Cvoice24.com


বছরজুড়ে পেঁয়াজ দামে কাঁদলো দেশবাসী

প্রকাশিত: ১৩:২৮, ১ জানুয়ারি ২০২০
বছরজুড়ে পেঁয়াজ দামে কাঁদলো দেশবাসী

২০১৯ সালে দামী হয়ে উঠা পণ্যের নাম হলো পেঁয়াজ। দেশের প্রতিটি মহলে পেঁয়াজের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি মানুষের দুর্ভোগ ও দুঃশ্চিন্তায় ডুবিয়েছে। পেঁয়াজের মূল্য হ্রাসে বাণিজ্যমন্ত্রীর একাধিক আশ্বাস ও সরকার বহুমুখী উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয়নি। তর্ক-বির্তক এড়িয়ে পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকা অতিক্রম করে বাংলাদেশের বাজারে ইতিহাস তৈরি করেছে।

২৯ সেপ্টেম্বর হঠাৎ ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথে পেঁয়াজের দাম রাতারাতি দ্বিগুণ হয়ে যায়। অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়। আর প্রতিদিনের সূর্যোদয় জানান দিতো পেঁয়াজের উর্দ্ধমূখী দাম। দেশের অনেক জেলায় বস্তায় বস্তায় পঁচা পেঁয়াজ নদীর পাড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। দেখা যায়, খাতুনগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতার গাড়ি নিয়ে আসে একদিনে ১০ টন পঁচা পেঁয়াজ। ঘাতক সিন্ডিকেট গোপনে এ পঁচা পেঁয়াজের বস্তা ফেলে যায়। অন্য দিকে পেঁয়াজ নিয়ে জনমনে দেখা যায় আতঙ্ক।

গত তিন মাসে একাধিক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তাঁর প্রতিটি বক্তব্যে সপ্তাহখানেক পর পেঁয়াজের মূল্য কমে যাওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু এ আশ্বাসের সাথে ব্যবসায়ীদের ঘাতক সিন্ডিকেটের কোনো সম্পর্ক না থাকায় পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে ব্যর্থ হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর সরকারের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে ব্যবসায়ীরা সপ্তাহ খানেক পর ৩০-৪০ টাকা বেড়িয়ে পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকা অতিক্রম করিয়েছে। এক পর্যয়ে পেঁয়াজের দামে লাগাম টানার ব্যর্থতা লুকাতে জনসাধারণকে পেঁয়াজ না খাওয়ার পরামর্শ দেয় সরকার।

অন্যদিকে সরকার এ দুর্ভোগ ও সংকট মোকাবিলায় মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে। এরপর একেক করে মিশর, তুরস্ক, পাকিস্তান ও চীন থেকে শুরু হয় আমদানি। তবুও দাম কমেনি। বরং ব্যবসায়ীদের ইচ্ছানুযায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। এতো আমদানির খবর পেয়েও পেঁয়াজের মূল্য দুই অঙ্কে না আসায় দেশের জনগণ ক্ষুদ্ধ ও বিরক্ত হতে থাকে। তাদের মনে একটিই প্রশ্ন; আমদানি করা পেঁয়াজ গেলো কোথায়?

পেঁয়াজের দাম জুন মাসে ৬৫ টাকা, জুলাইয়ে ৭০ টাকা, আগস্টে ৮০ টাকা, সেপ্টেম্বরে ১০০ টাকা, অক্টোবরে ১২০ টাকা আর নভেম্বরে দিনে দিনে বেড়ে ২৮০ টাকা পর্যন্ত দামে খুচরা বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়। ডিসেম্বরের শুরুতে খুচরা বাজারে দেশি ২২০-২৩০ টাকা এবং মিসর ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। 

পরবর্তীতে বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন সহ দেশের নানা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রাকে করে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে। এতে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমানো সম্ভব হলেও দেশি পেঁয়াজের দাম এখনো দুই সংখ্যায় আনা সম্ভব হয়নি।

সিভয়েস/এসবি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়