Cvoice24.com


'মাদক নির্মূলে বাধা কিছু জনপ্রতিনিধি'

প্রকাশিত: ১৪:৪০, ২৬ জুলাই ২০২০
'মাদক নির্মূলে বাধা কিছু জনপ্রতিনিধি'

র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের কারণে ইয়াবা পাচার বন্ধ হচ্ছে না। শরণার্থী ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে ইয়াবা সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে। মাদকের বিস্তৃতির পেছনে রোহিঙ্গাদের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও মাদক নির্মূলে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদ। তাদের কারণেও মাদক নির্মূল করা যাচ্ছে না।

রবিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেন, ইয়াবা ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত ছিল। তবে দুঃখের বিষয়, ইয়াবা ব্যবসা কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ কমেনি। আগামি ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে মাদকমুক্ত করতে জেলা পুলিশের ঘোষণা প্রশংসার দাবি রাখে। 

মাদক ব্যবসা বন্ধে গণমাধ্যম কর্মীদের পরামর্শ, সঠিক তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে উইং কমান্ডার মোহাম্মদ আজিম আহমেদ বলেন, ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। শহর থেকে গ্রাম যেখানেই ইয়াবা বা মাদক ব্যবসায়ি সেখানেই যাবে র‌্যাব। তবে প্রয়োজন সঠিত তথ্যের।দেশের স্বার্থে, ভবিষ্যত প্রজম্মকে গড়ে তুলতে মাদক নির্মূলে গণমাধ্যমসহ সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ।

তিনি আরো বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের 'শূন্য সহিঞ্চুতা' নীতির আলোকে গত ১৬ মাস ধরে মাদকের বিরুদ্ধে র‍্যাব-১৫ এর অভিযান অব্যাহত ছিল আগামিতেও অব্যাহত থাকবে। 

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ইয়াবা ব্যবসা যে পরিমান কমার কথা, সে পরিমান আদৌ কমেনি। পাইকারী এবং খুচরা পর্যায়ে ইয়াবা ব্যবসার বিস্তৃতি ঘটেছে। নতুন প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

আগামী প্রজন্মের স্বার্থে সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করার আহ্বান জানান র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার।

এ সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে র‌্যাব কর্মকর্তাদের জানানো হয়, ইদানিং সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার কমে আসলেও নতুন রোহিঙ্গাদের মায়ানমারের সমস্ত পথঘাট জানা থাকায় তারাই এখন বেশি মাদক পাচার করছে। 

গণমাধ্যমকর্মীরা রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার বন্ধ করা, মিয়ানমারের সিম ব্যবহার বন্ধ করা, মাদকের সাথে পৃষ্টপোষকতাকারী জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের তালিকা প্রকাশসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন। 

গণমাধ্যম কর্মীগণ মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা কারখানাগুলো বন্ধে মিয়ানমারকে আর্ন্তজাতিকভাবে চাপ দিতে কুটনৈতিক তৎপরতা চালানোর এবং তৃণমূল পর্যায়ে মাদকবিরোধী অভিযান আরো জোরদার করার দাবি জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব-১৫ এর মেজর মেহেদী হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার বিধান চন্দ কর্মকারসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা। 

পরে অধিনায়ক উইং কমান্ডার মোহাম্মদ আজিম আহমেদ গণমাধ্যমকর্মীদের র‌্যাব-১৫ এর পক্ষে শুভেচ্ছা সামগ্রী প্রদান করেন।

র‌্যাব-১৫ এর অর্জন

র‌্যাব-১৫ প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫৩২ জনকে আটক করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৫১ লাখ ৬২৮০ পিস ইয়াবা। বিভিন্ন সময় বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে ৩০ জন। অস্ত্রসহ আটক হয়েছে ৭৭ জন। 

র‌্যাবের ১৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১১ জনকে সাজা দেয়া হয়েছে। এসব অভিযানে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৩০ লাখ ৩ হাজার টাকা।

ইয়াবা উদ্ধারের পাশাপাশি গাঁজা ২১.৭ কেজি, ফেন্সিডিল ১৭৭ বোতল, চোলাই মদ ৭৮৭৩ লিটার, বিদেশী মদ ৯৯ বোতল, বিয়ার ৩১৮ ক্যান, বিদেশী পিস্তল ৮টি, ওয়ান শুটারগান ৪৮টি, ডিবিবিএল ৭টি, থ্রি-কোয়ার্টার গান ২টি, এলজি ১৪টি এবং ১২ বোর রাইফেল ১ টি উদ্ধার করা হয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়