Cvoice24.com


ওসি প্রদীপ-লিয়াকত ৭ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ৬ আগস্ট ২০২০
ওসি প্রদীপ-লিয়াকত ৭ দিনের রিমান্ডে

মেজর (অব) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস, বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ লিয়াকত আলীসহ তিন আসামিকে ৭ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে র‍্যাব। আত্মসর্মপণকারী সাত আসামির মধ্যে অন্য ৪ জনকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। 

বৃহস্পতিবার (৬ আগষ্ট) সন্ধ্যায় র‌্যাবের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে টেকনাফের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আদালত নম্বর ৩) মুহাং হেলাল উদ্দিন এ আদেশ দেন। 

সিনহা ‌‘হত্যা’ মামলায় কারাগারে ওসি প্রদীপসহ ৯ পুলিশ

বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় আদালত প্রাঙ্গণে বাদি পক্ষের প্রধান আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফা সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

আরও পড়ুন: পুলিশি নিরাপত্তায় কক্সবাজার আদালতের পথে ওসি প্রদীপ

তিনি জানান, আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালতের বিচারক ৩ জনের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন। তারা হলেন, প্রদীপ কুমার দাশ, প্রধান আসামি লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত। 

বাকিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তারা হলেন-কনস্টেবল  সাফানুর করিম, (৫) কনস্টেবল কামাল হোসেন, (৬) কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও (৭) এএসআই লিটন মিয়া। 
 
এর আগে একই আদালতের বিচারক মুহাং হেলাল উদ্দিন ৭ আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। 

করোনাকালীন হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রথম দফায় ৪ জন ও দ্বিতীয় দফায় ৩ জন আসামিকে হাজত খানা থেকে কাঠগড়ায় আনা হয়। মামলার বাকী ২ জন আসামি সারেন্ডার করেননি। তবে আসামী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেছেন, মামলায় উল্লেখিত ৮নম্বর আসামি এসআই টুটুল এবং ৯ নম্বর আসামি কনস্টেবল মো. মোস্তফা নামে কোন পুলিশ সদস্য জেলা পুলিশে নেই।

আসামিদের পক্ষে আদালতে এডভোকেট মোহাম্মদ জাকারিয়া ও এডভোকেট রাখাল চন্দ্র মিত্র জামিন আবেদন শুনানি করেন।

পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম, এপিপি এডভোকেট সাঈদ হোসাইন, রাষ্ট্র পক্ষে কোর্ট ইন্সপেক্টর প্রদীপ কুমার দাশ এসময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে কড়া নিরাপত্তায় ওসি প্রদীপকে চট্টগ্রাম থেকে পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে কক্সবাজার আদালতে নেওয়া হয়। আর লিয়াকতসহ অন্য ৮ আসামিদের জেলা পুলিশ লাইন্স থেকে কক্সবাজার আদালতে আনা হয়। পরে বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে ৮ আসামিকে আর ৫ টার সময় প্রদীপকে সরাসরি আদালতের নেওয়া হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে তাদের সকলকে আদালতের এজলাসে তোলা হয়। 

৫ আগস্ট দুপুরে দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় টেকনাফের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটি ওইদিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টেকনাফ থানায় হত্যা মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। যার মামলা নং সিআর-৯৪/২০২০। এ মামলায় সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের সঙ্গী ও ৩১ জুলাই এর ঘটনায় টেকনাফ পুলিশের দায়ের করা মামলার আসামি সাহেদুল ইসলাম সিফাতসহ ১০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

এরআগে ‘হত্যার নির্দেশদাতা’ টেকনাফ থানার ওসি (প্রত্যাহার) প্রদীপ কুমার দাস গত ৪ আগস্ট থেকে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে নিরুদ্দেশ ছিলেন। অন্য ৮ আসামি পুলিশ লাইনেই নিরাপত্তা হেফাজতে ছিলেন। 

এই ঘটনায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত ৯ পুলিশ সদস্যসহ ২০ জনকে প্রত্যাহার করেছে কর্তৃপক্ষ। ৫ আগস্ট প্রত্যাহার করা হয় প্রদীপ কুমার দাসকে। 

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাত্রে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডে  মেজর সিনহা তাঁর কক্সবাজারমুখী প্রাইভেট কারটি নিয়ে টেকনাফের বাহারছরা শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের চেকপোস্টে পৌঁছালে গাড়িটি পুলিশ থামিয়ে দেয়। তখন তিনি উপর দিকে তার হাত তুলে তার প্রাইভেট কার থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ লিয়াকত আলী পরপর ৩ রাউন্ড গুলি করে হত্যা করে বলে সেনা সদর থেকে গণমাধ্যমে প্রেরিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।

ঘটনা তদন্তে গত ২ আগস্ট চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমানকে আহবায়ক করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্ত্বা বিভাগ। ৪ আগষ্ট থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়