Cvoice24.com


জেমিসন হাসপাতালের সামনে ময়লার ভাগাড়, ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

প্রকাশিত: ১৬:০১, ২ জুলাই ২০২০
জেমিসন হাসপাতালের সামনে ময়লার ভাগাড়, ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

ছবিঃ সিভয়েস

হাসপাতাল জুড়ে ময়লা-আবর্জনা। যত্রতত্র ময়লায় ভাগাড়। জনসচেতনতার অভাব আর দায়িত্ববানদের অবহেলা ও কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনায় গোটা হাসপাতাল যেন ময়লা-আবর্জনার বৃহৎ ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের যাতায়াত, দেওয়ালের গা-ঘেঁষেই যেন বসবাস ময়লা-আবর্জনার। হাসপাতালের সম্মুখে ডাস্টবিনে খোলামেলা বর্জ্য, কুকুরের মুখে মাতৃগর্বের উচ্ছিষ্ঠ্য, এসবে বিপাকে হাসপাতালের রোগী থেকে শুরু করে পথচারী ও এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর আন্দরকিল্লার কাটাপাহাড় লেইনের জেমিসন মাতৃসদন হাসপাতালের আশপাশের এমন চিত্র। এ রাস্তা দিয়ে রোগী থেকে শুরু করে দৈনিক প্রায় ১০ হাজার লোকের যাতায়াত হয়। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগী, পথচারী ও এলাকাবাসী।

এ হাসপাতালের সামনে ডাস্টবিন থাকায় হাসপাতালের বর্জ্য এই ডাস্টবিনেই ফেলা হচ্ছে। যেহেতু এটি মাতৃসদন হাসপাতাল তাই এই হাসপাতালের বেশির ভাগ বর্জ্যই মাতৃগর্বের উচ্ছিষ্ঠ্য। যা মাটিতে পুঁতে ফেলার রীতি থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। সন্তান জন্মের পরে মাতৃগর্ভের এসকল উচ্ছিষ্ঠ্য খোলা অবস্থায় এ ডাস্টবিনে ফেলা হয়। ডাস্টবিন ব্যবস্থাপনায় অসচেতনতার ফলে এসকল উচ্ছিষ্ঠ্য কুকুর মুখে নিয়ে পুরো এলাকা ঘুরে বেড়ায়। অপারেশনে ব্যবহৃত মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোভস, ব্যান্ডেজ, সূই, সিরিঞ্জ, ইঞ্জেকসনের কাঁচের শিশিসহ পরিবেশ বিনষ্টকারী এসকল পদার্থ ডাস্টবিনে ফেলা হচ্ছে। সিভয়েসের এ প্রতিবেদক ওই হাসপাতালে গেলে, এ হাসপাতালের জনসচেতনতার অভাব আর দায়িত্ববানদের অবহেলা ও কর্তৃপক্ষের তৎপরতা চোখে পড়ে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁক, কুকুর সহ যে সকল প্রাণী ডাস্টবিনের খাবারের উপর নির্ভরশীল। সে সকল প্রাণী জগতের ও ব্যাপক ক্ষতি সাধনের সম্ভাবনা রয়েছে। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পথচারী রোজিনা বলেন, ‘আমি তিন সন্তানের জননী এসব দৃশ্য দেখলে আমার খুবই লজ্জা হয়। অনেক সময় কুকুর এসব নিয়ে মারামারি করে, যার ফলে অফিসগামী মানুষের পেন্টে লাগে। ওই অবস্থায় অফিসে যাওয়া তো সম্ভব হয় না। আবার বাসায় গিয়ে কাপড় পরিবর্তন করে আসতে হয়।’

পথচারী আজম উদ্দিন বলেন, ‘ছেলেকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় এসব দৃশ্য দেখে আমার ছেলে বলে বাবা কুকুর চিকেন খাচ্ছে, কেউ তো কুকুরকে চিকেন কিনে দেয় না, মনে হয় চুরি করেছে। ছেলের এসব কথার কোন উত্তর আমার কাছে থাকে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আপনাদের মাধ্যমে অনুরোধ করছি যেন এসকল বর্জ্য খোলা অবস্থায় এই ডাস্টবিনে না ফেলে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাসপাতালের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, ‘হাসপাতালের নিজস্ব কোন ডাস্টবিন না থাকায় বাহিরের ডাস্টবিনে আবর্জনা ফেলা হয়। সিটি কর্পোরেশন দু’বেলা এসে এ ময়লা নিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, তবে এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর কোন অভিযোগ নেই।

২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী’র কাছে এ ব্য‍াপারে জানতে চাইলে তিনি সিভয়েসকে বলেন, ‘জেমিসন রেড ক্রিসেন্টে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে সিটি কর্পোরেশনের ময়লা অপসারণ চুক্তি আছে। তাদেরকে আমার সেক্রেটারি গিয়ে অনেকবার সতর্ক করেছেন। এসবের পরিবর্তে তাদেরকে পলিথিন ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলাম।’

এ ডাস্টবিন খুব দ্রুত অপসারণ করে ওই জায়গায় ফুলের বাগান বানানো হবে বলেও তিনি জানান।

-সিভয়েস/আরএস/এমএম

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়