Cvoice24.com


বে-টার্মিনালের শর্টলিস্টে সিঙ্গাপুর ও সৌদি

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৮ জুলাই ২০২০
বে-টার্মিনালের শর্টলিস্টে সিঙ্গাপুর ও সৌদি

চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত বে-টার্মিনাল প্রকল্প

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করা চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৮ দেশের ৯টি কোম্পানি থেকে শর্ট লিস্টে (সংক্ষিপ্ত তালিকা) ঠাঁই নিয়েছে সিঙ্গাপুর ও সৌদি। 

চবকের প্রস্তাবিত এ প্রকল্প বাস্তবায়নে শর্ট লিস্টে আসা প্রতিষ্ঠান দুটির নাম- দ্য পোর্ট অব সিঙ্গাপুর অথরিটি (পিএসএ) ও সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল (আরএসজিটি)। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ শর্টলিস্ট করা হয়েছে বলে চবক বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, পতেঙ্গা মোহনার অদূরবর্তী হালিশহর উপকূলে সমুদ্রে জেগে ওঠা চরে বে-টার্মিনালের অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে। তীর থেকে ৮০০ মিটার দূরে ওই চরে সৃষ্ট নতুন একটি চ্যানেল ড্রেজিং এবং সামুদ্রিক ঢেউ কিংবা ঝড়-জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধে ওয়াটার ব্রেকিং (জল নিয়ন্ত্রক) বাঁধ নির্মাণ করে নতুন এই বন্দর তথা বে-টার্মিনাল নির্মাণ করা যাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে চট্টগ্রাম বন্দরে যোগ হবে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৬০০ মিটার প্রস্থের একটি বে-টার্মিনাল। 

এতে ১০ থেকে ১২ মিটার ড্রাফটের মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) ভেড়ানো সম্ভব হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় জিটুজির মাধ্যমে বে-টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালিত হবে। প্রকল্পটি ২০২৫ সাল নাগাদ বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে কেবল জোয়ারের সময় ৯ মিটার ড্রাফট বা গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো যায়। এসব ড্রাফটের জাহাজে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮০০ টিইইউস (টুয়েন্টি ফিট ইক্যুয়াল ইউনিটস) কন্টেইনার বোঝাই করা যায়। পক্ষান্তরে বে-টার্মিনালে প্রতি জাহাজে ৫ হাজার টিইইউস কন্টেইনার বোঝাই করা যাবে। যা চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম অনেক গতিশীল ও কন্টেইনার জটমুক্ত করে বন্দরে জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় অনেক কমিয়ে দেবে।

চবকের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র প্রকৌশলী রাফিউল আলম সিভয়েসকে জানান, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেকগুলো টেকনিক্যাল দিক রয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগের অঙ্ক, রাজস্বের অংশীদারত্ব, নির্মাণকাজ পরিচালনার মেয়াদকাল, কাজের ক্ষেত্র ও পরিমাপসহ বহু খুঁটিনাটি দিক আছে। এছাড়াও কনসালটেন্ট (পরামর্শক) প্রয়োজন। ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

শর্টলিস্টেড দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে কোন প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে নিয়োগ দেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৮ দেশের ৯টি কোম্পানি বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে তাদের অভিজ্ঞতা, সক্ষমতার নানা শর্ত পূরণ করে আগ্রহপত্র দাখিল করেছিল। 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল ও সৌদি আরবের আরএসজিটিকে শর্ট লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তবে তাদের সঙ্গে নির্মাণ চুক্তি বা কার্যাদেশ দেওয়ার বিষয়টি আমাদের নানা শর্ত ও উভয়পক্ষের চূড়ান্ত সমঝোতার ওপর নির্ভরশীল। সমীক্ষা প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর শর্ট লিস্টেড প্রতিষ্ঠান দুটোর সঙ্গে সমঝোতা বৈঠক হবে। এরপর বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজে হাত দেওয়া যাবে।'

অন্যদিকে সমুদ্র উপকূলে চট্টগ্রাম-ফৌজদারহাট মেরিন ড্রাইভের পাশে নির্মাণ হচ্ছে বে-টার্মিনাল। এতে আমদানি-রপ্তানি পণ্য নিয়ে ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যানগুলো শহরের যানজট এড়িয়ে সরাসরি ঢাকা-চট্টগ্রামে চলাচল করতে পারবে। ফলে ব্যবসায়ীরা সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে লাভবান হতে পারবেন বলে বন্দরের স্টেকহোল্ডাররা এ বে-টার্মিনাল নিয়ে ভীষণ আগ্রহী। 

নতুন এই বন্দরে পশ্চাৎসুবিধা সম্বলিত ১ হাজার ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ১টি, ১ হাজার ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে ১টি ও ৮৩০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ২টি আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত টার্মিনালসহ ১৩টি সাধারণ জেটি থাকবে।


-সিভয়েস/এসবি/এসএইচ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়