি গুণ

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১ অক্টোবর ২০১৮
খেজুরের ঔষধি গুণ

যদিও সারা বছরই খেজুর পাওয়া যায়, তবু রমজান মাস ছাড়া খেজুর কমই খাওয়া হয়। তবে আপনি জেনে খুশি হবেন যে মিষ্টি এই ফলটি খেলে ফলটি পুষ্টির এক অসীম উৎস। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত খেজুর খেলে অনেক রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। যদি আপনি মিষ্টি খাবার খেতে পছন্দ করেন ও ঘনঘন স্ন্যাকসজাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তবে অস্বাস্থ্যকর খাবারের বদলে খেতে পারেন পুষ্টিকর খেজুর। এছাড়া কাস্টার্ডে মিশিয়ে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারেন খেজুর। খেজুরে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ফসফরাস, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও তেল। নিয়মিত খেজুর খেলে দূরে থাকতে পারবেন বিভিন্ন রোগ থেকে।

মরুঅঞ্চলের ফল খেজুর। পুষ্টিমানে যেমন এটি সমৃদ্ধ, তেমনি এর রয়েছে অসাধারণ কিছু ঔষধিগুণ। চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয়েছে, সারা বছর খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া, এই ফলটিতে রয়েছে প্রাণঘাতী রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা। তাই বলা হয়, দিনে ৫টি করে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস রাখা উচিত। তাহলে হাজারো ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

জেনে নিন খেজুরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে-

শরীরে শক্তি যোগায়
খেজুরে আছে গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ, যা তাৎক্ষণিক শরীরে শক্তি উৎপাদন করে। শরীর খুব ক্লান্ত থাকলে খেজুর শরীরের ক্লান্তি দূর করে নিমিষেই চাঙা করে তোলে। পক্ষঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী।

কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমের সমস্যা দূর করে
খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ, যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খেজুর নিয়মিত খেলে দূর হয় হজমের সমস্যা।

হৃদরোগের ঝুঁকি
খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া হৃৎপিণ্ডের সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ খেজুর।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ায় খেজুর। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য খেজুর খুবই উপকারী। এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। গ্লুকোজের পাশাপাশি প্রাকৃতিক চিনি পাওয়া যায় খেজুর থেকে যা এনার্জি বাড়ায়। খেজুরে থাকা ভিটামিন সি ও ডি ত্বক ভালো রাখে। এছাড়া খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে রাতকানা প্রতিরোধেও সহায়ক।

ত্বক ভালো রাখে
খেজুরের ফ্রুক্টোজ ত্বকের লাবণ্য বাড়ায়, ত্বক সুন্দর রাখে।

গর্ভবতী মায়েদের জন্য
৭/৮ মাস সময় থেকে গর্ভবতী মায়েদের জন্য খেজুর একটি উৎকৃষ্ট খাদ্য। গর্ভবতী মায়েদের শরীরে অনেক দুর্বলতা কাজ করে। তখন খেজুর মায়েদের শরীরের এই দুর্বলতা কাটাতে অনেক সাহায্য করে। নবজাতকের প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য মায়ের বুকের দুধ বাড়াতেও খেজুর কার্যকর ভূমিকা রাখে।

মায়ের বুকের দুধ
খেজুর বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের জন্য সমৃদ্ধ এক খাবার, যা মায়ের দুধের পুষ্টিগুণ আরও বাড়িয়ে দেয় এবং শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক। আর খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, যা হাড়কে মজবুত করে।

শিশুদের রোগবালাই
খেজুর শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও প্রতিরোধ করে। তাই শুধু রমজান মাসে কেন, বছরজুড়েই খাদ্য তালিকায় থাকুক খেজুর।

দৃষ্টিশক্তি
খেজুর দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে বিশেষভাবে সহায়ক। প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস রাতকানা রোগ ভালো করতেও সাহায্য করে থাকে।

আয়রন
খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস দেহের আয়রনের অভাব পূরণ করে এবং রক্তস্বল্পতা রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। যাদের এই রক্তস্বল্পতার সমস্যা রয়েছে তাদের প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।

হাড় ও দাঁত ভালো রাখে
আমরা জানি, ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের সুস্থতায় বিশেষভাবে কাজ করে। আর খেজুর দেহে ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে।

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
খেজুরে রয়েছে প্রচুর পটাসিয়াম, যা শরীরের স্নায়ুগুলোকে সচল রাখার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুরে প্রচুর পটাসিয়াম রয়েছে, যা ষ্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

মস্তিস্কের জন্য দরকারী
খেজুর মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে।

খেজুরের স্বাস্থ্য উপযোগিতা অনেক। খেজুরের মধ্যে প্রাকৃতিক আঁশের আধিক্য থাকায় এর উপকারিতা ও গুরুত্ব অনেক। গবেষকদের মতে শুকনা খাবারের মধ্যে খেজুরেই সবচেয়ে বেশি পলিফেনল থাকে। বিপজ্জনক অনেক রোগ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে পলিফেনল। খেজুরের চেয়ে ভালো পটাশিয়াম উৎস আর হয় না। এটা সোডিয়ামেরও ভালো উৎস। কিডনি ও স্ট্রোক জটিলতা এড়াতে এর ব্যাপক প্রয়োজন রয়েছে। এ কারণে চিকিৎসকরা প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

 

সিভেয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়