Cvoice24.com

বাবুনগরীর সুরে কথা বললেন শফীপুত্র আনাস মাদানী

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৪৪, ২০ এপ্রিল ২০২১
বাবুনগরীর সুরে কথা বললেন শফীপুত্র আনাস মাদানী

পবিত্র রমজানে সারাদেশে আলেম, শিক্ষক ও মাদ্রাসা ছাত্রদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির মরহুম আহমদ শফীর পুত্র মাওলানা আনাস মাদানী। তিনি যখন এ প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঠিক তার একদিন আগেও তার বিরোধী পক্ষ হিসেবে পরিচিত হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীও নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান। যাদের ইতোমধ্যে পুলিশ বিভিন্ন সময়ে নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। 

সোমবার রাতে আঞ্জুমানে দাওয়াতে ইসলাম বাংলাদেশের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ সালমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন তিনি। যেই সংগঠনটির আমিরের দায়িত্ব পালন করছেন শফীপুত্র আনাস। 

করোনার মধ্যেও কওমি মাদ্রাসা খুলতে চায় হেফাজত

আনাস মাদানী বিবৃতিতে বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বিচারের নামে নিরপরাধ কাউকে যেন অযথা হয়রানির শিকার না হতে হয় এ বিষয়ে সরকারকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক, এটা আমাদেরও দাবি।’

তিনি বলেন, ‘আব্বাজান শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) ছিলেন এদেশের কওমি মাদ্রাসার জন্য আল্লাহর বিশেষ রহমত স্বরূপ। তিনি সবসময় ইসলাম ও মুসলমানের কল্যাণের কথা ভেবেছেন। সকল দল ও মতের মানুষের সঙ্গে সম্মানজনক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন। ইসলামি শিক্ষা তাহজিব ও তমদ্দুনকে সবর্স্তরের জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর যে বৃহৎ অবদান রয়েছে তাকে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সঠিকভাবে উপস্থাপন করায় তার অবদান অনস্বীকার্য।’

তের সালের মামলায় একুশ সালে কেন গ্রেপ্তার— প্রশ্ন বাবুনগরীর

আনাস মাদানী আরও বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যেও কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা পদ্ধতির প্রতি সুবিচার করে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় হলেও মাদরাসাগুলোকে অতি দ্রুত খুলে দেওয়া হোক। প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মান্য করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে কীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যায় সে বিষয়ে উলামায়ে কেরামের সঙ্গে সমন্বয় করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’ 

গত ১১ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে একই দাবি করেছিলেন হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীও। তিনি ওই দিন বলেছিলেন, ‘করোনার অজুহাতে দেশের ঐতিহ্যবাহী কওমী মাদরাসা বন্ধ করার ষড়যন্ত্র দেশের তৌহিদী জনতা মেনে নেবে না। করোনা মহমারী থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে কুরআনের তিলাওয়াত, যিকির, তাসবী পাঠ ও দুআ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং মহান আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার লক্ষে কুরআন ও হাদীসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখা সরকারেরই নৈতিক কর্তব্য। তাই পবিত্র মাহে রমযানে হিফয খানা, নূরানী, মক্তব চালু রাখতে হবে। মসজিদে সুন্নাহ মুতাবেক নামায, তারাবীহ, ইতিকাফ চলবে। লকডাউনের নামে শরীয়ত বিরোধী কোনো বিধি-নিষেধ আরোপ করা যাবে না। যথা নিয়মে তাফসীর, দাওয়াত ও তালীমের কাজ চালু রাখতে হবে।’

শফীপুত্র আনাস হেজাজতের নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ না করে আলেম ওলামাদের মুক্তির দাবি করলেও জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতের নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেছিলেন। কেননা হেফাজতের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় হেফাজতে আমির বলেন, ‘আমাদের দেশের অবস্থা একটু ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। মাহে রমজানে প্রশাসন বেধড়কভাবে আমাদের হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মী, হক্কানি আলেম ওলামাদের, দেশের জনগণকে, ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করছে। অবিলম্বে এ ধরপাকড় ও হয়রানি বন্ধ এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তাছাড়া আমাদের হেফাজত নেতৃবৃন্দ ছাড়াও নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাসহ ছাত্র ও তৌহিদী জনতা যাদেরকে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’ 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়