Cvoice24.com


সাজানো দুর্ঘটনার অপেক্ষায়!

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ১৩ নভেম্বর ২০১৯
সাজানো দুর্ঘটনার অপেক্ষায়!

ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

লাল ব্রীজটির নাম কালুরঘাট সেতু। অনেক কথা জড়িয়ে আছে এই ব্রীজটিকে নিয়ে। কিছুদিন আগে এই ব্রীজটির ভিকটিমদের শেষ অভিভাবকটিও আমাদের ছেড়ে বহুদূরের পথ না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন।

লোকটি আমার খুব প্রিয় ছিল। মঈন উদ্দীন খান বাদল তাঁর নাম। একটা চিঠি লিখেছিলাম। বড় করে লিখেছিলাম। সম্ভবত ২০১৪ সালে। সেই চিঠি বহুজনে লাইক-কমেন্ট করে আমাকে সন্তুষ্টির ঢেকুর তুলতে সাহায্য করেছিল।

গত ক'দিন আগে ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ রেল দূর্ঘটনা ঘটে গেল। এই দূর্ঘটনায় বহুজন আহত হলেও মাত্র ১৫ টি অপ্রয়োজনীয় প্রাণ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছিল। অপ্রয়োজনীয় কেন বললাম তা আপনার মনে প্রশ্নের উদ্রেগ করবে, সেটা আমি জানি। অপ্রয়োজনীয় প্রাণ না হলে এই ১৫ জনের সামান্য প্রাণকে মাত্র ১ লাখ টাকা দিয়ে মাটিচাপা দেয়ার মানে কী?

সে যাহোক। ব্রীজ চাইতে চাইতে একজন মানুষ আপাতত কবর দেশে চলে গেলেন। মানুষটির বিশ্বাস নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। মানুষটির কাজের প্রতি আমার সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। এই একজন মানুষকেই দেখলাম যথোপযুক্ত কথা দিয়ে অভিশপ্ত ব্রীজটির বদলে নতুন সেতু করে দেয়ার জন্য আহাজারী করতে।

কলেজ বলুন আর বিশ্ববিদ্যালয়, সব নামীদামী প্রতিষ্ঠান পশ্চিম পাড়েই। এই পূর্ব পাড়ে আছে কিছু আবাদী জমি। এসব জমিতে কয়েক বছর আগেও ধান চাষ হতো। এখন সেটাও মৃতপ্রায়। আমার বাড়ির দুই চার কিলোমিটার দূরে যেই দুইটা বিল রাস্তার দুই পাশে বিদ্যমান সেই দুই বিলের ৭০% এখন অনাবাদী। মানে চাষ হয়না।

এভাবে বহু অনাবাদী জমি পূর্ব পাড়ে পড়ে আছে। পশ্চিম পাড়ের মডার্ণ লোকেরা এই অনাবাদী জমির উপর লোলুপ দৃষ্টি দিয়েছেন বহু আগেই। সেই উদ্দেশ্যে ওনারা বড় বড় ফ্যাক্টরি নির্মাণ করে চলেছেন। ইতোমধ্যেই দুইটা নতুন ফ্যাক্টরি কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে।

এতসব যখন পূর্ব পাড়ে হচ্ছে তখন পূর্ব পাড়টিকে আর কিভাবে আমি আপনি অবহেলার ছলে ঠেলে ফেলে দিই?

ধরুন আপনার তিন সন্তানের একজনের চোখে সমস্যা। তাই বলে কী তাকে মেরে ফেলবেন? চোখ তুলে ফেলে দিবেন? নাকি চোখের ডাক্তার দেখাবেন? যাতে সে আর দুইজনের সাথে তাল মিলিয়ে সুন্দর এই বসুন্ধরাটি দেখতে পারে। তাকে কী বাঁচার অধিকারটুকু দিবেন না? অমানুষ হলেই তাকে বাঁচার অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন হয়তো।

প্রতিদিন কত মানুষ আপ-ডাউন করছে এই লাল সেতুটির উপর দিয়ে সে হিসেব এমপি সাহেব মাননীয় সংসদকে দিয়ে রেখেছেন বহু আগেই। তাই সেসব পরিসংখ্যানগত তথ্যের উপর নজর দিয়ে সময় নষ্ট করবোনা।

এক কাজ করলে ভাল হয়। এই ব্রীজের উপর দিয়ে তো ডেইলি চারটি ট্রেন আপডাউন করে। তো একটাকে নদীতে ফেলে দেয়ার ব্যবস্থা করুন। কিছু (২০০-৪০০ জন) লোক কমে যাক। আমি বা আপনি যদি বেঁচে ফিরি তবে কয়েকটা শোকের স্ট্যাটাস প্রসব করবো না হয় - এর চেয়ে বেশি মজা কোন দেশে পাবেন? বলেন না!

(Al Jabed Hossain Tanvir’র ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেয়া)

-সিভয়েস/এমএম

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়