Cvoice24.com


ঝুপড়ি ছেড়ে অট্টালিকায় উঠছে রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ৩ ডিসেম্বর ২০২০
ঝুপড়ি ছেড়ে অট্টালিকায় উঠছে রোহিঙ্গারা

নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে অবশেষে ঝুপড়ি ছেড়ে অট্টালিকায় উঠছে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। ঘিঞ্জি শিবিরে থাকার চাইতে তারা ভাসানচরের আধুনিক বাড়িঘরে যাওয়াটাকেই শ্রেয়তর মনে করছেন। উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রথম দলটি নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। 

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে ১১টি বাসে করে রোহিঙ্গারা যাত্রা শুরু করে। প্রথমে তাদের চট্টগ্রামের নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে সেখান থেকে নৌবাহিনীর ১৪টি জাহাজে করে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দোজা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যাওয়ার এবং সেখানে থাকার সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।’

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ‌‘ডিসেম্বর মাসেই আগ্রহী রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।’

এদিকে গত বুধবার (২ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী দিনে কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে জাতিসংঘ অবগত আছে। কিন্তু শরণার্থীদের স্থানান্তর প্রস্তুতি কিংবা রোহিঙ্গাদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংস্থাটিকে যুক্ত করা হয়নি।

এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পর্কে জাতিসংঘের কাছে তথ্যও খুবই কম আছে বলে বলা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। বিবৃতিতে বলা হয়, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের ব্যাপারে জাতিসংঘ তার আগেকার অবস্থানেই রয়েছে, অর্থাৎ ভাসানচরে যাবার ব্যাপরে, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যেন জেনে-বুঝে এবং মুক্তভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য জায়গাটি সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক, সুনির্দিষ্ট ও হালনাগাদ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যেন তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের অগাস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

ওই বছরের নভেম্বর মাসে কক্সবাজার থেকে এক লক্ষ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।

কিন্তু ২০১৮ সালে যখন প্রথম তাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হয়, তখন থেকেই রোহিঙ্গারা সেখানে যাবার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গত নভেম্বরে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের একটি দলকে ভাসানচর পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন দলটি ভাসানচরে যেতে সম্মতি জানালেও কক্সবাজারে ফিরে আবার টালবাহানা শুরু করে।

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়