Cvoice24.com


সাইক্লিং এ এগিয়ে চট্টগ্রামের তরুণরা

প্রকাশিত: ১০:৩১, ২১ জুন ২০১৮
সাইক্লিং এ এগিয়ে চট্টগ্রামের তরুণরা

চট্টগ্রামের সাইক্লিং কম্যুনিটি গুলো দিন দিন চট্টগ্রামে বেশ পরিচিতি লাভ করে চলেছে। বর্তমান সময়ে চট্টগ্রামের রাস্তায় বের হলেই চোখে পরবে মাথায় হেলমেট আর হাতে গ্লাবস পরিহিত কোন না কোন সাইক্লিষ্টকে আর এদের প্রত্যেকেই স্থানীয় বিভিন্ন সাইক্লিং কম্যুনিটির সাথে জড়িত। এ অঞ্চলে সাইকেলের প্রচলন বেশ আগে হতেই এমন নয় যে বিগত বছরগুলোতেই শুরু হয়েছে তবে এটা অস্বীকার করার কিছু নেই যে বর্তমান সময়ে তরুণদের মাঝে এ বাহনটির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আরো বাড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠিত সাইকেল গ্রুপ এর যথেষ্ট অবদান আছে। এই সাইকেল গ্রপগুলো সাইক্লিষ্টদের একত্রিত করে বিভিন্ন ইভেন্টের মাধ্যমে তাদের রাইডসমূহ পরিচালনা করে। এতে যেমন থাকে সরব উপস্থিতি আবার থকে অদম্যকে জয় করার স্পৃহা। প্রতিটি রাইডই হয়ে উঠে সাইক্লিস্তদের মিলন মেলা, প্রতি সপ্তাহেই প্রতিটি সাইকেল গ্রুপের থাকে নির্দিষ্ট রাইড কখনো তা দিনে আবার কখনো রাতে। ইভেন্টে উল্ল্যেখ থাকে রাইডের নিয়মাবলী এবং রুটের ম্যাপ, এসব রাইডে প্রতিটি সাইক্লিষ্টকে সেইফটি গিয়ার হিসেবে হেলমেট ও গ্লাবস পরিধান করতে হয়।  গ্রুপের নিয়ম মেনেই তাদের প্রতিটি সদস্য রাইডে অংশ নেয়।

একটা সময় ছিল যখন হেলমেট ফ্রি সাইকেল চালাত সবাই কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে হেলমেট এখন সাইকেলেরই অনুষঙ্গ। সেইফ সাইক্লিং এর ধারণাটি জন্ম লাভ করে উনিশ শতকে ইউরোপে, আর বহিঃবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এখন তা আমারাও অনুভব করছি। প্রথম প্রথম সাইক্লিষ্টরা সেইফটি গিয়ার পরা শুরু করলে অনেকেই ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করত, মানুষের সেই অজ্ঞতাকে ভেঙ্গে দিয়েছে সাইক্লিং কমিউনিটির স্বপ্ন দ্রষ্টারা। আশাহত না হয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয়তাকেই প্রাধান্য দিয়েছে তারা।

চট্টগ্রামে সাইক্লিং কমুনিটি গড়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে কিছু অনলাইন ও এলাকা ভিত্তিক সাইকেল গ্রুপ। তাদের মধ্যে বর্তমানে সক্রিয় আছে এডভেঞ্চার ক্লাব অব চিটাগং, এফ এন এফ রাইডারস চিটাগং, দ্বি-চক্র যান, ফড়িং সাইকেলের দল, আর এস আর জেড, টু হুইলারস, আর সি সি সহ আরো অনেকেই। শুধুই যে সাইক্লিং করছে গ্রুপগুলো তা কিন্তু নয় এরা মানব কল্যাণমুখী প্রায় প্রতিটি সামাজিক কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করে চলেছে। পথ শিশুদের অন্ন-বস্ত্র দান, শীতার্ত মানুষকে বস্ত্র দান, বাচ্চাদের জন্য স্কুল নির্মাণ, রক্তদান কর্মসূচি, অসহায়দের চিকিৎসার্থে সাহায্য দান, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন সহ এমন অনেক সমাজমুখী কাজ আছে যেগুলা স্বেচ্ছায় স্বার্থহীনভাবে করে যাচ্ছে সাইক্লিং কমিউনিটিগুলা।  

আমাদের এই সমাজে অবক্ষয়ের দুম্রজাল ডিঙিয়ে সাইক্লিং তারুণ্যকে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নাই। একটা সময় তারুণ্য প্রায় ঘর বন্দী হতে বসেছিল, তারা মজে থাকত কম্পিউটার গেম ও ভার্চুয়াল জগত নিয়ে। পিতা মাতারা শঙ্কিত থাকত তাদের শারীরিকভাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক বেড়ে উঠা নিয়ে…! আর সেই জায়গায় সাইক্লিং অনেকটাই সমাধান দিয়েছে, তারুণ্যকে ঘরের চার দেয়ালের ভেতর থেকে টেনে এনেছে প্রকৃতির সবুজ আঙিনায়, দিয়েছে প্রাণচঞ্চলতা। উঠটি বয়সী তরুন তরুণীদের এখন সাইক্লিং এর প্রতি আগ্রহ ও উত্তেজনা ব্যাপকহারে লক্ষ্য করা যায়।  প্রায় প্রত্যেক সাইক্লিষ্ট এরই এখন লক্ষ্য থাকে ভাল ও উন্নত মানের একটি সাইকেলের অধিকারী হওয়া। কেননা দামের উপরও সাইকেলের পারফরমেন্স নির্ভর করে। কারো পছন্দ মাউন্টেন বাইক আবার কারো পছন্দ রোড বাইক। বাজারে দেশের অনেক ভাল সাইকেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সাইকেল থাকলেও বিদেশী সাইকেলের প্রতি তরুণদের জোঁক একটু বেশি। চট্টগ্রাম শহরের নিউ মার্কেট ও সদর ঘাট এলাকায় ছোট বড় অনেক সাইকেলের দোকান এবং শোরুম আছে যেখানে পাওয়া যায় দেশি-বিদেশী বিভিন্ন নাম করা ব্র্যান্ডের সাইকেল। প্রয়োজনের তাগিদে সাইকেল চালানো এমন ধারনা বর্তমানে আর নেই, তরুণ ও সব বয়সী মানুষদের কাছে সাইক্লিং এখন ট্রেণ্ড ও ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।

সিভয়েস/এএইচ

তারুণ্য ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়