নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ‘জয়ী’ হবেন ইয়াসিন আরাফাত
সিভয়েস প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্থগিত থাকা ৩১নং আলকরণ ওয়ার্ডের নির্বাচন আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে আলকরণ ওয়ার্ডে বর্তমানে সাজ সাজ রব। ওয়ার্ডের ১৫ হাজার ভোটারের লক্ষ্য পূরণের স্বপ্নদৃষ্টা হয়ে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি মো. ইয়াসিন আরাফাত। তারুণ্য নির্ভর আলকরণ ওয়ার্ডকে নতুনভাবে গড়তে চান তিনি। এলাকাকে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের ব্যাপারে তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সুষ্ঠু নির্বাচন হলেই জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী তরুণ এ প্রার্থী।
মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আলকরণ ওয়ার্ডে চলছে প্রার্থীদের রমরমা প্রচারণা। এলাকার জনগণ বসে আছে প্রতীক্ষিত ভোটের জন্য। এবার পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে ‘মিষ্টি কুমড়া’ প্রতীকে লড়ছেন মো. ইয়াসিন আরাফাত। প্রয়াত তারেক সোলেমান সেলিম মারা যাওয়ায় প্রার্থী হওয়ার সুযোগ আসে তার সামনে। সেলিমের স্ত্রী স্বামীর ওয়ার্ডে নমিনেশন পেপার নিলেও পরে নির্বাচন থেকে সরে আসায় তার সমর্থনও ইয়াসিনের দিকে গেছে।
আলকরণকে নিয়ে তার সার্বিক পরিকল্পনা তিনি সিভয়েসকে বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে ৩১নং আলকরণ ওয়ার্ডকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্য পূরণে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ প্রজন্মদের হাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ করার সোনার চাবি তুলে দিয়েছেন। বর্তমানে দেশে তরুণ প্রজন্মরা তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়ার জন্য বিভিন্নভাবে প্রতিনিধিত্ব করছেন। সেই সুবাদে আমি আমার আলকরণ ওয়ার্ডকে হেলদি (স্বাস্থ্যকর) ওয়ার্ড করার জন্য তরুণ প্রতিনিধি হিসেবে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি।’
মো. ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘জনসংযোগে আমার এলাকায় প্রবীন, নবীন ও মহিলাদের সাড়া পাচ্ছি। প্রতিনিয়ত আমার স্বপ্নগুলোর কথা তারা শুনছে। স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নের জন্য জনগণ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে। জনগণ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে আমাকে নির্বাচিত হওয়ার পর তারা সম্পৃক্ত থেকে স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নে কাজ করবে।’
‘নিবার্চনে জয়ী হলে আলকরণ ওয়ার্ডকে নিয়ে আমার কিছু লক্ষ্য আছে। মূলত অসমাপ্ত কাজগুলো নিয়ে আমার পরিকল্পনা আছে। এরমধ্যে ওয়ার্ডের প্রাথমিক শিক্ষার প্রবতর্ক নূর আহমদের স্মরণে আলকরণ মুখে একটি চত্বর করা হবে। এলাকার নালা-নদর্মা সংস্কার, অবকাঠামো সংস্কার বা উন্নয়ন করবো। নগরের গুরুত্বপূর্ণ বাজার রিয়াজ উদ্দিন বাজারকে আরও আধুনিক করা হবে। নারী-পুরুষ সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারে সেইভাবেই বাজারকে গড়ে তোলা হবে। মানুষের নিরাপত্তাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাব’— যোগ করেন তিনি।
ইয়াসিন বলেন, ‘আমি কাউন্সিলর হলে এই ওয়ার্ডে একটি গণ-পাঠাগার করবো। এটা তরুণ প্রজন্মদের কাছে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তরুণরা যেন বইমুখী হয়, তাদের জ্ঞান অর্জনের ব্যাপারে আমার সুনজর থাকবে। নিউমার্কেট এলাকাসহ আলকরণ ওয়ার্ডকে মাদক, ছিনতাই, কিশোর গ্যাং মুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে চান তরুণ প্রজন্মের এ প্রতিনিধি ‘
তিনি বলেন, ‘নগর জুড়ে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য এখন মহামারী আকার ধারণ করছে। আমি নির্বাচিত হলে, পুরো আলকরণ ওয়ার্ডকে সিসি টিভি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। কিশোরদের অপরাধ দমনে আমার পক্ষ থেকে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। আমার একমাত্র লক্ষ্যই হলো এলাকায় নারী-পুরুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ইভটিজিং, মাদক, অসামাজিক কার্যকলাপসহ সমাজের নানা সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে আমি প্রশাসন ও আইনের সাহায্য নিব।’
ইয়াসিন আরাফাত আরও বলেন, ‘মানুষের সেবা করায় আমার ব্রত। আমি ছাত্র রাজনীতি করে এসেছি। জনগণের টাকায় পড়াশোনা করেছি। কোভিড সংক্রমণকালীন লকডাউনে আমি কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। নিঃস্বার্থভাবেই তখন আমি তাদের সাহায্য করেছিলাম। বর্তমানে জনসংযোগের সময় তাদের সহযোগিতা আমাকে বেশি শান্তি দিচ্ছে। তারাই আমাকে কাউন্সিলর হিসেবে দেখতে চায়।’
১২ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পযর্ন্ত প্রচারণায় সমস্যা ও নিবার্চনের পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পযর্ন্ত নির্বাচনের জনসংযোগে আমার কিছু কর্মীদের গায়ে হাত তুলেছে। এমনকি এক প্রার্থীও গায়ে হাত তোলার অভিযোগ পেয়েছি কর্মীদের কাছ থেকে। এ বিষয়ে নিবার্চন কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি’— যোগ করেন তিনি।
মিষ্টি কুমড়ার এ প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে হিংসা-মারামারি এসব চাই না। কারণ আমরা তরুণ প্রজন্ম। ভোটে হার-জিত থাকবে; জনগণ যাকে ভোট দিবে সেই জিতবে। এখানে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও ভোট কেন্দ্র দখলের হুমকিও দেয়া হচ্ছে। এমনকি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের ভোট কেন্দ্রে না আসতে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে।’
জয়ের ব্যাপারে পূর্ণ আশাবাদী হয়ে এ তরুণ নেতা বলেন, ‘ভোটের দিন যদি মানুষ নির্বিঘ্নে সুন্দর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দেয়। তাহলে আমি নিশ্চিত; জয় আমার হবে। এটা আমার কথা না, আমার সমর্থক তথা এলাকাবাসীর কথা। এছাড়া আসন্ন ভোট নিয়ে এলাকায় অনেকে গুজব ও ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে; তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন যদি আমাদের নিয়শ্চয়তা দিতে পারে তাহলে আমি জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত। জনগণের ভোটে আমি নির্বাচিত হবো। আমি তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে বলতে চাই, আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা করবো। এতে হার-জিত যা হয় হাসিমুখে মেনে নিব। ফলাফল মেনে নেওয়ার পরিবেশটা যেন নিশ্চিত হয় এটাই কাম্য থাকবে। শেষ পর্যন্ত মানুষ ‘মিষ্টি কুমড়া’ প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।’
-সিভয়েস/এইচবি/এমএম