Cvoice24.com


যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে সফলতার সিঁড়িতে মিজান

প্রকাশিত: ১৬:২৫, ২৮ জানুয়ারি ২০২০
যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে সফলতার সিঁড়িতে মিজান

শহিদুল মোস্তফা চৌধুরী মিজান। যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে যিনি তৈরি করেছেন তাঁর সামাজিক ও ব্যবসায়িক পরিচিতি। চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করে সেন্ট প্লাসিড স্কুল, চট্টগ্রাম নৌবাহিনী কলেজ, চিটাগং ইনডিপেন্ডন্ট ইউনিভার্সিটি ও অস্ট্রেলিয়া ইউনিভার্সিটি অব ক্যানবেররা থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করে যোগ দেন পিতার ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়াডিং (সিএন্ডএফ) ব্যবসায়। সিএন্ডএফ ব্যবসায়ের পাশাপশি নিজে প্রতিষ্ঠা করেন শিপিং ব্যবসায়। এর ফাঁকে ফাঁকে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন নিজ গ্রাম চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে শুরু করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে।

তরুণ উদ্যোক্তা শহিদুল মোস্তফা চৌধুরী মিজান তাঁর নানা কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার নানা তথ্য তুলে ধরেছেন সিভয়েসকে দেয়া একান্ত এক সাক্ষাৎকারে।

শহিদুল মোস্তফা চৌধুরী মিজান নিজেকে অত্যন্ত গর্বিত অনুভব করেন নিজের সকল কাজের সফলতায়। তিনি বলেন, ‘দেশীয় রাজস্বের সবচেয়ে বড় খাত ও দেড়শ বছরের পুরানো চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে পেরে আমার খুব ভালো লাগে। আবার পাশাপাশি আমাদের গ্রামে আমি একটি ক্রীড়া সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছি। সংগঠনটি আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে। ২০১৭ সালে এ সংগঠন থেকে দুইজন খেলোয়াড় ভারত ও মালেশিয়ায় খেলতে গিয়েছিলো।’

সংগঠনটির পরিচিতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমরা গ্রামে যাওয়া-আসা করতাম। ওখানে ক্রিকেট খেলতাম। অন্য খেলাধুলাও করতাম। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি আমার অদ্ভুত রকমের দূর্বলতা আছে। তাই ২০১১ সালে আমাদের গ্রামের নামে একটি ক্রিকেট একাডেমি প্রতিষ্ঠা করি। ওখানে ক্রিকেট খেলার সুযোগের পাশাপশি ক্রিকেট প্রশিক্ষণের সুযোগ রেখেছি। পরবর্তীতে পুরো বাঁশখালীর তরুণরা নির্দ্বিধায় যেন এ একাডেমিতে অংশগ্রহণ করতে পারে, তাই ২০১৪ সংগঠনটির নাম গুনাগরি ক্রিকেট একাডেমি থেকে বদলে বাঁশখালী ক্রিকেট একাডেমি রাখি।’

সংগঠন করার আগ্রহ কিভাবে ও কখন থেকে হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১৯৯২ সালে সেন্ট প্লাসিড স্কুলের তখনকার প্রাক্তন ছাত্ররা ‘ওল্ড প্লাসিডিয়ান এসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন শুরু করেন। এ সংগঠনের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাসামগ্রী সহ নানা ধরনের সহযোগিতা পৌঁছে দেয়া হয়। পাশাপাশি দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বৈকালিক পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংগঠনটির কার্যক্রম আমার ভালো লাগতো। তাই ১৯৯৮ সালে এসএসসি পাশ করার পর আমি ওই সংগঠনের আজীবন সদস্য হয়ে যোগ দিই। বর্তমানে আমাদের বৈকালিক স্কুলে ২৫০ জন শিক্ষার্থী আছে।’

