Cvoice24.com


পার্বত্য হোমিওপ্যাথি মেডিকেলের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের ফুলজুড়ি

প্রকাশিত: ০৮:৩৮, ৪ জুলাই ২০২০
পার্বত্য হোমিওপ্যাথি মেডিকেলের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের ফুলজুড়ি

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. এ কে এম তোফায়েল আহম্মদ। ছবি: সিভয়েস

খাগড়াছড়ির এইচ এম পার্বত্য হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. এ কে এম তোফায়েল আহম্মদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সার্সিং কমিটির তদন্তে এ সকল অনিয়মের চিত্র উঠে আসে। এরমধ্যে রয়েছে, কলেজের আয়ের টাকা আত্মসাৎ, সহকর্মীদের বেতন না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, নিয়মবর্হিভূতভাবে অর্থ ব্যয়, ভুয়া কর্মকর্তা কর্মচারী দেখিয়ে তাদের নামে বেতন উত্তোলন।

অভিযোগ রয়েছে, সাসিং কমিটিকে কোন প্রকার সহযোগিতা করছে না ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ্য। কলেজের আয়-ব্যয়ের কোনো হিসেবই দিতে পারছেন না তিনি। কলেজের আয় এবং ব্যাংক হিসেবে ব্যাপক ফারাক পাওয়া গেছে। কলেজের আয়ের সব টাকা ব্যাংকে জমা হয়নি।  

দুই বছর বেতন না পাওয়া এবং অধ্যক্ষের হুমকি প্রদান মর্মে ডা.রীতা রানী ভৌমিক নামে কলেজের এক সিনিয়র মেডিকেল অফিসার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগে বলেন, ২০১৭ সাল থেকে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী আমার বেতন পাওয়ায় কথা থাকলেও অধ্যক্ষ আমাকে তা দেয়নি। ২০০৯ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন দিয়ে বাকি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। আমার বেতনের অর্থ আত্মসাৎ এবং ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন না দেওয়ায় ২০১৯ সালে ডিসেম্বর এর পর থেকে বেতন উত্তোলন বন্ধ রেখেছি আমি। দুই বছরে তিনি আমার বেতনের প্রায় ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা আত্মাসাৎ করেছে। এছাড়া ছয়মাসে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও তা তিনি দেননি। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলায় কলেজ অধ্যক্ষ আমাকে ধর্ষণের হুমকিও দিয়েছেন।

সার্সিং কমিটি সূত্রে জানা যায়, এইচ এম পার্বত্য হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এর ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ব্যালেন্স দেখানো হয় ৪৩ লাখ ২৮ হাজার ২৩ টাকা অথচ কলেজের ব্যাংক হিসেবে জমা দেখানো হয়েছে ১৭ লাখ ৫২ হাজার ৮শ ৬ টাকা। ঐ সেশনের বাকী ২৫ লাখ ৭৫ হাজার  ২শ ১৭ টাকার কোন হিসেব পাওয়া যায়নি। এছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে কলেজের আয় ছিল ৫৯ লাখ ৯৭ হাজার ৯১ টাকা এর মধ্যে ব্যাংকে জমা পড়েছে ২৯ লাখ ৩৯ হাজার ২শ৫৪ টাকা। অর্থ্যাৎ এই সেশনে ৩০ লাখ ৫৭ হাজার ৮শ ৩৭ টাকার হদিস পাওয়া যায়নি। একই অবস্থা পরবর্তী অর্থবছরেও। ২০১৮ -১৯ অর্থ বছরেও ৪৭ লাখ টাকা কলেজের ব্যালেন্সে দেখানো হলেও ব্যাংকে জমা হয়েছে মাত্র ১৬ লাখ টাকা বাদবাকী ৩০ লাখ টাকার কোন হিসেব পাওয়া য়ায়নি।

হোমিওপ্যাথি কলেজের  প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এডভোকেট আকতার মামুন চৌধুরী জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোাফায়েল একটি কলেজকে কুক্ষিগত করেছে। তিনি কলেজের কোটি টাকার উপরে আত্মসাৎ করেছেন। কলেজের উন্নয়নের জন্য  হোমিও প্যাথি বোর্ড থেকে প্রদত্ত ৫ লাখ টাকা, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন থেকে প্রদত্ত ৫ লাখ টাকা এবং জেলা প্রশাসকের তহবিল থেকে প্রাপ্ত ১ লাখ টাকার যথাযথ ব্যবহার করেনি তিনি। এছাড়া বিভিন্ন নিয়োগের নামে অন্তত ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হলেও পরিপূর্ণ অধ্যক্ষের সুযোগসুবিধা নিচ্ছে। পরিচালনার কমিটির অনুমতি ছাড়া বেআইনীভাবে লাখলাখ টাকা ব্যয় করেছেন। কলেজের টাকা নয়ছয় করে অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। কমিটির অনুমোন ছাড়া নিজের স্ত্রীকে কলেজের নিয়োগ দিয়ে বেতন উত্তোলনও করিয়েছেন।  

কলেজের বিভিন্নখাত থেকে আয় হওয়া লাখলাখ টাকা কেন ব্যাংকে জমা রাখেননি সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. এ কে এম তোফায়েল আহম্মদ। তবে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন তিনি।

তিনি বলেন,সামনে ম্যানিািজং কমিটি গঠন হবে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হওয়ায় জন্য আমারা বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে।

কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, হোমিপ্যাথি কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে রির্পোটের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

-সিভয়েস/এসসি

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়