Cvoice24.com

নাসার পথে স্বপ্ন আরিফুল হাসানের

প্রকাশিত: ১০:৩৩, ২৯ মে ২০১৮
নাসার পথে স্বপ্ন আরিফুল হাসানের

সৃষ্টির আনন্দই মানুষকে করেছে উদ্ভাবনী শক্তিতে বলীয়ান। যদিও গুটি কয়েক মানুষ এ আনন্দকে জীবনের লক্ষ্য করে তোলে। তাদেরই অবদানেই সভ্যতা ধাপে ধাপে এগিয়ে যায়। এমনই একজন মানুষ আরিফুল হাসান অপু। নতুন কিছু সৃষ্টি করার মাঝেই তিনি খুঁজে পান আনন্দ। তার ধ্যান-জ্ঞান বিজ্ঞান ও নব নব আবিষ্কার। তিনি একজন তরুণ উদীয়মান বাংলাদেশি আইটি উদ্যোক্তাও। তার বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার রয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ কয়েকবার পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রায় ৪৫টি বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি মেলার নির্দেশক ও বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। আরিফুল হাসান অপু জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠা করেন ডক্টরসবিডি.কম। এটি আমাদের দেশের প্রথম চিকিত্সা বিষয়ক ওয়েব পোর্টাল। এছাড়াও তিনি তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘ই-সফট’-এর প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর পরিচালক এবং দেশের সবচেয়ে বড় স্টুডেন্ট ফোরাম ‘বেসিস স্টুডেন্টস ফোরাম’-এর সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন। বর্তমানে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যাকাথন ‘নাসা অ্যাপ চ্যালেঞ্জ-২০১৬’-এর বাংলাদেশ পর্বের সমন্বয়ক। তার কাছে নাসা অ্যাপ চ্যালেঞ্জ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আয়োজিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যাকাথন প্রোগ্রাম এটি। যা এ বছর ১৭০-এর অধিক শহরে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশে এ বছর এই প্রতিযোগিতা দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। টেকনোলজিস্ট, বৈজ্ঞানিক, ডিজাইনার, আর্টিস্ট, এডুকেটর, উদ্যোক্তাসহ সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করাই এর মূল লক্ষ্য।’ তিনি জানান, বাংলাদেশের যে কেউ এখানে অংশগ্রহণ করতে পারেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী এই তিন জোনে বাছাই করা হয় এবং বাছাইকৃত প্রতিযোগীদের নিয়ে মূল পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের ওয়েবসাইটে (studentsforum.basis.org.bd) গিয়ে যে কেউ নাম নিবন্ধনের মাধ্যমে এতে অংশ নিতে পারেন। এই প্রতিযোগিতার আরও বিস্তারিত ‘নাসা অ্যাপ চ্যালেঞ্জ-২০১৬’-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট 2016.spaceappschallenge.org-তে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিযোগিতার মূল আয়োজক মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘নাসা’। আর লোকাল অর্গানাইজার হিসেবে আছে বেসিস। নাসা কীভাবে সহযোগিতা করছে জানতে চাইলে আরিফুল হাসান জানান, ‘গত বছর স্পেস অ্যাপস প্রতিযোগিতার প্রতিষ্ঠাতা ও সংগঠক আলী লিওয়েলিন বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার এই সফর থেকেই বোঝা যায় প্রতিযোগিতাটিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ তারা কতটা কামনা করছে। নাসা সরাসরি আমাদের সঙ্গে যুক্ত আছে। বাংলাদেশে এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের বিষয়টিকে তারা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। প্রতিযোগিতা সফল করার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা ও দিক-নির্দেশনা তারা আমাদের দিচ্ছেন। তাদের গাইড লাইন মেনেই আমরা সবকিছু করছি। এছাড়া প্রতিযোগিতায় যারা বিজয়ী হবেন বা ভালো করবেন, পরবর্তী সময়ে তাদের প্রজেক্ট আরও উন্নত করতে বা প্রজেক্ট বিষয়ক যেকোনো ধরনের সহযোগিতা নাসা করবে।’ এই প্রতিযোগিতা নিয়ে ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা আছে, পরবর্তী সময়ে দেশের প্রতিটি বিভাগকে এতে যুক্ত করার।’

এই প্রোগ্রামে সহযোগিতা করছে বেসিস স্টুডেন্টস ফোরাম। এই ফোরাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের আইডিয়াটা মূলত বেসিস প্রেসিডেন্ট শামীম আহসানের মাথা থেকে আসে। স্থানীয় আইটি শিল্পে যে বিপুল পরিমাণ দক্ষ পেশাজীবী প্রয়োজন, সে চাহিদা পূরণ এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্ট কিংবা বিনিয়োগে সহযোগিতা করতেই এই ফোরামের যাত্রা শুরু হয়।’ ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আরিফুল হাসান অপু। এতকিছু একসঙ্গে কীভাবে সমন্বয় করেন জানতে চাইলে আরিফুল হাসান হেসে বলেন, ‘ছাত্রজীবনে থেকেই উদ্ভাবনী কিছু করতে খুব ভালো লাগত। সেই ভালোলাগা থেকেই একসময় আবিষ্কারের পিছনে ছুটেছি। যা পরবর্তী সময়ে নতুন কিছু করতে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। আসলে ইচ্ছা ও নিষ্ঠা থাকলে অনেক কিছুই করা সম্ভব।’

বর্তমান প্রজন্ম নিয়ে তিনি কতটা আশাবাদী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। এই তরুণদের জন্যই আজ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাবে।’

সিভয়েস/এএইচ

রিয়াদ খন্দকার

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়