বর্তমানে সম্পৃক্ত সংগঠনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি লায়ন ক্লাব অব কসমোপলিটন ও জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল চিটাগাং কসমোপলিটনের ক্লাবের সাথে বর্তমানে সম্পৃক্ত আছি। আমি অবশ্য ২০২০ সালের জন্য জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল চিটাগাং কসমোপলিটনের ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। আমি আমার সময়টাতে জুনিয়র চেম্বারের সুনাম রক্ষার জন্য নানা রকমের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিকল্পনা নিয়েছি।’

জুনিয়র চেম্বার নিয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ‘বিডি ক্লিন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে এক বছরের একটি চুক্তি করেছি। ‘ক্লিন চিটাগং, হিল বাংলাদেশ’ নামের এ চুক্তিতে নগর পরিচ্ছনতায় আমরা তাদের নিয়ে সকল রকমের লজিস্টিক সার্পোট দিব। এছাড়া তরুণদের নিয়ে আমরা বেশ কিছু ট্রেনিং ও সেশনভিত্তিক সেমিনারের আয়োজন করবো। সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতেও আমরা তরুণদের নিয়ে কিছু কার্যক্রম হাতে নিব। মহিলাদের জন্য সরকার যেভাবে এসএমই লোনের সুবিধা করেছে, তেমনি তরুণ উদ্যোক্তাদের সিঙ্গেল ডিজিটের লোন দেয়ার ব্যাপারে আমরা সরকারকে জানিয়েছি। এ নিয়ে আসন্ন বাজেটের আগে আমরা আবার সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ তুলে ধরবো। আর চট্টগ্রামের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আমরা চট্টগ্রামের সকল সেবাসংস্থা ও সুধিজনদের নিয়ে একটি গোল টেবিল বৈঠক করবো। পাশাপাশি তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এ বছরের শেষের দিকে আমরা তিন দিনব্যাপি ট্রেড ফেয়ারের আয়োজন করার পরিকল্পনা নিচ্ছি। যদিও এটি নিয়ে আমাদের সদস্যদের সাথে এখনো কথা বলিনি। তাদের সবার সম্মতি থাকলে আমরা এ মেলাটি আয়োজন করবো।’

ব্যবসায়ের তাঁর অবস্থা ও আগামী পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা আলহাজ্ব ছৈয়দুর মোস্তফা রাজু, উনি বর্তমানে সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের প্রথম সহ-সভাপতি হিসেবে তাঁর দায়িত্ব পালন করছেন। আমি পড়াশোনা শেষ করে উনার গড়া সিএন্ডএফ ও সল্ট ক্র্যাশিং ব্যবসায় কাজ করছি। পাশাপাশি আমি নিজে শিপিং ব্যবসা শুরু করেছি। ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট করেছি। এস এম চৌধুরী ফুড এন্ড ব্যাভারেজ লিমিটেড নামে নিরাপদ পানি বাজারজাতকরণের ব্যবসা করছি। এটি নিয়ে আমার আরো বড় পরিকল্পনা আছে। অন্যদিকে স্পেকট্রাম ইন্টারন্যাশনাল শিপিং, ইম্পোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের উন্নতির সাথে সম্পর্কিত হলো চট্টগ্রামের উন্নয়ন। চট্টগ্রামের বন্দর ও সড়ক ব্যবস্থা উন্নত হলে নগরবাসী সহ ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এ ব্যবসায়ের পাশাপাশি গ্রামে কিছু করার পরিকল্পনায় বাঁশখালীতে ডেইরি ফার্ম, পুকুরের মাছ চাষ, জমিতে নানা ধরনের সবজি ও ধান চাষে তদারকি করি। আমি চাই শহরের পাশাপাশি গ্রামও যেন সমানতালে এগিয়ে যেতে পারে। গ্রামকে খুব ভালোবাসি বলেই হয়তো গ্রামের জন্য কিছু করার কথা সবসময় ভাবি। তাছাড়া গ্রাম নিয়ে কাজ করতেও আমার খুব ভালো লাগে। বলা যায়, শহরের পাশাপাশি গ্রামের উন্নয়ন নিয়েও কাজ করতে চাই।’

সিভয়েস/এসএএস

শুভ্রজিৎ বড়ুয়া

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়