Cvoice24.com

করোনা চিকিৎসা
প্রস্তুত হয়নি ইউএসটিসি-ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল, দিতে হবে চিকিৎসা ব্যয় 

প্রকাশিত: ১৫:০৬, ৩ জুন ২০২০
প্রস্তুত হয়নি ইউএসটিসি-ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল, দিতে হবে চিকিৎসা ব্যয় 

ছবি: সিভয়েস

চট্টগ্রাম নগরের বেসরকারি বৃহৎ দুটি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা চালুর সরকারি নির্দেশনার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলও কোনও সুখবর নেই। সরকার নির্ধারিত ইউএসটিসি (বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল) ও ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতির জন্য আরো সময় লাগবে বলে জানিয়েছে। এমনকি জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সাথে হাসপাতাল দুটির কোনও এমইইউ পর্যন্ত হয়নি। 

অন্যদিকে হাসপাতাল দুটি করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি ঘাটতির জন্য মূলত আর্থিক সংকটকেই সামনে আনছে। রোগীর চিকিৎসায় অর্থ আদায়ের প্রস্তাব দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুটি৷ হাসপাতালগুলোর এই দাবির সাথে একমত হয়ে টাকার বিনিময়ে ওই দুই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জনও।  
 
গত মঙ্গলবার (২৬ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে হাসপাতাল দুটিকে করোনা চিকিৎসায় চালু করার ঘোষণা দেয়া হয়। এ ঘোষণার পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুন) হাসপাতাল দুটি প্রস্তুত রাখার কথা বলা হলেও প্রস্তুতি এখনো শেষ হয়নি। কখন রোগী ভর্তি করাতে পারবে তাও স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না হাসপাতাল পরিচালনার সাথে জড়িত কর্মকর্তারা। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষিত অফিস আদেশে বলা হয়েছিল, ‘চট্টগ্রামে ক্রমাগতভাবে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় সংক্রমিত রোগীর সেবা নিশ্চিতে জননিরাপত্তা বিভাগ ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালকে (ইউএসটিসি) বিশেষায়িত করোনা হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণার অনুরোধ করেছিল। পরিস্থিতি বিবেচনায় নগরের খুলশি এলাকার বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ও পাহাড়তলী এলাকার বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালকে বিশেষায়িত করোনা হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হলো।’

বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের (ইউএসটিসি) প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে হাসপাতালটির পরিচালক ডা. কামরুল হাসান সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ নতুন ভবনে কোভিড পেশেন্টের চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের কাজ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শেষ। আর বাকি অংশটা জনবল সংকটসহ নানা সংকটের কারণে বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া ফান্ডিংয়ের (অর্থসংস্থান) একটা সমস্যাও আছে।’

কাজ শেষ হতে কতদিন সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা বলা খুব কঠিন। আমাদের যে কাজ আটকে আছে তা টাকার জন্য মেইনলি (মূলত) আটকে আছে। যদি ফান্ডিং পেয়ে যায় তাহলে দুই দিনের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। কিন্তু বিষয়টা হলো- আমাদের কোভিড চিকিৎসা দিতে বলা হলেও এখনো পর্যন্ত আমাদের সাথে সিভিল সার্জন মহোদয়ের কোন এমইইউ হয়নি। এমইইউ হলে কাজ দ্রুত গতিতে শেষ করা সম্ভব হবে।’

ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের প্রস্তুতি সম্পর্কেও জানতে চাইলে একই তথ্য জানা যায়‌‌। এমইইউ না হওয়ায় দুইটি হাসপাতালের প্রস্তুতিতে বিলম্বের কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. ফজলে রাব্বি সিভয়েসকে বলেন, ‘সরকারিভাবে তাদের বলা হয়েছে হাসপাতালটি প্রস্তুত করার জন্য। তারা তাদের হাসপাতাল প্রস্তুত করার পরে মন্ত্রণালয়ে তাদের ডিমান্ড পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় সে অনুযায়ী তাদের অনুদান দিবে। আমরাও চাই, তাদের হাসপাতাল তারা নিজেদের মত করে প্রস্তুত করুক। আমরা শুধু কোভিড পেশেন্টের সরকারি ম্যানেজমেন্টের মধ্যে রাখব।’

সরকারি ম্যানেজমেন্ট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল দুটিতে চিকিৎসা নিতে আক্রান্তদের মূল্য দিতে হবে। বিনামূল্যে এখন আর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। সরকারের পক্ষে সব হাসপাতলে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা তাদের মূল্য তালিকা মনিটর করবো। যাতে কোন হাসপাতালে আক্রান্তদের সুস্থ হতে বাড়তি খরচ না হয় সে বিষয়গুলো আমরা দেখবো।’

হাসপাতালের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল দুইটি বৃহস্পতিবার এর মধ্যে প্রস্তুত করার কথা বলা হলেও প্রস্তুতি এখনো শেষ হয়নি। আমি আজ (বুধবার) সরেজমিনে হাসপাতাল দুইটি পরিদর্শন করে এসেছি। ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের প্রস্তুতি শেষ হতে ১১ বা ১২ জুন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল প্রস্তুত হতে আরো বাড়তি কিছু সময় লাগতে পারে।’

-সিভয়েস/এসজেবি/এডি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়