Cvoice24.com

কোথাও ‘জিতেনি’ বিএনপি’র প্রার্থীরা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ২৭ জানুয়ারি ২০২১
কোথাও ‘জিতেনি’ বিএনপি’র প্রার্থীরা

গেল বার মেয়র পদে জিততে না পারলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নানা প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে জিতে এসেছিল বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ৫ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৩ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর। তবে এবারের নির্বাচনী প্রেক্ষাপটে তারা হেরেছেন সব’কটি সাধারণ ওয়ার্ডে। শোচনীয় ফলাফল হয়েছে সংরক্ষিত কাউন্সিলর ওয়ার্ডের (নারী) সবগুলোতেও। যদিও বিএনপির নেতারা বলছেন, ‘ভোট ডাকাতির এ নির্বাচনে হারের ফলে সাংগঠনিক কার্যক্রমে কোন প্রভাব পড়বে না।’

অবশ্য শোচনীয় হারের পর বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা অভিযোগ করছেন, ‘ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা গত রাত থেকেই পাড়া মহল্লায় ভোট ডাকাতির মহড়া দিয়েছে। ভোটাররা যেন কেন্দ্রে না আসে, তার জন্য সবকিছুই করেছেন তারা।’

এদিকে দিনভর থেমে থেমে সংঘর্ষ-সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এবারের নির্বাচন। ভোটের কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারে ইভিএম চুরি থেকে শুরু করে জবাই, হত্যা কিংবা গোলাগুলির ঘটনা সবই হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এবং ক্ষমতাসীন দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে। সহিংসতা ভর করা এ নির্বাচন দু’টি লাশও পড়েছে।
 
এদিকে প্রতিবারের মত সকাল থেকেই ভোটের মাঠে টিকতে পারে নি বিএনপি। নির্বাচনের আগে প্রচার-প্রচারণায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিপুল সমাগম থাকলেও নির্বাচনের দিন তেমন কাউকে দেখা যায়নি। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারি দলের চাপ ও কৌশলের কাছে হেরে মাঠে ছিল না দলটির নেতা-কর্মীরা। বুধবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সব এজেন্টকে কেন্দ্রে পাঠাতে পারেনি। কোথাও কোথাও এজেন্টরা কেন্দ্র পর্যন্ত গেলেও সেখানে টিকে থাকার সামর্থ্য ছিল না তাদের।

এবারের নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭১ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের ৫৭ জন প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে ৪১ টি সাধারণ ওয়ার্ডের বিপরীতে ভোটারদের সরাসরি ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩৯টি ওয়ার্ডে। এর আগে কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে স্থগিত হয়েছে ৩১ নং আলকরণ ওয়ার্ডের নির্বাচন এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে।

অন্যদিকে ৩৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী জিতেছে ৩৩টি ওয়ার্ডে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বাকি জিতেছে ৬টি ওয়ার্ডে এবং ১৪টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের সবকটিতেই নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেছে আওয়ামী লীগের নারী কাউন্সিলররা।

অবশ্য সব ক’টি ওয়ার্ড এবং মেয়র পদে হেরে যাওয়ার পর নানা অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত। তিনি বলেন, ‘কোন নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হয়নি। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। পুলিশ-প্রশাসনের মাধ্যমে নির্বাচনের নামে ভোট লুট করেছে আওয়ামী লীগ।’

সব ক’টি ওয়ার্ডে পরাজয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে তো হার জিতের কোন বিষয় নেই। হার-জিত কখন হয়? কোন নির্বাচনই তো হয়নি।’ 

ভোট ডাকাতির মহড়া হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন-‘এখানে যা হয়েছে তা ভোট ডাকাতির মহড়া। পুলিশ-প্রশাসন এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মিলে ভোট ডাকাতির মহড়া দিয়েছে। আমিও এর একটি অংশ। বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা এতে অংশ নিয়েছেন কেননা আমরা চেয়েছি শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। যেন জনগণ তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’

সিভয়েস/এপি/এএস

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়