Cvoice24.com

মহামারিতেও নতুন বই পেল শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১২:১২, ১ জানুয়ারি ২০২১
মহামারিতেও নতুন বই পেল শিক্ষার্থীরা

প্রতিবছর কেন্দ্রীয়ভাবে আলাদা আলাদা উৎসব করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা হলেও এবার করোনার কারণে তা হয়নি। করোনা মহামারির মাঝেও বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে বই বিতরণ। সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের হাতে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই তুলে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

শুক্রবার (১ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী সকাল থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণ শুরু হয়েছে।

যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে বিদ্যালয়ে এসে বই নিচ্ছেন।

প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অভিভাবকেরা স্কুলে গিয়ে বই নিচ্ছেন। তবে মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে বই নিচ্ছে। ১-৩ জানুয়ারি নবম শ্রেণী, ৪-৬ জানুয়ারি অষ্টম শ্রেণী, ৭-৯ জানুয়ারি সপ্তম শ্রেণী এবং ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করার নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

সরেজমিনে নগরীর নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রেণি ভিত্তিক বুথ থেকে শিক্ষার্থীরা নতুন বই সংগ্রহ করছে। প্রথম দিনে ৯ম ও ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ করা হয়। পরবর্তী ১১ দিনে শিফ্ট ভিত্তিক অন্যান্য শ্রেণির বইগুলোও বিতরণ করা হবে। তবে এ বছর করোনার কারণে প্রেস বন্ধ ও নানা সমস্যা থাকায় মাধ্যমিক পর্যায়ে শতভাগ বই বিদ্যালয়ে পৌঁছেনি।

নগরীর নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল আলম হোসাইনী সিভয়েসকে বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে মোট ২ হাজার ১৫০ জন শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ বই এখনো আসেনি। এখনো পর্যন্ত ৭০ ভাগ বই আমরা পেয়েছি। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ ৯ম শ্রেণি ও ৬ষ্ঠ শ্রেণির বই বিতরণ করা হচ্ছে।’ 

বই হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আজ আমরা নবম শ্রেণির বই পেয়েছি। তবে সব বই পাইনি। যেগুলো পাইনি তা পরে দিবে জানিয়েছে শ্রেণি শিক্ষকরা।’ 

এ বছর করোনার কারণে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে, তাই হয়নি কোন বার্ষিক পরীক্ষাও। তবে এসব শিক্ষার্থীদের ৯ম শ্রেণিতে বিভাগ নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে ২০১৯ সালে হওয়া ৭ম থেকে ৮ম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ৯ম শ্রেণিতে বিভাগ নির্ধারণ করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘২০১৯ সালের ৭ম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এ বছর বিভাগ নির্ধারণ করে ৯ম শ্রেণির বই দেওয়া হবে। যাদের ফলাফল প্রথম দিকে এগিয়ে ছিল তাদেরকে বিজ্ঞান বিভাগের বই দেওয়া হচ্ছে। তবে যাদের ক্রমিক  পেছনের দিকে রয়েছে সে সমস্ত শিক্ষার্থীদের একটি মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হবে খুব শীঘ্রই। এর ফলে যারা বিজ্ঞান বিভাগ নিতে ইচ্ছুক তারাও সুযোগ পাবে।’ 

নতুন বছরে চট্টগ্রাম জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ২ হাজার ৬৬টি বিদ্যালয়ে ১১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৪৩ জন শিক্ষার্থীকে ১ কোটি ৫৩ লাখের বেশি বই বিতরণ করা হবে। এদিকে মহানগর ও চট্টগ্রাম জেলার প্রতিটি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণ শুরু করা হয়েছে।

নগরীর নাসিরাবাদ কলোনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারহানা নাজনীন সিভয়েসকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের চাহিদামত শতভাগ বই আমরা পেয়েছি। প্রাথমিকে আজ ও আগামীকালের মধ্যে আমরা সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দিতে পারবো আশা করি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতিতে সঠিক অভিভাবক যাচাইয়ের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ বা উপবৃত্তির কাগজ প্রদর্শনপূর্বক যাচাই বাচাই করে বই বিতরণ করা হচ্ছে।’ 

সরেজমিনে নগরীর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দেখা গেছে, সকাল ১০টা থেকে ১ম থেকে ৩য় শ্রেণির বই বিতরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে দুপুরের পর ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির বই বিতরণ করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতে অভিভাবকদের নিকট বই বিতরণ করা হয়। শ্রেণি ভিত্তিক বুথ ও স্বাস্থ্য বিধি মেনেই নিদিষ্ট শিক্ষকগন বই বিতরণ করেন। 

এবার চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলা ও মহানগরের ৬ থানায় প্রাথমিকের মোট বইয়ের চাহিদা ৪৫ লাখ ৯৮ হাজার ১৩৯টি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রামের মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪ হাজার ৩৬৪টি এবং মোট শিক্ষার্থী ১০ লাখ ৫ হাজার ৭২৯ জন।

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়