Cvoice24.com


প্রতারণার ফাঁদে নয় বছরে ৯ বিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকের

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রতারণার ফাঁদে নয় বছরে ৯ বিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকের

ছবি: সিভয়েস

কখনো পুলিশ অফিসার, কখনো আর্মি অফিসার, আবার কখনো নেভি অফিসার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। বিভিন্ন অফিসারদের ছবিতে নিজের মুখের অবয়ব মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে কাট পেস্ট করে প্রেমিকাদের কাছে পাঠাতেন। আর এতেই কুপোকাত হতেন প্রেমিকা এবং তাদের পরিবার। এমন সব প্রতারণার মাধ্যমে একটি নয় দুটি নয় করেছেন ৯টি বিয়ে। স্ত্রীদের পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন টাকা।

যার কথা বলছিলাম তিনি হলেন সোলায়মান। বয়স ২৯। বাড়ি বরগুনা। পেশায় একজন গার্মেন্টস শ্রমিক। ১৭ বছর বয়সে জীবিকার সন্ধানে বরগুনা থেকে আসেন চট্টগ্রামে। কাজ নেন আট হাজার টাকা বেতনে নগরীর একটি গার্মেন্টসে। পেশায় শ্রমিক হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর মোবাইল ফোনে অল্প বয়সি মেয়েদের সাথে কথা বলে তাদেরকে পটিয়ে প্রতারণার জালে ফেলে বিয়ে করার এক অভিনব শিল্পরপ্ত করেন শ্রমিক সোলায়মান। টার্গেট করেন গার্মেন্টসের নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মেয়েদেরকে। শুধু তাই নয় বিয়ে করার পরে স্ত্রীর ভাই-বোনদেরকে চাকরি দেয়ার নাম করে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অর্থ। স্ত্রীদের মাধ্যমে এনজিও থেকে লোন নেয়ার পর ওই টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন অন্যত্র। বেছে নিয়েছেন আরেকজনকে।

অষ্টম স্ত্রী রাহেলার কাছ থেকে তার ভাই ও বোনকে চাকরি দেয়ার নাম করে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ টাকা এবং তার নামে এনজিও থেকে ঋণ তুলে হাতিয়ে নিয়েছেন এক লাখ টাকা। নবম স্ত্রীর রহিমার কাছ থেকে যৌতুক নিয়েছেন দুই লাখ টাকা। এভাবে একটি নয়, দুটি নয় ২০ বছর থেকে ২৯ বছরের মধ্যে মাত্র ৯ বছরে ৯টি বিয়ে করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সুনিপূণ কারিগর এ সোলায়মান। তবে তার শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে ধরা পড়েছেন নগর গোয়েন্দা (বন্দর) পুলিশ ও পাহাড়তলী থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, বিয়ে পাগলা সোলায়মানের বিরুদ্ধে উঠতি বয়সি মেয়েদেরকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিয়ে করা ও অর্থ হাতিয়ে নেয়া সংক্রান্ত একটি অভিযোগ হাতে আসলে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করা হয় এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে পাহাড়তলী থানা এলাকার একটি বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় নবম স্ত্রী রহিমা আক্তারকে। এর আগে রাঙ্গামাটির ১৫ বছর বয়সী নবম স্ত্রী রহিমা আক্তারের  মা বাদি হয়ে পাহাড়তলী থানায় একটি মামলা রুজু করেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর জোন) আবু বকর সিদ্দিক সিভয়েসকে বলেন, মূলত প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিতেই সোলায়মান একটির পর একটি বিয়ে করে চলছিল। টার্গেট করতো নিম্নবিত্ত গার্মেন্টস শ্রমিকদের। অবশেষে এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

-সিভয়েস/এসএইচ/এসসি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়