Cvoice24.com


হঠাৎ জ্বরের প্রকোপ, আতঙ্কিত হওয়া চলবে না

প্রকাশিত: ০৮:৪৬, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০
হঠাৎ জ্বরের প্রকোপ, আতঙ্কিত হওয়া চলবে না

সালমা আক্তার রিজিয়া (২৭)। জ্বর সর্দি কাশি নিয়ে একবছর বয়সী সন্তানকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চমেক হাসপাতালের সামনে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি সিভয়েসকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তার ছেলের জ্বর। পাশাপাশি প্রচণ্ড কাশি। প্রথমে জ্বর সর্দি দেখা দিলে তার সন্তানকে বাড়ির পাশের পল্লী চিকিৎসককে দেখান। পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দুইদিন ওষুধ খাওয়ালেও কোন পরিবর্তন না হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে নিয়ে আসেন। তার বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজার এলাকায়। 

এরকম আরো কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে। তারা বলেন, গত ১০/১২ দিন ধরে কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ জ্বর সর্দি কাশি শুরু হয়। কোন উপসর্গ-লক্ষণ ছাড়াই জ্বর কাশি দেখা দিচ্ছে। হঠাৎ কাঁপুনি দিয়ে জ্বর শুরু হলেও তা কিছুক্ষণ পর শরীরে ঘাম দিয়ে চলে যায়। 

আবার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর শুরু হয় তার পরপরই শুরু হয় সর্দি কাশি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমত করোনা এখনো রয়ে গেছে। ঋতু পরিবর্তনের পাশাপাশি বিভিন্ন কারণে জ্বর সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে। এসব থেকে বাঁচতে প্রয়োজন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি করোনা টেস্টসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া। এবং পরিবারের কোন সদস্যের যদি প্রথমে জ্বর, কাশি দেখা দেয় তাহলে অন্য সদস্যের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা। কারণ এটি ছোঁয়াছে রোগের মতো। 

সরেজমিনে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়- জ্বর সর্দি কাশি নিয়ে প্রতিদিনই ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জ্বর সর্দি-কাশি নিয়ে ভুগতে থাকা  রোগীদের মধ্যে শিশু এবং তরুণের সংখ্যা বেশি। শিশু ছাড়াও ১৮ থেকে ৩২ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে এই রোগটি হচ্ছে। দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে জ্বর সর্দি দেখা দিলে তারা তেমন চিকিৎসা নিচ্ছেননা। শুধু ওষুধের দোকান (ফার্মেসি) থেকে ওষুধ খাচ্ছেন অথবা পল্লী চিকিৎসক থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

এদিকে চমেক সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিনে হাসপাতালে থেকে প্রায় দুইশ জন রোগী জ্বর সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালের আউটডোর থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগের বয়স ১৭ থেকে ২২। আবার ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে। জ্বর, সর্দি ভাইরাসজনিত রোগ হওয়াই পরিবারের একজনের হলে সেটি দ্রুত অন্য সদস্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। 

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আবু সৈয়দ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ হোসেন সিভয়েসকে বলেন, করোনাভাইরাস এখনো রয়ে গেছে। পাশাপাশি ঋতু পরিবর্তনের কারণে কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ ছাড়াই জ্বর, সর্দি, কাশিজনিত রোগ বাড়ছে। এটি এক ধরনের ভাইরাস। জ্বর সর্দি হঠাৎ দেখা দেয়। জ্বর দেখা দিলে এই জ্বর কাশি অনেক সময় একসঙ্গে হয়। বেশ কয়েকদিন শরীরের মধ্যে থাকে। এটি করোনার উপসর্গ হতে পারে। কারণ এখন বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ করোনা বিষয়ে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। আবার পরীক্ষাও করাচ্ছেন না।

জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির আহবায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, এখন তো করোনার সময়। পাশাপাশি আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে জ্বর-সর্দি দেখা দিচ্ছে। এটি এক ধরনের ফ্লু জাতীয় ভাইরাস। এই জ্বর হঠাৎ শুরু হয়। এখন তো অনেকেই তেমন সচেতন না। করোনার লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে টেস্ট করাচ্ছেন না। তাই জ্বর দেখা দিলে করোনা টেস্ট করার পর চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। 

তিনি আরো বলেন, শরীর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর হলে এটি সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিন থাকবে। কাশিও শুরু হতে পারে। এখানে তেমন ভয়ের কিছু নেই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে এগুলো থেকে দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়।

সিভয়েস/এসএইচ

মোহাম্মদ নাজিম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়