Cvoice24.com


চকরিয়া হাইওয়ে পুলিশের 'আটক-বাণিজ্য' তদন্ত হচ্ছে

প্রকাশিত: ১৪:৪৫, ১৩ আগস্ট ২০২০
চকরিয়া হাইওয়ে পুলিশের 'আটক-বাণিজ্য' তদন্ত হচ্ছে

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে নানা অজুহাতে যানবাহন আটকিয়ে ‘আটক বাণ্যিজ্যে’র অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মহাসড়কে শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা এ ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তাদের ‘আটক বাণিজ্য’ ছিল অনেকটা ওপেনসিক্রেট। গাড়ি আটকিয়ে টাকা আদায় করা, না পেলে মামলা দিয়ে চালক-হেলপার কে হয়রানি ইত্যাদি অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এনিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেদনও প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।

অবশেষে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব অনিয়ম-অভিযোগ তদন্তে নেমেছে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বুধবার (১২ আগষ্ট) দুপুরে উপজেলার ডুলাহাজারা-মালুমঘাট এলাকায় বিভিন্ন যানবাহন চালক, মালিক ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন তদন্ত টিমের নেতৃত্বে থাকা হাইওয়ে পুলিশ চট্টগ্রাম সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা যাচাই করেন।

গ্রামের সড়ক থেকেও তিন চাকার যানবাহন আটক, গাড়ি ছেড়ে দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকা আদায়, দালাল পোষণ, রাতের অন্ধকারে গাড়ি ছাড়ানো, বিনা রশিদে টাকা আদায়, গাড়ি জব্দের কয়েকমাস পর ফাঁড়িতে ব্যাটারি রেখে দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে আসে। এসব অভিযোগ নোট করেন তদন্ত দল। 

এসময় তদন্ত দলের সাথে ছিলেন স্থানীয় সংবাদকর্মী মো. নিজাম উদ্দিন। তিনি জানান, মালুমঘাট পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এসব অনিয়ম নিয়ে নানা সময়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন করেছিল। তদন্ত দলের কাছে তিনিও তুলে ধরেন পুলিশের নানা অনিয়ম-অভিযোগের কথা।

এছাড়া বেশকয়েকজন ভুক্তভোগীও কথা বলার সুযোগ পায় তদন্ত দলের সাথে। তারা জানান, মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়ক থেকে বৈধ-অবৈধ গাড়ি আটক করে ৮-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে রাতের অন্ধকারে ছেড়ে দিতো। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মামলা দিয়ে হয়রানির শিকার করা হতো।

জানা গেছে, স্থানীয় কয়েকজন দালালের নিয়ন্ত্রণে চলছে মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি। তাদের মাধ্যমে মহাসড়ক থেকে বৈধ-অবৈধ গাড়ি আটক করা হয়। একেকটি গাড়ি থেকে ৮-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে রাতের আঁধারে ছেড়ে দেওয়া হয়। 
চকরিয়া উপজেলার মেধাকচ্ছপিয়ার ঢালা, ডুলাহাজারা স্টেশন, বনানী, সাফারি পার্ক গেইট, তার ২০০ মিটার উত্তরে ব্রিজের উপর, পুলিশ ফাঁড়ি গেইট, মালুমঘাট বাজারের উত্তরে রিংভং এলাকা এবং তারও উত্তরে মইক্ষা ঘোনা নামক পয়েন্টে বেশি হয়রানি করা হয়। ফাঁড়ির এসব অসাধু পুলিশ সদস্য-কর্মকর্তাদের কারণে রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি অনিরাপদ হয়ে উঠছে সড়কগুলো।
 
এ ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ চট্টগ্রাম সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে। অনেকের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সেবার পরিবর্তে মানুষের হয়রানি, ভোগান্তির অভিযোগ মেনে নেয়া যায় না। তাই বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে।  অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের পর জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত,  গত ১৬ জুন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে ‘আটক ও ঘুষ বাণিজ্য’ শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। যাতে ফাঁড়িতে আটক বানিজ্য, মোটা অর্থের বিনিময়ে রাতের আঁধারে গাড়ী ছাড়, স্থানীয় বিভিন্ন যানবাহন থেকে মাসোহারা, টোকেন বাণিজ্য, সক্রিয় দালাল সিন্ডিকেট সম্পর্কিত অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। 

কক্সবাজার প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়