Cvoice24.com


চমেকে চিকিৎসা না পেয়ে ২ জনের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশিত: ১৩:৪২, ৫ জুলাই ২০২০
চমেকে চিকিৎসা না পেয়ে ২ জনের মৃত্যুর অভিযোগ

নগরীর সাধারণ চিকিৎসায় সর্ববৃহৎ সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ। রোববার (৫ জুলাই) দুইজনের মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের স্বজনরা এমন অভিযোগ করেন। 

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠে আসা এ অভিযোগে শঙ্কিত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে চমেক হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের সংস্পর্শে চিকিৎসকরা যাননি বলে জানিয়েছেন মৃতের স্বজনরা।

মৃত রেশমীর ভাই রবিউল হোসেন বলেন, 'আমার বোনের ডায়েরিয়া হয়েছিলো। তাই তাকে আজ সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যালে নিয়ে আসি। তাকে প্রথমে ১৩ নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। সেখানে নেয়ার সাথে সাথে তারা আমাদের করোনা ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়। 
আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি, আমার বোনের করোনার কোনো লক্ষণ নেই। কিন্তু তারা আমাদের কথা না শুনে করোনা ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দিয়েছে। সেখানে একজন ডাক্তারও আমার বোনকে দেখতে আসেনি। হাসপাতালে আনার পরেও বিনা চিকিৎসায় আমার বোন মারা গেছে।'

অন্যদিকে চমেক হাসপাতালে মানসিক ওয়ার্ডে চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ করেছেন মৃত শামীমা আক্তারের জামাতা মো. আরিফ। তিনি বলেন, 'মানসিক সমস্যা থাকার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শামীমা আক্তারকে। গত চার-পাঁচ দিন ধরে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে রোগীকে বেঁধে রাখা হয়। গত তিনদিন ধরে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। ডাক্তাররা তাদের অফিসে বসে থাকে। তাদের হাতে পায়ে ধরেও রোগীর কাছে নিয়ে যেতে পারিনি। তারা আমাদের সঙ্গেও কথা বলতে চান না। শেষে রোগী মারা যাওয়ার পর আমরা প্রতিবাদ করলে, আমাদের আনসার বাহিনী দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। তারা আমাদেরকে জোর করে মরদেহ দ্রুত নিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করেছে।'

তিনি আরো বলেন, 'রোগীর সংকটাপন্ন অবস্থায় ডাক্তার যদি রোগীদের একবারও না দেখেন, তাহলে আমরা কীসের ভরসায় হাসপাতালে আসি! একবারের জন্যও ডাক্তার না এসে নার্সদের দিয়ে রোগীকে একের পর এক ইনজেকশন ও ওষুধ দিয়েছে। রোগী মারা যাওয়ার পর আমরা ডাক্তারের সাথে কথা বলতে চেয়েছি। হাসপাতালে অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনতে চাননি। আনসার বাহিনী দিয়ে আমাদের বের করে দিয়েছে।'

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর ও উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলামকে একাধিকবার কল করার পরেও তারা কল ধরেননি। 

ফলে এ দুইটি মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া বা বক্তব্য জানা যায়নি।

এদিকে করোনা সংকটের কারণে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা না পাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, 'মৃতের স্বজনদের বক্তব্য যদি সঠিক হয়, তাহলে তা অবশ্যই দুঃখজনক। চিকিৎসকরা যদি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে তারা তাদের কর্তৃপক্ষকে তা জানাবে। এভাবে চিকিৎসায় অবহেলা করা অবশ্যই চিকিৎসার প্রাথমিক নৈতিকতার বিরুদ্ধে।'

-সিভয়েস/এসবি/এসএইচ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়