ভাড়া না দেওয়ায় ভাড়াটিয়ার দরজায় তালা, বন্ধ ঘরে শিশুর মৃত্যু

কাঠের ডিজাইন মিস্ত্রী ইমদাদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তামান্না মাসিক চার হাজার টাকায় খুলনা মহানগরীর হরিণটানা রিয়াবাজার এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। ‍কিন্তু মাসের শুরুতে ভাড়া দিতে না পারায় গত ৬ জানুয়ারি থেকে ঘরে শিশু সন্তানসহ তামান্নাকে তালাবদ্ধ করে রাখেন বাড়িওয়ালা মো. নওশের। এ ঘটনায় বন্ধ ঘরে বালতির পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় ছয় মাসের শিশুটির। 

এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিশুটির মা-বাবা বুধবার বাড়িওয়ালাকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। উল্টো অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করেছে। পরে এ বিষয়ে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।

মা তামান্না জানান, তালাবদ্ধ অবস্থায় গত ১১ জানুয়ারি দুপুরে তিনি বাড়ির ছাদে কাপড় নাড়তে যান। শিশুটি খেলতে গিয়ে হঠাৎ বালতির পানির মধ্যে উল্টে পড়ে যায়। ঘরে এসে তিনি সন্তানকে উদ্ধার করলেও বাইরে থেকে ঘর তালাবদ্ধ থাকায় চিকিৎসকের কাছে নিতে পারেননি। ওই অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। 

মায়ের আকুতি, ‘আমার মতো এভাবে যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। আর কোনো পাষণ্ড বাড়িওয়ালা যেন এভাবে অন্যায় করতে না পারে।’ এ জন্য তিনি বাড়িওয়ালার বিচার দাবি করেন। 

শিশুর বাবা ইমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষ আমি। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও সন্তানকে নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসতাম। কিন্তু বাড়িওয়ালার নির্মমতায় আজ ওই সন্তানকে হারাতে হলো।’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাড়িওয়ালা মো. নওশের।

এ বিষয়ে লবণচরা থানার ওসি সমীর কুমার সরকার বলেন, ‘মায়ের অবহেলার কারণেই তার শিশু সন্তান পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ কারণেই অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে। তবে বাড়িওয়ালা বাইরে থেকে ঘর তালাবদ্ধ করেছিল কি-না তা জানা নেই।’