জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের ‘নাট্যজন সম্মাননা’ পেলেন মোস্তফা কামাল যাত্রা

মঞ্চ নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের ‘নাট্যজন সম্মাননা’ পেলেন বিশিষ্ট মঞ্চাভিনেতা, মঞ্চ নাটক নির্দেশক, মনো বিশ্লেষক নাটক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকলা বিভাগের অতিথি শিক্ষক মোস্তফা কামাল যাত্রা। দলটির ৩৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ৬ দিনব্যাপী নাট্যপার্বণ ২০১৯ এর উদ্বোধনী দিন শনিবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে তাকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। 

উদ্বোধক ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আলম মোস্তফা কামাল যাত্রাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন এবং হাতে সম্মাননা স্মারক ও ক্রেস্ট তুলে দেন। জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক মো. আশিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দলটির সহ-সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাইয়ান রাইন এবং উৎসব কমিটির আহবায়ক নুরুল ইসলাম সাইমন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, ‘মোস্তফা কামাল যাত্রার মতো একজন নাট্যজনকে সম্মাননা তুলে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। বিশেষ করে মনোবিশ্লেষক নাট্য আন্দোলনের এই পুরোধা ব্যক্তিত্বের কারিগরী সহযোগীতায় যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ও এই ধারার নাট্য বিজ্ঞানের বিদ্যায়তনিক পাঠ ও চর্চায় সম্পৃক্ত হতে পেরেছে; তার জন্য যাত্রার প্রস্তাবনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের মানসিক বিপর্যয় রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রচলিত সাইকোথেরাপি সেবার পাশাপাশি সৃজনকলা ভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষাকলা কেন্দ্রিক সেবাদানে আগ্রহী।’ 

মোস্তফা কামাল যাত্রা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের আহবানে ২০০৫ সালে তৎকালীন নাটক ও নাট্যতত্ত্ক বিভাগে থেরাপিউটিক থিয়েটারের বিদ্যায়তনিক পাঠের সূচনা ঘটাতে এই ক্যাম্পাসে আসা। বর্তমানে এই বিভাগে এই নাট্যবিজ্ঞান একাডেমিক বিষয় হিসাবে পঠিত হচ্ছে। সামগ্রিক পারিপার্শ্বিক কারণে শিক্ষা জীবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকালীন জীবনাচার, শিক্ষার্থীদের মনের উপর নানান ধরনের চাপ সৃষ্টি করে। ফলে হতাশ হয়ে শিক্ষার্থীরা আশক্তির পাশাপাশি বিভিন্ন নেতিবাচক আচরণে অভ্যস্থ হয়ে উঠে। যা তাদের পূর্ণতা ও মানবিক বিকাশের পথকে রূদ্ধ করে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিৎ ক্যাম্পাসে আবেগগত কারণে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিপর্যয় রোধে বিকল্পধারার নাট্য বিজ্ঞান অনুশীলন ও চর্চার পথকে প্রশস্থ করা। তা হলে শিক্ষার্থীরা স্বতস্ফূর্তভাবে সৃজনশীলতার বিকাশ যেমন ঘটাতে পারবে; তেমনি গুণগত মানের শিক্ষা অর্জনে সক্ষম হবে।’

শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ মনোসামাজিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির অনুকুলে রাখার জন্য মনোবিশ্লেষনধর্মী নাট্যসেবা প্রদানে সক্ষম একটি পূর্ণাঙ্গ থেরাপিউটিক আর্টস ফোকাস্ড সাইকোসোশাল কেয়ার অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার খোলার প্রতি কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মোস্তফা কামাল যাত্রা। 

সিভয়েস/এএস