Cvoice24.com


চট্টগ্রামে লবণ ছাড়াই প্রক্রিয়াজাত হচ্ছে চামড়া!

প্রকাশিত: ১১:১২, ৫ আগস্ট ২০২০
চট্টগ্রামে লবণ ছাড়াই প্রক্রিয়াজাত হচ্ছে চামড়া!

লবণ ছাড়াই পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত শুরু করেছে চট্টগ্রামের রিফ ট্যানারি। চট্টগ্রামে সাড়ে তিন লাখের মতো কোরবানি পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হলেও প্রায় ২০ হাজারের অধিক চামড়া ফেলে দেয়ার কথা উঠে এসেছে। লাখ টাকার গরু কোরবানি দেয়ার পর সে গরুর চামড়ার দাম তিন-চারশ টাকা হওয়ায় নগরীর প্রায় আটটি স্থানে চামড়া ফেলে দেয়ার ঘটনা ঘটে। সঠিক মূল্য না পেয়ে কোরবানির পশুর চামড়া ফেলে দেয়ার ঘটনার মধ্যে বিষয়টি ইতিবাচকভাবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

তাদের এ প্রক্রিয়া সফল হলে লবণ যুক্ত না করে চামড়া সংরক্ষণ করা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের বলেন, 'কোরবানি শেষ হওয়ার চতুর্থ দিনে আমাদের কাছে সাড়ে তিন লাখ চামড়া এসেছে। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় চামড়া সংরক্ষণের কাজ চলছে। কিছু জায়গায় চামড়া ফেলে দেয়ার মত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তবে এর কারণ হলো- বিক্রেতারা সঠিক দাম না পাওয়া। এছাড়া এবার চামড়ার দাম কম থাকায় অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে।'

কতজন আড়তদার এবার চামড়া ক্রয়ের সাথে জড়িত ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এ বছর সমিতিভুক্ত ১১২ জন ও এর বাইরে ১৫০ জন আড়তদার এবার চট্টগ্রাম অঞ্চলে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করছেন। সবার সংগৃহীত চামড়া আতুরার ডিপোতে আনা হয়নি। কেউ কেউ পাড়া-মহল্লায় চামড়াতে লবণ দিয়ে তা সংরক্ষণ করছেন। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আমরা কি পরিমাণ চামড়া 
সংগ্রহ করেছি তা বলা সম্ভব হবে। কিন্তু মৌসুমি চামড়া বিক্রেতাদের চাহিদা মতো চামড়া সংগ্রহ করা যায়নি।'

কেন সংগ্রহ করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'প্রথম দিকে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা বেশি দাম চাওয়ায় আমরা কিনতে পারিনি। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর নামমাত্র মূল্যে দিতে চাইলেও চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা আর কেনেননি।' চামড়া ব্যবসায় সিন্ডিকেট সংক্রান্ত জটিলতার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'চামড়া ব্যবসায় কোনো ধরণের সিন্ডিকেট নেই। আমাদের মূল সমস্যা হলো- চট্টগ্রামে ট্যানারি না থাকায় ঢাকা ট্যানারি মালিকদের মন মর্জির ওপর আমরা চামড়া সংগ্রহ করতে বাধ্য হই। এছাড়া আমরা এখনো ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে ৩২ কোটি টাকা পাই। এ অর্থ সংকটও একটি বড় রকমের সমস্যা।'

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান পরিছন্নতা কর্মকর্তা মো. শফিকুল মান্নানের কাছে কোরবানির পশুর চামড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা আগ্রাবাদ চৌমুহনী, পাহাড়তলী, দেওয়ানহাট, মুরাদপুর, অক্সিজেন মোড়ের রাস্তা ও জামেয়া আহম্মদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসাসহ আটটি জায়গা থেকে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছি। আমরা প্রায় ১৮ হাজারের মতো নষ্ট চামড়া ময়লার ডিপোতে ডাম্পিং করেছি। এছাড়া চার হাজারের মতো চামড়া ভোক্তা অধিকার সংস্থাকে দিয়েছি।'

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এ তথ্যের বাইরেও চামড়া ফেলে দেয়ার ঘটনা জানা যায়। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা দাম না পাওয়ায় রাস্তায় চামড়া ফেলে যায়। সেখান থেকে চট্টগ্রামের রিফ লেদার লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি চামড়া তুলে নিয়ে তা লবণ ছাড়া প্রক্রিয়াজাত করার কাজ শুরু করে। এ প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, 'আমরা রাস্তা থেকে প্রায় আড়াই হাজারের মতো চামড়া তুলে এনে লবন ছাড়া তা প্রক্রিয়াজাত করার কাজ শুরু করেছি। এটি যেহেতু পচনশীল পণ্য, তাই এ প্রিজার্ভেশন পদ্ধতির শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর সফলতা সম্পর্কে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা আশাবাদী, এ প্রক্রিয়া সফল হলে লবণযুক্ত করার ঝামেলা থাকবে না এবং চামড়ার গুণগত মান আরো ভালো হবে।'

-সিভয়েস/এসবি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়