Cvoice24.com


ডটের কারসাজিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট

প্রকাশিত: ১৩:০৩, ২৫ অক্টোবর ২০২০
ডটের কারসাজিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে ক্লিয়ারেন্স পারমিট (সিপি) জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। একটি ডটের (.) কারসাজিতে রাজস্ব ফাঁকির পাশাপাশি ফৌজদারি অপরাধ করেছে বলে জানান কাস্টমস কর্মকর্তা।

কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, চালানটি খালাসে দাখিল করা সিপি এবং অন্যান্য দলিলাদি যাচাইকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিপি এর হেডিংয়ে যে ওয়েবসাইটের ঠিকানা (www.mincomgov.com) রয়েছে তাতে দাখিল করা সিপি’র কপিও পাওয়া গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট হচ্ছে- www.mincom.gov.bd। 

এছাড়াও শুল্কায়ন গ্রুপের কাছে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সিপিতে স্বাক্ষরকারী উপ-সচিবের সঙ্গে সরাসরি ফোনালাপে জানা যায় দাখিল করা সিপি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমদানিকারক বরাবর জারি করা চিঠিতে বলা হয়েছে-ঘোষণাবহির্ভূত আমদানিকৃত পণ্যটি শিশুখাদ্য ও বিএসটিআই’র আওতায় শর্তযুক্তভাবে আমদানিযোগ্য হওয়ায় বিদ্যমান আমদানি নীতি আদেশের চতুর্থ অধ্যায়ের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদের বিধানসমূহ প্রতিপালিত হয়নি বিধায় সিয়াম এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে সিপি ইস্যু করার কোনো সুযোগ সেই মর্মে নির্দেশক্রমে অবহিত করা হলো। 

ঢাকার চকবাজারের ৬৬ মৌলভীবাজার ঠিকানার মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজের নামে গত ১০ জানুয়ারির ইনভয়েসে ১৩ হাজার ৫২০ কেজি চীনাবাদাম ও ৪ হাজার ৫১০ কেজি অলিভ ঘোষণায় একটি চালান আসে বন্দরে। চালানটি খালাসের জন্য চট্টগ্রামের শেখ মুজিব সড়কের প্রগ্রেসিভ টাওয়ারের খান এন্টারপ্রাইজ সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। গোপন সংবাদ থাকায় কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা আমদানিকারকের বিল অব এন্ট্রি লক করে। পরে চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় ২১ হাজার ৬০ কেজি ঘোষণা বহির্ভূত নেসলে লেকটোগ্রো ফরমুলেটেড মিল্ক পাউডার ফর চিলড্রেন পাওয়া যায়। যা আমদানি নীতি আদেশ ২০১৫-১৮ এর অনুচ্ছেদ ১৭ অনুযায়ী শর্তযুক্ত পণ্য।

এর ফলে কাস্টম হাউসের কমিশনার আমদানিকারকের ওপর ৬৬ লাখ টাকা ব্যক্তিগত জরিমানা ও ১০ লাখ টাকা বিমোচন জরিমানা আরোপ করেন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা আমদানি রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতরের সিপি দাখিল সাপেক্ষে চালানটি খালাসের আদেশ দেন। এরপর গত ১১ অক্টোবর আমদানিকারক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১টি সিপি দাখিল করেন।

১৩ অক্টোবর সিপি বিষয়ক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেকটি চিঠি দাখিল করেন। দুইটি চিঠির মর্মার্থ অনুযায়ী বিএসটিআই’র ছাড়পত্র এবং কমিশনারের বিচারাদেশ অনুযায়ী শুল্ককর ও জরিমানা দেওয়া সাপেক্ষে চালানটি খালাসের সিপি দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার নূর-এ হাসনা সানজিদা অনসূয়া জানান, আমদানিকারক প্রথমত মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি করে দ্য কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর ধারা ৩২ এবং দ্য ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট (কনট্রোল) অ্যাক্ট, ১৯৫০ এর সেকশন ৩ (১) লংঘন করেছেন। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিপি জালিয়াতি ও ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে তাতে ভুয়া সিপি আপলোড করে কাস্টমস বিভাগকে বিভ্রান্ত ও প্রতারিত করার মাধ্যমে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। তাই আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্ট ও পেনাল কোডের অধীন এফআইআর দায়েরের কার্যক্রম চলমান আছে।

তিনি বলেন, আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের যোগসাজশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে সিপি জালিয়াতির অপচেষ্টা কাস্টম হাউস কঠোর নজরদারির কারণে রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে। রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ ও জালিয়াতির অপতৎপরতা প্রতিরোধে কাস্টম হাউস সদা তৎপর রয়েছে।

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়