Cvoice24.com


'ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না'

প্রকাশিত: ১১:২৩, ৫ আগস্ট ২০২০
'ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না'

ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন, সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।
টেকনাফে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর রাশেদ সিনহা'র মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার (৫ আগস্ট) কক্সবাজারে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা একথা বলেন। 

এসময় সেনাপ্রধান বলেন, 'সিনহা'র মৃত্যুর ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ মর্মাহত। তদন্ত কমিটির ওপর সেনাবাহিনী ও পুলিশের আস্থা আছে। এ ঘটনার দায় ব্যক্তির, কোন প্রতিষ্ঠানের নয়। সিনহার মৃত্যুকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে চায় সেনাবাহিনী।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি যৌথ তদন্ত দল গঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের মাকে ফোন করে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর কথার ওপর সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর আস্থা আছে।' এ ঘটনা নিয়ে যেন সেনাবাহিনী ও পুলিশের ভেতর অনাকাঙ্ক্ষিত চিড় ধরানোর মতো ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছেন সেনাপ্রধান।

আর পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বলেন, 'পুলিশ ও সেনাবাহনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দায়িত্ব পালন করে। এ ঘটনা নিয়ে অনেকে উস্কানিমূলক কথা বলার চেষ্টা করছেন। যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। কোন প্রকার উস্কানিতে দুই বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'মেজর (অব.) সিনহার মৃত্যুতে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় হবে না। কমিটি প্রভাবমুক্ত পরিবেশে তদন্ত করবে। কমিটি যে সুপারিশ দিবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

 আইজপি প্রশাসনের মাদক বিরোধী স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, এলাকায় কারা মাদক ব্যবসা করে কারা মাদক পাচারে জড়িত আপনার জানেন। কারণ আপনারা এ এলাকার মানুষ। আপনারা তাদের চিহ্নিত করে দিয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে পারেন।

দুই বাহিনীর প্রধান পরে কক্সবাজার সৈকতে অবস্থিত সেনাবাহিনীর রেস্টহাউস জলতরঙ্গতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হোন। 

এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি গোলাম মো. ফারুক, এডিশনাল ডিআইজি জাকির হোসেন, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনসহ সেনা বাহিনী, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার বেলা দেড়টার দিকে বিমানবন্দর হয়ে কক্সবাজার সৈকতে অবস্থিত সেনাবাহিনীর রেস্ট হাউস জলতরঙ্গে এসে পৌঁছেন যৌথ টিম। পরে বিকাল ৪টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফের শামলাপুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে, মেজর সিনহা খুনের ঘটনায় টেকনাফ থানা ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ৯জনকে আসামি করে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। 

কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে টেকনাফ থানাকে এজাহার হিসাবে নথিভূক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সাথে মামলাটি র‌্যাবকে তদন্ত করারও আদেশ দেয়া হয়েছে।

মামলায় আসামি করা হয়েছে টেকনাফ বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এসআই টুটুল, কনষ্টেবল মো: মোস্তফা। এরা সকলেই টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে ওইদিন রাতে কর্মরত ছিলেন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জন ও নিরাপত্তা বিভাগ। একইভাবে তদন্তের স্বার্থে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ২০ জন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে টেকনাফের ওসি প্রদীপ দাসকে প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী।

কক্সবাজার প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়