Cvoice24.com

খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি কাল: যা ভাবছেন দু’পক্ষের আইনজীবী

প্রকাশিত: ১৫:২৬, ৭ মে ২০১৮
খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি কাল: যা ভাবছেন দু’পক্ষের আইনজীবী

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার (৮ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির দিন নির্ধারণ রয়েছে। এদিন জামিন শুনানির জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি শেষ করেছেন খালেদা জিয়া ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীরা।

দুদকের দায়ের করা এ দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার পরপরই তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখনও সেখানেই আছেন।

খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডাদেশের পর তার জামিন চেয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ওই আবেদনের ওপর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন শুনানি হয়। শুনানি শেষে খালেদা জিয়াকে ৪ মাসের জামিন দেন আদালত।

কিন্তু খালেদা জিয়াকে দেওয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হয় দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা লিভ টু আপিল করে।

আপিল বিভাগে লিভ টু আপিলের শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল গ্রহণ করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ৮ মে পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৪ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীনের বলেন, ‘এ পর্যন্ত একটিও উদাহরণ নেই যে স্বল্প সাজার মামলার ক্ষেত্রে দেশের সর্বোচ্চ আদালত কখনও জামিন আবেদন স্থগিত করেছেন বা খারিজ করেছেন। তারপরও এ মামলায় সর্বোচ্চ আদালত হস্তক্ষেপ করেছেন। এতে আমরা ক্ষুব্ধ।’

এর আগে আপিল আদালত ৮ মে পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত থাকার পাশাপাশি ওইদিন আপিল শুনানির দিন নির্ধারণ করেছিলেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল গ্রহণ করে আপিল শুনানির জন্য মামলার সারসংক্ষেপ (নথিপত্র) ২ সপ্তাহের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদেরও মামলার সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তবে আদালতের শুনানির নির্ধারিত দিনের অনেক আগেই জামিন শুনানির পূর্ণ প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।

তিনি বলেন, শুনানির জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি আমাদের আছে। আমরা মনে করি, দেশের সর্বোচ্চ আদালত খালেদা জিয়ার মামলার বিভিন্ন দিক বিচার-বিশ্লেষণ করে, আইনি বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ করে এবং অতীতে এ ধরনের মামলায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত যে হস্তক্ষেপ করেননি, তাও বিচার-বিশ্লেষণের মধ্যে আনবেন। এ জন্য আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি।

এ মামলায় দুদকের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আমরা সবসময়ই শুনানির জন্য প্রস্তুত। আপিল বিভাগ যে ৫ কারণের ওপর লিভ টু আপিল গ্রহণ করেছেন, সেগুলোর প্রত্যেকটিতে আমরা আইনি ব্যাখ্যা প্রতিবেদন আকারে আদালতে জমা দিয়েছি। এখন আমরা শুনানির জন্য শতভাগ প্রস্তুত।

এদিকে ৮ মে জামিন শুনানি শেষে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তিনি খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি পাওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) যে অবস্থায় জেলে গিয়েছিলেন, এখন আর সে অবস্থায় নেই। তার চিকিৎসার প্রয়োজন। আমরা কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি তার অসুস্থতার চিকিৎসা জেলে রেখে করা সম্ভব নয়। 

এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছেন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বাইরে করানোর জন্য। আমরাও মনে করি, একমাত্র এ ধরনের চিকিৎসা ইউনাইটেড হাসপাতালে হওয়া প্রয়োজন। এসব বিবেচনা করে আদালত খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রাখবেন বলে আমরা মনে করি।’

এ ব্যাপারে দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, তারা জামিন নিয়ে আশাবাদী হতেই পারেন। কিন্তু কী হবে, না হবে তা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। শুধু বলতে চাই, আমরা আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।

সিভয়েস/আরসি/এমইউ
 

90

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়