Cvoice24.com


এমসি কলেজের সংঘবদ্ধ ধর্ষণকাণ্ডে অভিযোগপত্রে ৮ আসামি

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ৩ ডিসেম্বর ২০২০
এমসি কলেজের সংঘবদ্ধ ধর্ষণকাণ্ডে অভিযোগপত্রে ৮ আসামি

সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় দুই মাস ৮ দিনের মাথায় ছাত্রলীগের আট কর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে মামলার তদন্ত সংস্থা।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এর আগেই বুধবার (২ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার বি এম আশরাফ উল্যাহ তাহের।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার দুই মাসের অধিক সময় পর অভিযোগপত্র দেওয়া হলো। এ নিয়ে দুপুরে সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণের উপকমিশনারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এ ঘটনায় করা মামলার আট আসামি হলো ছাত্রলীগের সাইফুর রহমানক (২৮), শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫), মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫), মো. রাজন ও আইন উদ্দিন।

আসামিদের মধ্যে সাইফুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা, রনির বাড়ি হবিগঞ্জে, তারেক সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা, অর্জুনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় আর মাহফুজুর রহমান মাসুমের বাড়ি সিলেটের সদর উপজেলায়।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই গৃহবধূ (২৫)। করোনার কারণে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে ধর্ষণ করা হয়। এরপর তাদের মারধর করে টাকাপয়সাও ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। ওই রাতেই নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেন। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। এ ঘটনার পর জনমতের চাপে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ধর্ষণবিরোধী আইনও সংশোধন করে সরকার।

গত ১ অক্টোবর ও ৩ অক্টোবর দুদিনে গ্রেপ্তার আটজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহের পর পাঠানো হয় ঢাকার ল্যাবে।

গত ৩০ নভেম্বর ধর্ষণের ঘটনার ডিএনএ প্রতিবেদন আদালতের মাধ্যমে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এসে পৌঁছে। ডিএনএ প্রতিবেদনে ধর্ষণের সঙ্গে ছাত্রলীগের কর্মী সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি ও অর্জুন লস্করের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

এদিকে, ধর্ষণের রাতে এমসি কলেজে ছাত্রবাসে সাইফুর রহমানের দখলে থাকা কক্ষে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সাইফুরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করে। সেই মামলার অভিযোগপত্রও এখনও দেওয়া হয়নি।

অপরদিকে গণধর্ষণের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে এরই মধ্যে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও মহি উদ্দিন শামিম গঠিত বেঞ্চে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

গণধর্ষণের এ ঘটনার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ ২৬ অক্টোবর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও কলেজের অধ্যক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দোহাই দিয়ে কলেজ কমিটির এ প্রতিবেদনটি সিলগালা করে রাখেন।

তাছাড়া গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চার আসামির ছাত্রত্ব এবং সার্টিফিকেট বাতিল করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি তাদের স্থায়ীভাবে এমসি কলেজ থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসান।

এর আগে ঘটনার কয়েকদিন পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গণধর্ষণের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি এমসি কলেজে তদন্ত করতে আসে। তদন্ত শেষে তারা তাদের প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়