Cvoice24.com


বিপজ্জনক ৪৩ লট পণ্য নিলামে অনাগ্রহ ব্যবসায়ীদের

প্রকাশিত: ১৩:৩১, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
বিপজ্জনক ৪৩ লট পণ্য নিলামে অনাগ্রহ ব্যবসায়ীদের

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা বিপজ্জনক পণ্যের তালিকা করা হয়েছে। তালিকার ৮৪ লটে আনুমানিক ১৫০ টন ওজনের রাসায়নিক পণ্যের ৪৩ লটের নিলাম আগামীকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। এতে প্রায় ৭০-৮০ টন পণ্য আছে। কিন্তু এসব পণ্য নিলামে ক্রয় করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে আসা পণ্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খালাস না নিলে কাস্টম কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আইনি জটিলতা না থাকলে কাস্টম এ সব পণ্য নিলামে তোলে। তবে আইনি জটিলতা, নিলামে বিক্রি না হওয়াসহ নানা কারণে খালাস না নেয়া পণ্য দীর্ঘদিন বন্দরের বিভিন্ন শেড ও ইয়ার্ডে পড়ে থাকে, যা বন্দরের স্বাভাবিক পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে বাধাগ্রস্ত করে। এ সব পণ্যের মধ্যে বিভিন্ন সময় আমদানি করা বেশ কিছু কেমিক্যাল, দাহ্য ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ রয়েছে। তবে এ ধরনের কতটি পণ্য রয়েছে বা এর সঠিক পরিমাণ কত তা এতদিন অজানা ছিল।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লেবাননের বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা ভেবে নড়েচড়ে বসে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিপজ্জনক পণ্য অনুসন্ধান এবং এগুলো সরাতে গত ৯ আগস্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান অসুস্থ থাকায় প্রতিবেদন জমা পড়েনি। তবে প্রতিবেদনে কাজ প্রায় শেষ বলে জানা যায়।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (নিলাম শাখা) ফরিদ আল মামুন বলেন, বন্দর শেডে পড়ে থাকা ৮৪ লট বিপজ্জনক পণ্য চিহ্নিত করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় এগুলোর প্রকৃত ওজন নির্ণয় করা কঠিন। পণ্যগুলোর ওজন আনুমানিক ১৫০ টন হতে পারে। কিছু কিছু কেমিক্যাল শনাক্ত করা যাচ্ছে না। আগামীকাল (সোমবার) ৪৩ লট পণ্য নিলামে উঠবে। এর ওজন প্রায় ৭০-৮০ টন।'

বাকি পণ্য কি করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'নিলামযোগ্য বাকি কেমিক্যালের জন্য পরবর্তীতে বড় ধরনের আরেকটি নিলাম ডাকা হবে। চিহ্নিত পণ্যের মধ্যে কিছু পণ্য রয়েছে যেগুলো দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। নিলাম অযোগ্য এমন দুই হাজার ৩২২ কেজি কেমিক্যাল অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ধ্বংস করে ফেলা হবে।'

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ১৪টি শেডের মধ্যে ‘পি’ শেডে বিপজ্জনক পণ্যগুলো রাখা হয়। এখানে ড্রাম, কার্টন ও বস্তাবোঝাই বিপজ্জনক পণ্য পড়ে রয়েছে। ২৮ বছর আগের পণ্যও রয়েছে এই শেডে। এর মধ্যে রয়েছে, হাইড্রোক্লোরাইড, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, বিপজ্জনক কঠিন পদার্থ, কস্টিক সোডা, সালফেট, ফার্মাসিউটিক্যালসের কাঁচামাল, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, রং তৈরির কাঁচামাল, টেক্সটাইল কেমিক্যাল, নাইট্রো গ্লাই সলিউশন, পারফিউমারি, ফিক্সিট সিলিকন, এস্ট্রোজেন, সারফেস একটিভ ক্লিনিং ও গ্লু। বেশির ভাগই দাহ্য ও বিস্ফোরকজাতীয় পদার্থ।

এ রাসায়নিক দ্রব্য ক্রয়ে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ জানতে চেয়ে কথা বলা হয় চট্টগ্রাম কাস্টমসে নিলামে অংশগ্রহণকারী প্রবীণ বিডার ও আরঅ্যান্ডএইচ সিন্ডিকেট ও তাজ ট্রেডিংয়ের কর্ণধার ইকবাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, 'এবারের নিলামে আমাদের কোন টেস্ট নেই। টেস্ট না থাকলে আমরা নিলামে অংশগ্রহণ করিনা। বিষয়টা হলো- আমরা নিলামে যা ক্রয় করি তা আমাদের বিক্রি করার সুযোগ থাকতে হবে। আগামীকাল (সোমবার) কাস্টমস যে নিলাম আয়োজন করছে, এই নিলামের পণ্যগুলো ক্রয় করে ব্যবসা করার কোনো সুযোগ আমাদের থাকবে না। তাই এই নিলামে আমরা যাবো না। আমাদের মতো আরও বেশ কিছু ব্যবসায়ী যাবে না। কিছু কিছু ব্যবসায়ী নিলামে অংশগ্রহণ করবে। তবে নিলামের সব পণ্য বিক্রি হবে না বলে মনে করি।'

প্রসঙ্গত, আগামীকাল দুপুর আড়াইটার দিকে আমাদের ঢাকা ও চট্টগ্রামে একযোগে নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম কাস্টমস, চট্টগ্রাম ডিসি অফিস ও শুল্ক আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেটের (ঢাকা দক্ষিণ) অফিসে একটি করে বক্স রাখা হয়েছে। সেখানে যে দরপত্রগুলো আগামীকাল (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার মধ্যে জমা হবে, তা নিয়েই দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে নিলাম অনুষ্ঠিত হবে।'

-সিভয়েস/এসবি/এসসি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়