Cvoice24.com


‘ইউএন ইয়ং চ্যাম্পিয়ান অব দ্য আর্থ’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশের রাযিন

প্রকাশিত: ১৫:১৬, ২৮ জুলাই ২০২০
‘ইউএন ইয়ং চ্যাম্পিয়ান অব দ্য আর্থ’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশের রাযিন

‘ইউএন ইয়ং চ্যাম্পিয়ান অব দ্য আর্থ’ প্রতিযোগিতার অব দ্য আর্থ প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত পর্বে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশের জাহিন রোহান রাযিন। চূড়ান্ত পর্বের জন্য মনোনীত ৩৫ জনের মধ্যে ২২ বছর বয়সী এ তরুণ প্রযুক্তিবিদ ও গণিতবিদই একমাত্র বাংলাদেশি। “কোয়ান্টাম পলিটেকমিক্স বায়োটেকনোলজি” প্রজেক্ট আইডিয়ার স্বীকৃতি হিসেবে এশিয়া ও প্যাসিফিক আঞ্চল থেকে চূড়ান্ত পর্বে মনোনয়ন পান তিনি।

তার প্রতিষ্ঠিত “কোয়ান্টাম পলিকেমিক্স” প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে নন-টক্সিক, অর্গানিক পলিহাইড্রক্সিয়ালকোনোট (পিএইচএ) ভিত্তিক বায়োপলিমার উত্পাদন করা সম্ভব হয়েছে যা পুরোপুরি পরিবর্তণযোগ্য ও পরিবেশে মিলিয়ে যায়। প্রকল্পটি বর্তমানে পাট কারখানার ও মিলগুলো থেকে ফেলে দেওয়া জুট ডাস্ট দিয়ে বায়োরিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে ন্যানো-ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে সিনথেটিক বায়োপ্লাস্টিক তৈরি করছে। এর মাধ্যমে তৈরি পলিমার পণ্যগুলো মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তরল পদার্থে এবং এক মাসের মধ্যে মাটিতে মিশে যায়। তার তৈরি এই পন্য প্লাস্টিক পলিব্যাগ, বায়ু-বিন ও প্যাকেজিংয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। 

জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৯ ও ১৪ অভীষ্টের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এ প্রযুক্তিটি, প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার লক্ষ্যের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশের বায়ো-ভিত্তিক অর্থনৈতিকৈ যুগের প্রচলনের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে। তাছাড়াও এ প্রকল্পের মাধ্যমে অসংখ্য কর্মহীন নারী-পুরুষের কাজের সুযোগ তৈরি করে জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করবে। যা দেশের বেকারত্ত দূরীভূত করনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়াও, ইতিমধ্যে এই উদ্যোগের মাধ্যমে শতাধিক পাটচাষীর অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে।

মাত্র ২২ বছরের এই তরুন উদ্যগতার আরও কয়েকটি তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর উদ্যোগ আছে যা পানি নিরাপত্তা ও উন্নয়ন, ভাষা শিক্ষা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছে। তার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠত প্রতিষ্ঠান সমূহ হল “হাইড্রোকো প্লাস” (পানি নিরাপত্তা মূলক এ আই প্রযুক্তি), “লিংউইং বাংলাদেশ এডটেক” (Lingwing.com) (অনলাইন ভাষা শিক্ষা অ্যাপ্লিকেশন)। এছাড়াও রোবটিক্স এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এ আই) বিষয়ক আরও বেশ কিছু প্রজেক্ট এর সাথে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে।

গভীর প্রযুক্তি অনুরাগী গণিতবিদ রাযিনের উদ্ভাবিত এবং গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের “ফিউচার ওয়ার্ল্ড চেঞ্জার” হিসাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হাইড্রো-ইনফরম্যাটিকস প্রযুক্তি নির্ভর প্রজেক্ট “হাইড্রোকো প্লাস” বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার ও ওয়াসা, এদেশের নাগরিকদের নিরপদ পানির সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পরিক্ষা মুলক ভাবে ব্যবহার করছে যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এ আই) ব্যবহার করে সয়ংক্রিয় ভাবে পানির গুণমান পরিক্ষা করে তার নিশ্চিত ফলাফল দিতে সক্ষম। পাশাপাশি এই প্রযুক্তি পানি সংযোগে কোন ধরনের লিকেজ এবং তারতম্য ধরতে পারে নিজের থেকেই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তার করা বাস্তবধর্মী এই গবেষণা তাকে এনে দিয়েছে টেকক্রাঞ্চ, সিইএস, ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড এবং ন্যাটোর মত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তার অসামান্য কাজের জন্য তিনি ওয়াটসন ইনস্টিটিউট থেকে সম্মাননা বৃত্তিতে ভূষিত হয়েছেন। ওয়াটসন ইনস্টিটিউট একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যা বিশ্বকে পরিবর্তন করে এমন উদ্ভাবনী উদ্যোগক্তাদের নির্বাচিত করে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। 

“ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ” ও “রেজ্যুলিউশন প্রজেক্ট” এর সহযোগী, রাযিনের অন্যান্য উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে লিংউইং (Lingwing.com), অনলাইন ভাষা শিক্ষার অ্যাপ্লিকেশন যা সয়ংস্ক্রিয় পদ্ধতিতে বাংলা থেকে ইংরেজি শেখাতে পারে। এই প্রযুক্তিটি এতটাই বিচখ্যন যে এর ব্যবহারকারী একইসাথে ইংরেজি বলা ও লিখাতে পারদর্শী হয়ে ওঠে, যা সম্পূর্ণ অটোমেটেড পদ্ধতিতে কাজ করে।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর পরিবেশ সচেতন মেধাবী তরুণ উদ্যোগতা, যারা তাদের আইডিয়া দিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবে তাদেরকে সারাবিশ্ব থেকে খুঁজে বের করে মোট ৩৫ জনকে পুরস্কিত করে ইউএন ইয়ং চ্যাম্পিয়ান অফ দ্য আর্থ। 

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়