Cvoice24.com


চসিকের দেনা : চাহিদা মেটাতেই ব্যাপ্তি বাড়িয়েছেন নাছির

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১০ আগস্ট ২০২০
চসিকের দেনা : চাহিদা মেটাতেই ব্যাপ্তি বাড়িয়েছেন নাছির

নগরবাসীর চাহিদা পূরণ, সেবার মান বৃদ্ধি ও
পরিকল্পিত আধুনিক নগর গড়ার লক্ষ্যে ছোট-বড় প্রকল্পসহ বিভিন্ন খাতে নিজেদের গণ্ডি বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। গত ৫ বছরে জোর দেওয়া হয়েছে শিক্ষা, বর্জ্য অপসারণ, 
উন্নত কাঁচাবাজার ব্যবস্থাপনা সহ প্রতিটি খাতের আধুনিকায়ন ও অবকাঠামো নির্মাণে। 

এতে করে বেড়েছে প্রকল্প ব্যয়। চসিক সূত্র বলছে, সাবেক মেয়র প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর দায়িত্ব পালনের ১৫ বছর এবং মেয়র মঞ্জুর আলমের ৫ বছর সহ মোট ২০ বছরে সিটি কর্পোরেশন প্রকল্প পেয়েছিল ২ হাজার ২৪৩ কোটি টাকার। 

অন্যদিকে গত পাঁচ বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন ও সেবা খাতের প্রকল্পের কাজ হয়েছে
বলে জানিয়েছেন সদ্য সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

অর্থাৎ গত ৫ বছরে আগের বিশ বছরের প্রায় দ্ধিগুণের বেশি প্রকল্প পেয়েছেন সদ্য সাবেক সিটি মেয়র নাছির। ওই ২০ বছরের শেষ দিকে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ হাজার ৯ শত জন। এদের মধ্যে ৩ শতাধিক পরিচ্ছন্ন কর্মী বার্ধক্যজনিত অবসরে গিয়েছিল।

অন্যদিকে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে আ জ ম নাছির চসিক মেয়য়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর ক্লিন সিটি গ্রীন সিটির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৭ শত জন। এতে করে সেবার মানের পাশাপাশি  বেড়েছে বেতন ও অন্যান্য ব্যয়। 

চসিক শিক্ষা বিভাগ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুরানো ভবনগুলো জর্জরিত হয়ে পড়েছিল। জোয়ার-বৃষ্টির মৌসুমে পানিতে তলিয়ে যেত সিটি কর্পো: লামাবাজার বালক উচ্চ বিদ্যালয়,  বলুয়ার দিঘী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রহমতগঞ্জ এলাকায় কুসুৃম কুমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের শ্রেণী কক্ষ ও অফিস। সেই সাথে পুরানো এসব জরাজীর্ণ ভবনে ছাদের আস্তরণও খসে পড়ছিল। এই ৫ বছরে এসব ভবন ভেঙ্গে পুনরায় নতুন ভবন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। 

তাছাড়া চসিকের পুরানো ভবনগুলোর  শ্রেণি কক্ষে ৩০ জনের সিটে গাদাগাদি করে বসতে হতো প্রায় ১০০ জনকে। এসব বিষয় মাথায় রেখে নতুন শিক্ষা খাতে নতুন অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। শিক্ষক সংকট কাটাতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিষয় ভিত্তিক আলাদা আলাদা শিক্ষক।

চসিক শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক বলেন, 'শুধুমাত্র পাশ করার জন্য শিক্ষা নয়। শিক্ষার মান উন্নয়নে সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি ও অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছি। তাছাড়া চট্টগ্রামে জঙ্গিবাদ-উগ্রবাদ নিমূর্লে প্রতিবছর সিটি কর্পোরেশনের স্কুলগুলোতে বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এসব বিষয়ে মেয়র মহোদয়ের (আ জ ম নাছির উদ্দীন) অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।'

এদিকে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় আধুনিক
কাঁচাবাজার ভবন নির্মাণ ও বাজারের রাস্তা, 
ফুটপাত ড্রেনের উন্নয়নের জন্য সাড়ে ৮ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে চসিক। অন্যদিকে যানজট নিরসনসহ আধুনিক নগরায়নের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের শেষের দিকে চকবাজার এলাকায়
সাড়ে ১০ গন্ডা চসিক জায়গার উপর ৭ তলা ফাউন্ডেশনের মধ্যে ৩ তলা পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে।এই নির্মাণ কাজে চসিকের ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। যদিও অভিযোগ রয়ে গেছে বহু মূল্যের এসব স্থাপনার ফুটপাতের দখলকার এবং অবৈধ বাজারের কারণে কাজে লাগছে না। তবে চসিক সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, পাকাপোক্ত এসব আধুনিক স্থাপনা ফেলে দেওয়ার জন্য নয়। সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা গেলে বৃদ্ধি পাবে চট্টগ্রাম নগরীর সৌন্দর্য। 

পরিকল্পিত নগরায়নের এই পথে হাটতে গিয়ে
প্রায় ৮শ' কোটি টাকা দেনা চেপেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাঁধে। এর মধ্যে মেয়রসহ সদ্য বিদায়ী পরিষদের পাঁচ বছরে জমেছে অন্তত ৫শ' কোটি টাকা। দেনার একটি বড় অংশই  প্রকল্পখাতের ৩৯০ কোটি টাকা। 

এ ব্যাপারে সদ্য বিদায়ী সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন জানান, গত ৫ বছরে বেশি প্রকল্প গ্রহণ, পুরানো দেনা পরিশোধ এবং কর পুনঃমূল্যায়নে অসহযোগিতা করার কারণে বেড়েছে দেনার অঙ্ক। 

তিনি বলেন, চসিক পরিচালনা সহজ করে দিয়ে গেলাম। এটাই বড় সফলতা। ৩১ বছর ধরে অর্গানোগ্রাম না থাকায় চসিকে দক্ষ জনশক্তির যে অভাব ছিল, প্রবিধানমালা অনুমোদনে সংকট কেটে গেছে। কর্মপরিবেশ এসেছে। একটি সিস্টেমে এসেছে চসিক। ই-টেন্ডার চালু, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাসহ বহুমুখী পরিবর্তন করে গেলাম। আর এর সবটুকুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উদার সহযোগিতায়।

-সিভয়েস/এপি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়