Cvoice24.com


খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ নীতিমালার দাবি ক্যাব’র

প্রকাশিত: ১৩:৪৯, ১৫ নভেম্বর ২০২০
খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ নীতিমালার দাবি ক্যাব’র

ভোক্তার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে জরুরিভাবে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

রবিবার (১৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট, হৃদরোগের ঝুঁকি এবং করণীয় : পরিপ্রেক্ষিত ভোক্তা’ শীর্ষক সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়। 

এসময় দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব ধরনের ফ্যাট, তেল এবং খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা মোট ফ্যাটের ২ শতাংশ নির্ধারণ এবং তা কার্যকর করার দাবি জানায় কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।  

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ও  ক্যাবের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। ট্রান্সফ্যাট নিয়ে দেশে এখনও নীতিমালা প্রনয়ণ করা হয়নি। আর নীতিমালা না হলে এক্ষেত্রে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরগুলি কার্যকর উদ্যোগ নিতে সক্ষম হবে না। তাই ট্রান্সফ্যাট নিয়ে নীতিমালা প্রণয়ন খুবই জরুরি। এছাড়া ট্রান্সফ্যাটসহ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে চাহিদা ও যোগানের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি জরুরি। যদি অনিরাপদ খাদ্য বিষয়ে ভোক্তারা সচেতন হয় তাহলে ওই খাদ্যের চাহিদা কমে যাবে এবং ব্যবসায়িরা ওই খাদ্য উৎপাদনে আগ্রহও প্রকাশ করবে না।’

সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ভোক্তা পর্যায়ে সচেতনতা ও ভোক্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের বিকল্প নাই। ভোক্তারা সচেতন নয় বলে খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলিও দায়িত্বহীন আচরণ করে থাকেন। দায়িত্বশীল ভোক্তারা যদি দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করেন তাহলে এ খাতে স্বনিয়ন্ত্রিত রেগুলেশন আসতে বাধ্য।’ 

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়া কবীর, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রফেসর ও হ্দরোগ বিভাগের প্রধান ডা. প্রফেসর প্রবীপ কুমার দাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হুদা, আনসার ১৫ ব্যাটেলিয়ানের পরিচালক এস এম আজিম উদ্দীন, বিএসটিআই চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালক প্রকৌশলী সেলিম রেজা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ ফয়েজউল্যাহ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ’র প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. মাহবুবুস সোবহান। এছাড়া প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রজ্ঞা’র ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক প্রকল্প সমন্বয়ক মাহমুদ আল ইসলাম শিহাব ও ক্যাবের প্রাজেক্ট কো-অর্ডিনেটর খন্দকার তৌফিক আল হোসাইনী। 

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার’স অব কর্মাসের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, পরিচালক অহিদ সিরাজ স্বপন, চট্টগ্রাম ইউমেন চেম্বারস অব কর্মাসের ভাইস প্রেসিডেন্ট রেখা আলম চৌধুরী, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুব্রত কুমার চৌধুরী, চট্টগ্রাম ডায়বেটিস জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্ঠিবিদ হাসিনা আকতার লিপি, অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফেরদৌসী আকতার, জেলা শিশু কর্মকতা নার্গিস আকতার, জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা নাজমুস সুলতানা শীমা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা বেগম, সরকারী মহসিন কলেজের অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রেহেনা আকতার, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি হাজী সালামত আলী, বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ইলিয়াছ ভূঁইয়া, ফুলকলির জিএম এম এ সবুর, বনফুলের জিএম আনামুল হক, গ্রীন গেইনের আসাদুল্লাহ গালিব, সাবেক বিভাগীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা খাইরুল বাশার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. মাহবুবুস সোবহান।

উল্লেখ্য, খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস হলো আংশিক হাইড্রোজেনেটেড অয়েল যা ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে পরিচিত। ভেজিটেবল অয়েল বা উদ্ভিজ্জ তেল (পাম, সয়াবিন) যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আংশিক হাইড্রোজেনেশন করা হলে তেল তরল অবস্থা থেকে মাখনের মতো জমে যায়, এই প্রক্রিয়ায় ট্রান্সফ্যাটও উৎপন্ন হয়। এই শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। 

মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ উচ্চ হারে হৃদরোগ, হৃদরোগজনিত মৃত্যু, স্মৃতিভ্রংশ ও স্বল্প স্মৃতিহানি জাতীয় রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতিবছর ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫ হাজার৭৭৬ জন মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ি ট্রান্সফ্যাট।

-সিভয়েস/জেআই

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়