Cvoice24.com


হঠাৎ হাটহাজারী মাদ্রাসায় মামুনুল হক

প্রকাশিত: ১১:০৬, ৯ ডিসেম্বর ২০২০
হঠাৎ হাটহাজারী মাদ্রাসায় মামুনুল হক

ছবিঃ সিভয়েস

গত ১২ দিন আগেও যাকে চট্টগ্রামে প্রতিরোধের জন্য উত্তাল ছিল রাজপথ; ওয়াজ না করেই ঢাকায় ফেরত যেতে হয়েছিল যার। সেই মাওলানা মামুনুল হক বুধবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নির্বিঘ্নে ঘুরে গেলেন হাটহাজারী মাদ্রাসা। জেয়ারত করেছেন হেফাজতের আমির আহমদ শফীর কবর আর দেখা করেছেন হেফাজতের নতুন আমির জুনায়েদ বাবুনগরীসহ হাটহাজারী মাদ্রাসার তিন সিনিয়র শিক্ষকের সাথে। এসময় মামুনুলের সফরসঙ্গী ছিলেন তার দুই শিশু সন্তানও।  

জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিরোধী বক্তব্য দেওয়া আলোচিত-সমালোচিত হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক দুই সন্তানসহ নিজ গাড়িতে করে বুধবার দুপুর তিনটার পর হাটহাজারী মাদ্রাসায় আসেন। মাদ্রাসায় প্রবেশ করেই তিনি হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির মরহুম আহমদ শফীর কবর জেয়ারত করেন। সেখান থেকে একে একে দেখা করেন মাদ্রাসার শুরা কমিটির সদস্য মাওলানা শেখ আহমদ, অপর শুরা সদস্য মাওলানা ইয়াহিয়া ও হেফাজতের আমির ও মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরীর সাথে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে তাদের মধ্যে কি আলোচনা হয়েছে তা জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, বঙ্গবুন্ধর ভাস্কর্য বিরোধী বক্তব্য দিয়ে মামলার জালে বন্দি হওয়ায় সেই বিষয়েই আলোচনা করতে তিনি ঢাকা থেকে হাটহাজারী এসেছেন। 

আরও পড়ুন : মামলা থেকে ‌‘বাঁচতে’ হেফাজতের আইনজীবী ফোরাম

বিষয়টি নিশ্চিত করে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী সিভয়েসকে বলেন, ‘মাওলানা মামুনুল হক বিকেলে হাটহাজারী মাদ্রাসায় এসেছিলেন। তিনি আমির সাহেবসহ হুজুরদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে চলমান মামলাসহ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। এরপর বিকেল ৫টার দিকে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যান।’ 

আরও পড়ুন : বাবুনগরীদের মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে বাবুনগরীসহ তিন জনের বিরুদ্ধে দুটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় হয়। আদালত মামলা দুটি তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। জাতির জনকের ভাস্কর্যের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেয়ায় ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে একটি মামলার আর্জিতে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীমকে আসামি করা হয়। 

১৩ নভেম্বর ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ধূপখোলার মাঠে ‘তৌহিদি জনতা ঐক্যপরিষদের’ ব্যানারে এক সমাবেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়। এতে বক্তৃতা দেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা ফয়জুল করীম।

আরও পড়ুন : ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য: মামুনুল-বাবুনগরীর বিরুদ্ধে মামলা

একই দিনে রাজধানীর বিএমএ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে শানে রিসালাত কনফারেন্সে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করেন।

এরপর গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক মাহফিলে অংশ নিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী হুমকি দেন, যেকোনো দল ভাস্কর্য বসালে তা ‘টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেয়া’ হবে।

আরও পড়ুন : হাটহাজারীতেই আছেন মামুনুল হক!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে ইসলামভিত্তিক দলগুলো আন্দোলন করছে। ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের বক্তব্য ঘিরে আন্দোলন আরও গতি পায়। এই আন্দোলনের মধ্যে শুক্রবার রাতের আঁধারে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত স্থানীয় মাদ্রাসার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার দুই মাদ্রাসা ছাত্র পুলিশকে জানিয়েছেন, মাওলানা মামুনুল হক ও ফয়জুল করীমের বয়ান শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় দেশব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভাস্কর্য বিরোধীদের রুখে দেয়ার হুশিয়ারি দিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ।

-সিভয়েস/এমএন/এডি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়