Cvoice24.com


আমার জানাজায় সহস্রাধিক লোক না হলে আত্মার শান্তি হবে না- নিয়াজ মোর্শেদ এলিট (ভিডিও-সহ)

প্রকাশিত: ১৩:৪৩, ৮ অক্টোবর ২০১৮
আমার জানাজায় সহস্রাধিক লোক না হলে আত্মার শান্তি হবে না- নিয়াজ মোর্শেদ এলিট (ভিডিও-সহ)

সিভয়েসকে দেয়া নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের বিশেষ সাক্ষাৎকার

নিয়াজ মোর্শেদ এলিট। তরুণ রাজনীতিবিদ। নিজের মেধা ও যোগ্যতায় ইতোমধ্যে স্থান করে নিয়েছেন দেশের আওয়ামী রাজনীতিতে। সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটিতে। সম্প্রতি তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন সিভয়েস’এর। ব্যক্ত করেছেন নিজের রাজনৈতিক ভাবনা’সহ চলমান রাজনীতির নানা দিক। সিভয়েস পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো সেসব কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিভয়েস প্রতিবেদক হিমাদ্রী রাহা।

সিভয়েস- একজন তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের রাজনীতিকে কিভাবে মূল্যায়ণ করবেন?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- আসলে রাজনীতি হচ্ছে একটি চলমান প্রক্রিয়া। রাজনীতির অর্থ হলো গণমানুষের সেবা করা। এখানে ধৈর্যের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের মতো তরুণ প্রজন্ম যারা আছি তাদের বলা হয়ে থাকে মিলেনিয়াম জেনারেশন। যাদের বেশিরভাগেরই বয়স ৪০ এর নীচে এবং তারাই কিন্তু এদেশের হাল ধরবে। বাংলাদেশ পৃথিবীর তৃতীয় একটি দেশ যেখানে মোট জনসংখ্যার সিংহভাগই তরুণ। সেদিক থেকে বলা যায় শুধু রাজনীতিই নয় অর্থনীতি,বাণিজ্য, সেবাখাত’সহ সব খাতেই তরুণরা নেতৃত্ব দেবে। আমরা যারা তরুণ বয়সেই রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছি একটা উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছি। তা হলো রাজনীতির মাধ্যমে গণমানুষের সেবা করা। আর আমাদের এখন উদ্দেশ্য হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের মধ্যে যে ডেলটা প্ল্যান দিয়েছেন সেটিকে সফল করা।

সিভয়েস- সুশিক্ষিত ও স্বশিক্ষিত হয়েও বিদেশে সমৃদ্ধ জীবনের হাতছানি ছেড়ে রাজনীতির মতো এই বন্ধুর পথ কেন বেছে নিলেন?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- যেহেতু আমি একটি ব্যবসায়িক পরিবারের সন্তান সেহেতু আমি ছোটবেলা থেকেই ব্যবসার দিকগুলো দেখে আসছি। কিন্তু এসবের ভেতরেও আমি একটা বিষয় লালন করেছি। তা হলো সংগঠন করা ও জনগণের জন্য ভালো কিছু করা। আর এই ইচ্ছাশক্তি থেকেই আমি অনেকগুলো সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছি। চট্টগ্রামের খুলশি ক্লাব, জুনিয়র চেম্বার আমি প্রতিষ্ঠা করেছি। আমি একজন ক্রীড়া সংগঠক। আমি ঢাকা ব্রাদার্স ও চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়নের ক্রিকেট কমিটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি একুশে বইমেলা পরিষদের সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করছি। আসলে সাংগঠনিক যে বিষয়টা সেটা আমাকে ছোটবেলা থেকেই তাড়িত করতো। এসব সংগঠন করতে গিয়ে যেটা বুঝলাম তা হলো রাজনীতিই হলো একমাত্র পথ যার মাধ্যমে গণমানুষের জন্য কাজ করা যায়। জানি রাজনীতির পথ মসৃণ নয়। অনেক উত্থান-পতনের মধ্যদিয়েই এই পথ পাড়ি দিতে হবে। রাজনীতি করতে গেলে এই চ্যালেঞ্জ নিতে হবেই। একজন রাজনীতিবিদ কিন্তু সমাজের সব সমস্যার সমাধান করতে পারে। একজন ডাক্তার কিন্তু শুধু চিকিৎসাই দেয়। একজন ইঞ্জিনিয়ার কিন্তু শুধু প্রকৌশলের কাজই করতে পারে। একজন মোটর মেকানিকের কাছে আমরা গাড়ির সমস্যার সমাধান করতে পারি। কিন্তু একজন রাজনীতিবিদের সমাজের প্রতিটি সেক্টরের প্রত্যেক মানুষের সাথে যোগাযোগ থাকে। যার কারণে মানুষ যখন কোনো সমস্যা নিয়ে একজন রাজনীতিবিদের কাছে আসে তখন সে একটা সমাধান অবশ্যই পায়। দেখুন আমি লেখাপড়া করেছি, ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছি। পরিবারিকভাবেও অর্থবিত্তের অভাব নেই। চাইলেই দেশে কিংবা বিদেশে একটা আরাম আয়েশের জীবন বেছে নিতে পারতাম। কিন্তু তা আমাকে কখনোই টানেনি। আমাকে কেবল মাটি ও মানুষই টেনেছে। বলতে গেলে গণমানুষের সেবা করার জন্যই, দেশের জন্য কাজ করার জন্যই মূলত রাজনীতিতে আসা।

