Cvoice24.com


হামলার পর ট্রাম্প প্রশাসনে পদত্যাগের হিড়িক

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ৭ জানুয়ারি ২০২১
হামলার পর ট্রাম্প প্রশাসনে পদত্যাগের হিড়িক

মার্কিন পার্লামেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হামলার ঘটনার পর হোয়াইট হাউসের অন্তত তিনজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। আরও বেশ কয়েকজন পদত্যাগ করবেন বলে আভাস মিলছে। 

পদত্যাগ করা কর্মকর্তারা হলেন- হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সারাহ ম্যাথিউস, সোশ্যাল সেক্রেটারি রিকি নিকেটা ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের চিফ অফ স্টাফ স্টেফাইন গ্রিশ্যাম। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রাতেই তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে সারাহ ম্যাথিউস বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনে সেবা দিতে পেরে এবং যে নীতিগুলো আমরা গ্রহণ করেছি তাতে আমি গর্বিত। তবে আজ আমি যা দেখেছি তাতে আমি ভীষণভাবে বিরক্ত। আমি আমার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি যা এই মুহূর্ত থেকে কার্যকর হবে। আমাদের জাতির একটি শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর প্রয়োজন।

মেলানিয়া ট্রাম্পের চিফ অফ স্টাফ গ্রিশ্যাম এক টুইটার পোস্টে বলেছেন, হোয়াইট হাউসে কাজ করে দেশকে সেবা দিতে পারাটা গর্বের। মেলানিয়া ট্রাম্পের মিশনে বিভিন্ন স্থানে শিশুদের সহযোগিতা করতে পেরে ও এই প্রশাসনের অনেক অর্জনের অংশ হতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি।

স্টেফাইন গ্রিশ্যাম ও রিকি নিকেটা ট্রাম্প প্রশাসনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন। গ্রিশ্যাম এর আগে হোয়াইট হাউসের যোগাযোগ পরিচালক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।

ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পদত্যাগের বিষয় বিবেচনা করছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক রবার্ট ওব্রেইন, উপ জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক ম্যাট পটিংগার ও ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ ক্রিস লিডেল রয়েছেন।

গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয় অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা বুধবার কংগ্রেসের এক যৌথ অধিবেশনে বসেন। উভয় কক্ষের এই অধিবেশনে পপুলার ভোটের ভিত্তিতে ইলেকটোরাল কলেজের দেয়া ভোটগুলো গোনা হয় এবং তা চূড়ান্তভাবে প্রত্যয়ন করা হয়। অধিবেশনের কয়েক ঘন্টা আগে থেকেই এর বিরোধিতা করে ওয়াশিংটনে জড়ো হতে থাকেন কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক। সমাবেশে বক্তব্য দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে তিনি নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সমাবেশের অল্প একটু দূরেই ক্যাপিটল ভবন। ট্রাম্পের কয়েকশ উগ্র সমর্থক সেখানে গিয়ে ভবনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। কংগ্রেসের অধিবেশন চলাকালেই পুলিশের বাধা ভেঙে ভবনে ঢুকে পড়েন তারা। ভবনে ভাঙচুরও চালান। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদুনে গ্যাস ও পেপার স্প্রে ব্যবহার করে পুলিশ। গোলাগুলি এবং প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটে। 

ট্রাম্প সমর্থকদের আগ্রাসী তাণ্ডবের মুখে ক্যাপিটল ভবন অবরুদ্ধ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। ওয়াশিংটনে জারি করা হয় কারফিউ। সংঘর্ষের মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) সদস্যদের পাহারা দিয়ে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে সিনেট অধিবেশনও মুলতবি করা হয়।

পরে ক্যাপিটল ভবন থেকে ট্রাম্প সমর্থকদের হটাতে তিনঘণ্টা সময় লাগে পুলিশের। শেষ পর্যন্ত বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ক্যাপিটল ভবনকে নিরাপদ ঘোষণা করে পুলিশ। পরে আইনপ্রণেতারা ফের অধিবেশনকক্ষে ফিরে আসেন। আবার শুরু হয় যৌথ অধিবেশন।

উল্লেখ্য, কংগ্রেসে স্বীকৃতির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে ৭০ লাখের বেশি পপুলার ভোট পেয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। আর ইলেকটোরাল ভোটের হিসাবেও অনেক পিছিয়ে ট্রাম্প। তার ২৩২টির বিপরীতে বাইডেনের পক্ষে আসে ৩০৬টি। কিন্তু শুরু থেকেই ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তবে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলের নির্বাচন কর্মকর্তা ও নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে বড় ধরনের জালিয়াতির অভিযোগকে ভ্রান্ত আখ্যা দিয়েছেন।

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়