Cvoice24.com

আমির খসরুর মন্তব্য/
আওয়ামী লীগের নেতারা এখন বেহেশতে, বিএনপি নেতাকর্মীরা যাবে ‘আগামীর’ বেহেশতে 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩
আওয়ামী লীগের নেতারা এখন বেহেশতে, বিএনপি নেতাকর্মীরা যাবে ‘আগামীর’ বেহেশতে 

আওয়ামী লীগের নেতারা বেহেশতে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু। তিনি বলেছেন, ‘সব ব্যাংক এখন খালি। রিজার্ভ খালি। পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার নোট নতুন করে ছাপানো হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে আজ টাকা নেই, রিজার্ভ নেই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দশ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। পাচার করে বিভিন্ন দেশে ঘরবাড়ি করেছে। রিজার্ভ খালি তাই দেশের মানুষের জন্য পণ্য আমদানি করতে পারছে না ডলার নেই বলে।

যার জন্য দ্রব্যমূল্যের দাম আজ আকাশচুম্বী। যারা জনগণের অর্থ চুরি, ব্যাংক লুটপাট, মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদের কোনো সমস্যা নেই। কারণ তাদের পকেট ভর্তি টাকা। পণ্যের বাজারমূল্য যতই বাড়ুক তাদের সমস্যা হবে না। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক তারা। তারা বেহেশতে আছে। তাদের আগামীর বেহেশতের দরকার নেই। আগামীর বেহেশতে যাবে বিএনপির নেতাকর্মীরা। যারা নির্যাতিত হচ্ছে, কারাবরণ করছে, অত্যাচারে মারা গিয়েছে; তারাই বেহেশতে যাবে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে নগরের কাজির দেউরির নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনের নুর আহম্মেদ সড়কে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন, ২৫ জানুয়ারী গণতন্ত্র হত্যা দিবস ও বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ভর করে আওয়ামী লীগ আজ ক্ষমতায় মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ আজ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একাকী বসবাস করছে। আপনারা সামনে আরও একাকী হয়ে যাবেন; তখন আর জনগণের কাছে যেতে পারবেন না। তখন আপনাদের আশ্রয়স্থল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি কিছু কর্মকর্তা ও দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীরা। তারা কি আপনাদের বাঁচাতে পারবে? রক্ষা করতে পারবে? যাদের উপর তারা ভর করে ক্ষমতায়, তাদের আমরা বার্তা দিচ্ছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সংবিধান মোতাবেক এ দেশের জনগণকে দৈনন্দিন সুরক্ষা দিবে। জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সন্ত্রাসীদের বাঁধাগ্রস্থ করবে। সাংবিধানিক অধিকার কেউ বাঁধাগ্রস্থ করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’

আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে রক্ষীবাহিনী না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাকশালের সময় হাজার হাজার মানুষকে ও মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে রক্ষীবাহিনী। সেসময় তারা রাষ্টের সবসম্পদ লুটেপুটে খেয়েছে। সমস্ত ক্ষমতা রাষ্ট্র প্রধানের হাতে তুলে দিয়েছে। বর্তমান দেশের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী যাতে রক্ষীবাহিনী হয়ে না যায় সে আহবান তাদের জানাই।’

আমীর খসরু বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ সংবিধানকে সুরক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে জনগণকে তার সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। তারা বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে। আপনারা যদি জনগণের বিশ্বাস, আস্থা, সম্মান রক্ষা করতে না পারেন; তাহলে দেশে আইনের শাসন প্রবর্তন করতে পারবেন না। গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, ভয়-ভীতি দেখিয়ে সংবিধান রক্ষা করতে পারবেন না। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেন না। আপনারা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন না। আপনারা আজ ব্যর্থ।’

বাকশালের মতোই এ সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হনন করছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘বাকশাল হচ্ছে ভোট চুরির মেশিন। ১৯৭৫ সালে এ দিনে  নির্বাচনে যাতে তাদের যেতে না হয় সব দল বন্ধ করে বাকশাল নামক একটি স্বৈরাচারি দলের জম্ম তারা দিয়েছিল। অর্থাৎ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার তাদের কোন ইচ্ছা ছিল না। সঙ্গে সঙ্গে তারা আইনের শাসনকে নিজের হাতে নিয়ে ফেলেছিল। আইনের শাসনের অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছিল। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তারা হনন করেছিল। আজকেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নাই। সেদিনও গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরা হয়েছিল। সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। চারটি সরকারি পত্রিকা রাখা হয়েছিল। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যেমে জনগণের জানার অধিকারকে তারা আজ ভূলুণ্ঠিত করতে চাইছে।’

সভাপতির বক্তব্যে আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আমাদের ১০ দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচী দেয়া হয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে আরেকটি ধাপ আমরা এগিয়ে গিয়েছি। পলোগ্রাউন্ডের জনসভার পর আজকে এবং ২৪ তারিখের গণমিছিলে চট্টগ্রামবাসী আবারো প্রমাণ করেছেন দখলদার, অবৈধ, অনির্বাচিত, ফ্যাসিস্ট সরকারকে জনগণ আর চায় না। আজকে আবারও বার্তা দিয়েছেন দখলদার ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় হও।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জালাল উদ্দীন মজুমদার বলেন, ‘১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। চার পত্রিকা রেখে সবকিছু বন্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতারা আওয়ামী লীগ নামে দল করার জন্য শহীদ জিয়ার কাছে দরখাস্ত দিয়েছিলেন। শহীদ জিয়া অনুমোদন দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ করার জন্য। আজকে আওয়ামী লীগ বড় বড় কথা বলছে, তাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের ঠেলায় মানুষ আজ অস্থির। এখন তারা নাকি স্মার্ট বাংলাদেশ করবে। ব্যাংক খালি করা স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা চাই না।’ 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভিপি হারুনুর রশীদ বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের কথায় কথায় বলে, খেলা হবে। কিন্তু কি খেলা হবে? এই কাদেরতো ভূয়া কাদের। কিছুদিন আগে ওর ভাই বলেছিল আওয়ামী লীগের নেতারা পালানোর জন্য দরজা খুঁজে পাবে না। উনি কি খেলা খেলবেন। এখন সময় এসেছে, এখন খেলবে বিএনপি। যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে ২০২৩ সালের মধ্যে জনগণ এই সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন করবে। আওয়ামী লীগের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মনজুর আলম চৌধুরী মঞ্জু ও মো. কামরুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা বিএনপির সি. যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এড আবদুস সাত্তার, শফিকুর রহমান স্বপন, ইসকান্দর মির্জা, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন, অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, নুরুল আমিন, নূর মোহাম্মদ, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, সরওয়ার আলমগীর, কাজী সালাউদ্দিন, আহবায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, এনামুল হক এনাম, জসিম উদ্দিন শিকদার, এড. ইফতেখার মহসিন চৌধুরী, মাহবুব আলম, আবুল হাশেম, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আনোয়ার হোসেন লিপু, নাজমুল মোস্তফা আমিন, মোস্তাফিজুর রহমান, মুজিবুর রহমান, এড. আবু তাহের, মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহজাহান, উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান জসিম, সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী, মহানগর কৃষকদলের আহ্বায়ক মো. আলমগীর, সদস্য সচিব কামাল পাশা নিজামী এবং চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়