Cvoice24.com


অন্যকে নিয়ে ভাবতে শেখাচ্ছে ‘তারুণ্য’

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ২৯ জুলাই ২০১৮
অন্যকে নিয়ে ভাবতে শেখাচ্ছে ‘তারুণ্য’

অনেকেই যেখানে কেবল নিজেকে নিয়ে ভাবনায় ব্যস্ত, সেখানে ‘তারুণ্য’ অন্যকে নিয়ে ভাবতে শেখাচ্ছে, অন্যকে সেবা দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্যে ধাবিত হচ্ছে। প্রমাণ করছে ‘মানুষ মানুষের জন্য’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী কিছু শিক্ষার্থীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তারুণ্য পথচলা শুরু করে।

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই স্বেচ্ছাসেবী ও জনকল্যাণমূলক সংগঠন হিসেবে হাটি হাটি পা পা করে যাত্রা শুরু করে তারুণ্য। চলতি বছরের ২৯ জুলাই, তারুণ্য সাফল্য ও গৌরবের ৯ বছর পেরিয়ে ১০ম বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৯৪ জন ছাত্রছাত্রী তারুণ্য-এর স্বেচ্ছাসেবী সদস্য হিসেবে তাদের মেধা ও মননশীলতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।

সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে তারুণ্য হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপরিচিত ও স্বনামধন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবার কাছে ভালোবাসা ও ভরসার একটি নাম তারুণ্য। বিশেষ করে তারুণ্যের রক্তদান কর্মসূচি তারুণ্যকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। প্রতিদিনই কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার মুমূর্ষু রোগীরা রক্তের আবেদন নিয়ে তারুণ্যের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করেন। তারুণ্যের নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতার তালিকা হতে ফোন করে রক্তদাতা সংগ্রহ করে এবং রোগীর স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। এই রক্তদাতারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা। একটি ফোনকল পেয়েই মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিতে ছুটে যান তারুণ্যের রক্তযোদ্ধারা। তারুণ্য-এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকও রক্তদান করে থাকেন। মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে রক্তদানে এগিয়ে আসতে তরুণদের উৎসাহিত করার কাজটি প্রথম থেকেই করে যাচ্ছে তারুণ্য। এজন্য তারুণ্য প্রতিবছর রক্তদানে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সপ্তাহ ও পক্ষকালব্যাপী ক্যাম্পেইন, পোস্টারিং ও সেমিনারের আয়োজন করে থাকে। তারুণ্য স্বপ্ন দেখে এক মানবিক সমাজের।

অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও জনকল্যাণমূলক এই তিনটি মূলনীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তারুণ্য। তারুণ্য-এর সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয় সংগঠনের সভাপতি, সেক্রেটারি সহ ১৩ সদস্যের কার্যকরী পরিষদের তত্ত্বাবধানে। প্রতিবছর বার্ষিক সভায় সদস্যদের প্রত্যক্ষ ও গোপন ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কার্যকরী পরিষদ গঠন করেন। তারুণ্যের রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষককে নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ। যাঁরা তারুণ্যের প্রতিটি পদক্ষেপে দিক-নির্দেশনা দিয়ে সহযোগিতা করেন।

তারুণ্য প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই রক্তদান কর্মসূচির পাশাপাশি আরো বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক ও সৃজনশীল কার্যক্রম করে আসছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, দুস্থ ও শীতার্ত মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপদগ্রস্ত মানুষদের সহায়তা, পথশিশুদের নিয়ে পিকনিক, বৈশাখে পথশিশুদের নিয়ে দই-চিড়া উৎসব সহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও শিক্ষা ও ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট খাতেও কাজ করে তারুণ্য। প্রতিবছর ব্রিটিশ কাউন্সিল প্রদত্ত ‘অ্যাকটিভ সিটিজেন্স ইয়ুথ লিডারশিপ ট্রেনিং’ আয়োজন সহ বিভিন্ন সময় শিক্ষা, ক্যারিয়ার ও অনুপ্রেরণামূলক বক্তাদের নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করে থাকে। ক্যাম্পাসে ক্যারিয়ার বিষয়ক সেমিনার ‘ক্যারিয়ার আড্ডা উইথ সুশান্ত পাল’ এর আয়োজকও তারুণ্য।

সম্প্রতি তারুণ্য একটি পাঠাগার চালুর উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। বই সংগ্রহের কর্মসূচি চলছে, শিগগির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তারুণ্য গণ পাঠাগার চালু হতে যাচ্ছে।

তারুণ্যের সভাপতি আরমান রেজা জয় বলেন, ‘তারুণ্য শুধু একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নয় তারুণ্য একটি একাডেমি, যেখানে প্রতিটি সদস্য মানবিকতার দীক্ষা পেয়ে থাকে। তারুণ্য প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবীকে দক্ষ নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন করে গড়ে তোলে। তারুণ্যের শক্তি পারে ইতিবাচক সমাজ বিনির্মাণ করতে। আমরা স্বপ্ন দেখি একসময় ‘তারুণ্য’ নামক আইডিয়াটি ছড়িয়ে পড়বে দেশের সকল প্রান্তে।’

সিভয়েস/এএইচ

তারুণ্য ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়