Cvoice24.com


কক্সবাজার কারাগারে হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

প্রকাশিত: ১৬:৩৯, ১ ডিসেম্বর ২০২০
কক্সবাজার কারাগারে হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু

কক্সবাজার কারাগারে মোস্তফা (২৫) নামে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান আজাদকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি তিনি। এই মামলায় ২৯ নভেম্বর শুনানি শেষে তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

মারা যাওয়া হাজতি মোস্তফা কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদ ইউনিয়নের হরিপুর এলাকার বশির আহমেদের ছেলে। তবে, তারা এলাকায় ‘রোহিঙ্গা’ বলে পরিচিত।

সোমবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে দাবি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। যদিও কারাগারে গলায় ফাঁস দেয়ার মতো কোনো অবস্থা বন্দিদের পক্ষে থাকে না বলে দাবি করেছেন কারাভোগ করে বের হওয়া বেশ কয়েকজন বন্দি। এ কারণে তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেল সুপার নেছার আহমেদ।

কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার নেছার আহমেদ জানান, মারামারি ও হত্যাচেষ্টার মামলায় গত ১৮ নভেম্বর মোস্তফা কারাগারে আসেন। এ মামলায় ২৯ নভেম্বর রিমান্ড শুনানি ছিল। আদালত তাকে একদিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেন। আদালত থেকে তাকে কারাগারে আনার পর তার কক্ষেই পাঠিয়ে দেয়া হয়। ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাকে পেয়ে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক হাজতি মোস্তফাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শাহীন আবদুর রহমান জানান, সোমবার (৩০ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে মোস্তফা নামের এক বন্দিকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার নেছার আহমেদ বলেন, ‘আমি ছুটিতে গ্রামের বাড়ি। এরপরও যেহেতু কারাগারে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করার মতো কোনো দ্রব্য পাওয়ার কথা নয়, সেহেতু বন্দি মোস্তফার মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি জেলার ইন্সপেক্টরকে নিয়ে, তারা বৃহস্পতিবারের (৩ ডিসেম্বর) মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন। আরেকটি কমিটি করা হয়েছে হাসপাতালের চিকিৎসককে প্রধান করে। তিনিও একই সময়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন।’

তিনি আরও বলেন, ঊর্ধ্বতন মহলকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গত ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদ হরিপুর এলাকার একটি সালিশ থেকে উঠে বাড়ি ফেরার পথে অতর্কিত আক্রমণের শিকার হন আসন্ন ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান আজাদ লুতু। তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। কোপ থেকে মাথা রক্ষা করতে গিয়ে তার হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন প্রায়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।

তাকে কোপানোর ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ঘটনার পরই রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিত মোস্তফাকে স্থানীয়রা ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেয়। এরপর থেকে কারাগারের নিয়ন্ত্রণে তিনি চিকিৎসা নেন। সুস্থ হওয়ার পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়