Cvoice24.com


মাদ্রাসা থেকে সরানো হলো আল্লামা শফীর স্মৃতিচিহ্ন

প্রকাশিত: ১৯:২৩, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
মাদ্রাসা থেকে সরানো হলো আল্লামা শফীর স্মৃতিচিহ্ন

ছবি: সিভয়েস

দীর্ঘ ৭৪ বছর যে কর্মস্থলে কাটিয়েছেন জীবনের সোনালী সময়। নিজের জীবনের সবটুকু সময় ব্যয় করেছেন যে কর্মস্থলে সেই দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রয়াত মহাপরিচালক আল্লামা আহমদ শফীর স্মৃতি চিহ্নগুলো মাদ্রাসা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছেআহমদ শফীর পরিবার তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিয়ে গেলেও দীর্ঘ দিনের প্রিয় কর্মস্থল হাটহাজারী মাদ্রাসার ‘মাকবারাতুল জামিয়া’য় শায়িত আছেন হেফাজতে ইসলামের আমির কওমি অঙ্গনের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফী

আল্লামা আহমদ শফী ১৯৪৬ সালে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা নামে পরিচিত এই মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠানের মজলিসে শূরার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব পান। পরবর্তী সময়ে শায়খুল হাদিসের দায়িত্বও তিনি পালন করেন। ৪০ বছর শিক্ষকতা ও ৩৪ বছর ওই মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদে আসীন ছিলেন মৃত্যুর একদিন আগ পর্যন্ত। 

ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে মহাপরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করে হাসপাতালের পথে রওনা দেন শতবর্ষী এ আলেম। এরপরের দিনই ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় আজগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। যদিও অভিমান ও বুকভরা কষ্ট নিয়ে দুদিন আগে প্রিয় কর্মস্থল ছেড়ে যাওয়া আল্লামা আহমদ শফী ১৯ সেপ্টেম্বর নিজ কর্মস্থলে এসেছেন অ্যাম্বুলেন্সে করে নিথর দেহে লাখ লাখ ভক্ত অনুসারীদের হৃদয়ভাঙা আর্তনাদকারীদের উপস্থিতিতে। 

হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা নামে খ্যাত এ 
প্রতিষ্ঠানটির ইট-পাথরের প্রতিটি পরতে পরতে জড়িয়ে আছে বড় হুজুর নামে খ্যাত আল্লামা আহমদ শফির স্মৃতি চিহ্ন। মাদ্রাসার অনেক জায়গার সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে তার স্মৃতিচিহ্নগুলো। যা হয়ে থাকার কথা ইতিহাসের সাক্ষী। কিন্তু বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, আহমদ শফীর জ্যেষ্ঠ পুত্র রাঙ্গুনিয়ার শরফভাটা ইউনিয়নের পাখিয়ার টিলা কওমি মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ তার প্রয়াত পিতার ব্যবহৃত কিতাব, আসবাবপত্রসহ নানা সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছেন। এমনকি তার ব্যবহৃত খাট তোষকের সাথে মেডিকেল বেডও। দুপুরে জোহরের নামাজের পর এসব সরঞ্জামাদি তিনি পারিবারিকভাবে সংরক্ষণের জন্য মাদ্রাসা থেকে মিনি ট্রাকে করে নিয়ে যান।

এ ব্যাপারে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, 'হুজুরের ব্যবহৃত এসব জিনিস আমাদের কাছে শেষ স্মৃতি। এসব স্মৃতি নিয়ে আমরা তার আদর্শ ধারণ করে বেঁচে থাকতে চাই।'

তবে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে আল্লামা আহমদ শফীর স্মৃতিচিহ্নগুলো সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি সারাদিন আলোচিত হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী ইশতিয়াক সিদ্দিকি তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেছেন, 'দেওবন্দসহ বিভিন্ন জামিয়াতে আকাবিরদের স্মৃতিচিহ্ন সম্বলিত এক রুম আছে। যেখানে তাদের রচিত কিতাবাদি, ব্যবহৃত জিনিসপত্র রাখা হয়। দেশি-বিদেশি পরিদর্শকরা এতে উপকৃত হয়, প্রভাবিত হয়। দারুল উলুম হাটহাজারীতেও এমন একটি রুম তৈরি করলে সেটা অন্যান্য মাদরাসার জন্যও অনুসরণীয় হবে।'

তিনি আরো লেখেন, 'শাইখুল ইসলাম রহ. এর সারাটি জীবন ব্যয় করেছেন হাটহাজারী মাদরাসার জন্য। আজ তার আসবাবপত্র ও স্মৃতিচিহ্নগুলো পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। ছবিগুলো দেখে খুব কষ্ট লাগছে।
কর্তৃপক্ষ ও পরিবার চাইলে এমন একটি উদ্যোগের সূচনা হতে পারে।' তার এই পোস্টে অনেকেই একমত প্রকাশ করেন।

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়