সিভয়েস- রাজনীতি করতে গিয়ে আপনি জনসম্পৃক্ততার বিষয়টি কেমন উপভোগ করেন?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- জনসম্পৃক্ততা ও জনগণের ভালোবাসাই একজন রাজনীতিবিদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আমরা সবাই একদিন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবো। পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর যদি ভালো কাজগুলো মানুষের মনে নাড়া দেয় সেটাই তো স্বার্থকতা। আমি এটা বিশ্বাস করি, আমি যেদিন মারা যাবো সেই জানাজায় যদি সহস্রাধিক লোকই না হয় তবে হয়তো আমার আত্মা শান্তি পাবে না। এজন্যই রাজনীতি করছি। সবসময় চেষ্টা করি জনগণের পাশে থাকার। জনগণের সেবা করার। যদি আমার দ্বারা কারো উপকার হয় তবে সেটাই আমার স্বার্থকতা।

সিভয়েস- দেশের রাজনীতিতে এখন তারুণ্যের জয়-জয়কার। আপনি নিজেও তরুণ বয়সে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মতো একটি দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান করে নিয়েছেন। এটিকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ণ করবেন?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- দেখুন আগেও বলেছি আজকের তরুণরাই কিন্তু আগামীর রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও তরুণ নেতৃত্ব সৃষ্টির ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। তিনি আমাকে এই তরুণ বয়সে ড. শাম্মী আহমেদের নেতৃত্বে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। এছাড়া আমাদের দলেও অনেক তরুণ আছেন, যারা নিজ যোগ্যতায়, মেধা ও তারুণ্য দিয়ে দলের জন্য- দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ একটি বিশাল দল। এই দলের কর্মযজ্ঞও বেশি। তাই দায়িত্বও বেশি। আমরা আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আর একটা কথা না বললেই নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তরুণদের উপর আস্থা রাখছেন। এটাই কিন্তু বড় প্রাপ্তি।

সিভয়েস- আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আপনার নির্বাচনী এলাকা মীরসরাই থেকে মনোনয়নের ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- চট্টগ্রাম-০১ আসন অর্থাৎ মীরসরাই আমার জন্মস্থান। সেখানকার গণমানুষের জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি। মীরসরাইয়ের বেশ কিছু সামাজিক সংগঠনের সাথে দীর্ঘসময় ধরেই নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিটি ইউনিয়নে কাজ করছি। আমি যেহেতু মানবাধিকার কমিশনের উত্তর জেলার সভাপতি সেহেতু কমিশনের প্রতিটি ইউনিটভিত্তিক কমিটির সাথে কাজ করছি। আর আমি যেহেতু দল করি তাই দলের হয়ে নমিনেশন চাইবো। সেক্ষেত্রে মাননীয় নেত্রী যদি আমাকে নমিনেশন দেয় তবে আমি একটি ডিজিটাল মীরসরাই গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। আর আমাকে যদি নমিনেশন না-ও দেন, সেক্ষেত্রে যাকেই মাননীয় নেত্রী নমিনেশন দিবেন তাঁর জন্যই নৌকার প্রার্থী হিসেবে জয়যুক্ত করার জন্য নিরলস কাজ করে যাবো।

সিভয়েস- এই সরকারের উন্নয়নকে আপনি কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- গত দশ বছরে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তা আর কোনো সরকারের আমলে হয়নি। বলতে গেলে সকল উন্নয়নই দৃশ্যমান। তবে বিশেষ করে বলতে গেলে পৃথিবীর বুকে যে মাইলস্টোনটা সেট করেছে বাংলাদেশ, তা হলো পদ্মা সেতু। এই পদ্মা সেতু আমাদের নিজস্ব ফাইন্যান্সে আমরা করে দেখিয়ে দিচ্ছি ‘বাংলাদেশ মাথা নোয়াবার নয়’। আমরা আর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ নই। একটি প্রতিষ্ঠিত জাতি হিসেবে আমাদের যা যা প্রয়োজন তার প্রত্যেকটি খাতে আমরা কাজ করছি এবং সফলতাও আসছে।

সিভয়েস- একজন নাগরিক হিসেবে কেমন বাংলাদেশ আপনি দেখতে চান?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- একজন নাগরিক হিসেবে আমি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ দেখতে চাই। যেখানে ধর্ম হবে যার যার, উৎসব হবে সবার। ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিলো। কিন্তু বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই ধরণের বিষবৃক্ষকে উপড়ে ফেলা হচ্ছে। আমরা চাই আমাদের নতুন প্রজন্ম অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ হোক।

সিভয়েস- একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে আমি জনগণের পাশে থাকতে চাই। জনগণের ভালোবাসায় বাঁচতে চাই। এককথায় আমি একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ দেখতে চাই।

সিভয়েস- আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের সাথে আপনারা কিভাবে সমন্বয় করছেন?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- দেখুন আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছে আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতি তুলে ধরছি। বিগত সরকারের সময় কি হয়েছিলো আর এখন কি হচ্ছে এসব তুলে ধরছি। তাদেরকে আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করছি। আর নির্বাচনকালীন যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক আসবে তাদেরও আমরা আমাদের উন্নয়নের বিষয়ে অবহিত করবো।

সিভয়েস- আপনাকে ধন্যবাদ
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট- আপনাকে ও সিভয়েস’এর সকল পাঠকদেরও ধন্যবাদ।

সিভয়েস/এস.আর

 

হিমাদ্রী রাহা

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়