Cvoice24.com

জেলে মোবাইলেও কথা বলতে পারবেন না ওসি প্রদীপ

প্রকাশিত: ০৯:১০, ১৩ অক্টোবর ২০২০
জেলে মোবাইলেও কথা বলতে পারবেন না ওসি প্রদীপ

মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকাণ্ডে কারাবন্দি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সঙ্গে কারাগারে আইনজীবী এবং পরিবারের কোনো সদস্যরা দেখা দূরে থাক মোবাইলে কথাও বলতে পারবে না। এরআগে দেখা করতে না পারলেও মোবাইলে কথা বলার সুযোগ ছিল তার। 

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।

বিষয়টি সিভয়েসকে নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক।

তিনি জানান, আসামি পক্ষের আইনজীবী ওসি প্রদীপের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ বন্ধ হওয়ার পর মোবাইলে যোগাযোগ করার সুযোগ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেই আবেদনও নাকচ করে দিয়েছেন।

এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ডিআইজি প্রিজনের রেফারেন্সে কারা কর্তৃপক্ষের একটি চিঠি আদালতে পৌঁছলে আদালত কারাবিধি অনুসরণ করে ওসি প্রদীপের সঙ্গে তার আত্মীয়স্বজন এবং আইনজীবী কাউকে দেখা করতে নিষেধ করে আদেশ জারি করেন।

কিন্তু দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, নৃশংস খুনি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্তদের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের যে নীতি রয়েছে- প্রদীপের বিরুদ্ধে মামলা চলমান থাকায় তার বিষয়েও ওই ধারা বলবৎ থাকবে বলে জানান দুদকের আইনজীবীরা।


এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের করা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে আদালতে আনা হয় ওসি প্রদীপকে। দুদকের ওই মামলায় বর্তমানে  তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ হত্যাকান্ডের ঘটনায় কারাগারে থাকা প্রদীপকে দুদকের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর থেকে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।

করোনা মহামারির কারণে বন্দীদের সাথে আত্মীয়স্বজন বা আইনজীবীদের সাক্ষাতের বিষয়টি বন্ধ রেখেছেন কারাগার কর্তৃপক্ষ।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খুনের তদন্ত চলার মধ্যে গত ২৩ আগস্ট চুমকি কারণ ও তার স্বামী প্রদীপের বিরুদ্ধে প্রায় ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন। মামলায় প্রদীপ দম্পতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১), মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ দমন আইন- ২০১২ এর ৪(২), ১৯৪৭ সালের দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চুমকি কারণ পেশায় একজন গৃহিণী। তিনি কোথাও চাকরি করেন না। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট দানপত্র দলিল মূলে নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন পাথরঘাটা এলাকায় জমিসহ একটি ছয়তলা বাড়ি তার পিতার কাছ থেকে পেয়েছেন। শ্বশুরের কাছ থেকে প্রদীপের স্ত্রীর উপহার পাওয়া বাড়ি নিয়ে দুদকের তদন্তে দেখা যায়, চুমকি কারণকে তার পিতা একটি বাড়ি দানপত্র করে দিলেও তার অন্য ২ ভাই ও ১ বোনকে কোনো বাড়ি দানপত্র করেননি। এতে প্রতীয়মান হয়, ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ‘ঘুষ ও দুর্নীতি’র মাধ্যমে অর্জিত আয় গোপন করার উদ্দেশ্যে স্থানান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে তার শ্বশুরের নামে ওই বাড়ি নির্মাণ করে রূপান্তরপূর্বক পরে চুমকি কারণের নামে দানপত্র করে নিয়ে প্রদীপ দাশ ভোগদখল করছেন। প্রদীপের গৃহিণী স্ত্রী চুমকি কারণ কমিশন ব্যবসায়ী হিসেবে ২০১৩-১৪ সালে প্রথম আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন।

পরে মৎস্য ব্যবসায়ী ও বাড়ি ভাড়া থেকে আয় দেখিয়ে আয়কর রিটার্ন জমা দেন। তিনি ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ কর বছরে আয়কর রিটার্নে কমিশন ব্যবসা বাবদ ব্যবসার মূলধন ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং আয় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেখান। তবে দুদক তদন্ত করে দেখেন, কমিশন ব্যবসার লাইসেন্স, সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ব্যবসা করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র, ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বা অন্য কোনো রেকর্ডপত্র সরবরাহ করতে পারেনি।

সিভয়েস /এসএইচ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়