Cvoice24.com


হালদায় ডিম সংগ্রহে ভাঙলো একযুগের রেকর্ড

প্রকাশিত: ১২:১১, ২২ মে ২০২০
হালদায় ডিম সংগ্রহে ভাঙলো একযুগের রেকর্ড

দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। এবারের ডিম সংগ্রহে অন্তত একযুগের রের্কড ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

শুক্রবার (২২ মে) বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৫৬০ জন ডিম সংগ্রহকারী ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করেছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রথম কার্প জাতীয় মাছ নমুনা ডিম ছাড়ার পর শুক্রবার সকাল থেকেই সব প্রজাতির মা মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে। এরপর হালদা নদীর হাটহাজারী থেকে রাউজান উপজেলা পর্যন্ত নদীর বিভিন্ন অংশে শত শত ডিম সংগ্রহকারী নদীতে ডিম সংগ্রহ করতে শুরু করে। পরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুলত শুক্রবার সকাল থেকেই হালদায় ডিম সংগ্রহের উৎসব শুরু হয়।

 

হাটাহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমীন সিভয়েসকে বলেন, 'হালদায় এবারে ডিম সংগ্রহে ভেঙ্গেছে গত এক যুগের রের্কড।গত বছর ১০ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়। এবার হালদার মা মাছ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কারণে আড়াইগুণ ডিম বেশি পাওয়া গেছে। এবার মোট ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। তাছাড়া সরকারী পর্যায়ে প্রস্তুত রয়েছে তিনটি আধুনিক হ্যাচারী। পাশাপাশি প্রস্তুত স্থানীয় হ্যাচারীগুলোও।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও জানান, শুক্রবার সকাল থেকে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করায় সংগ্রহকারীরা ছোট ছোট নৌকায় তাদের নিজস্ব কৌশলে ডিম সংগ্রহ করে। একই সাথে এসব ডিম থেকে নদী পাড়ে হ্যাচারীগুলোতে রেণু ফোটানোর কাজও শুরু হয়েছে। এই কাজে নিয়োজিত আছে ২৮০টি নৌকায় ৫৬০ জন ডিম সংগ্রহকারী। শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত হালদা নদী থেকে প্রায় ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ হয়েছে।

তবে করোনার ক্লান্তিকালে সংগৃহিত ডিমের সংরক্ষণ এবং রেণু পরিবহন নিয়ে শঙ্কিত হালদায় জড়ো হওয়া ডিম সংগ্রহকারিরা। তবে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন সিভয়েসকে অভয় দিয়ে বলেন, 'হালদায় ডিম সংগ্রহকারিদের করোনা সংক্রমণ রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সংগৃহিত মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেণু সংরক্ষণ ও পরিবহনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হালদা থেকে গত বছর ১০ হাজার ২০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর আগে ২০১৮ সালে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালে ১ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়।

হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারিসহ স্থানীরা বলছেন, গতবছর অনাবৃষ্টি, মা মাছের মৃত্যু, দূষণ, চলমান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজে ড্রেজার ও নৌযান চলাচল বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন কারণে ডিমের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গিয়েছিল। তবে এবারে ছাড়িয়েছে একযুগের রের্কড।

উল্লেখ্য, দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। এই নদীতে কাতলা, রুই, মৃগেল, কালবাউশ জাতের মা মাছ নির্ধারিত মৌসুমে ডিম ছাড়ে। নদীর দুইপাড়ে মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহে বংশ পরম্পরায় অভিজ্ঞ জেলেরা অপেক্ষা করে থাকে।

-সিভয়েস/এএ/এডি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়