Cvoice24.com

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাতে ফখরুলের ফোনালাপ

সিভয়েস ঢাকা

প্রকাশিত: ০১:০৮, ৪ মে ২০২১
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাতে ফখরুলের ফোনালাপ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শ্বাসকষ্টের কারণে কেবিন থেকে সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) স্থানান্তর করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এখন সিঙ্গাপুরে নিতে চায় পরিবার। সোমবার (৩ মে) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফোন করে এ কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগমীর।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা অবহিত করেন মির্জা আলমগীর। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার বলে বিএনপি মহাসচিবকে জানান। 

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানিয়েছি।’ 

এর আগে, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে যেতে তার পরিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে, এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে বেগম জিয়াকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার বিষয়ে লিখিত কোনো আবেদন এখনো করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তার বোন সেলিমা ইসলাম।

এদিকে খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল টিমের সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন অবশ্য বলেন, ‘ম্যাডাম কিছুটা শ্বাসকষ্ট অনুভব করছিলেন সকালের দিকে। পরে চিকিৎসকরা সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। ওনার অবস্থা এখন স্থিতিশীল আছে।’ 

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গুরুতর কিনা, স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছেন কি— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ডা. জাহিদ বলেন, ‘করোনারি কেয়ার ইউনিটে যে রোগী থাকেন তারা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নেন। আমি ওনার সঙ্গে কথা বলে এসেছি। ম্যাডাম স্বাভাবিকভাবেই শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন।’ 

এই চিকিৎসক বলেন, ‘সোমবার ভোরে ম্যাডাম শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। এর পরপরই বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। পরে মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের সংক্ষিপ্ত সিদ্ধান্তে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।’ 

রোগমুক্তির জন্য খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলেও জানান ডা. জাহিদ। কী কারণে এই শ্বাসকষ্ট— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মানুষের যে কোনো সময়, যে কোনো পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। ম্যাডামের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
দেশি-বিদেশি চিকিৎসকরা আছেন, তাদের সিদ্ধান্তে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানাতে পারব।’ খালেদা জিয়ার আবার করোনা পরীক্ষা হয়েছে কিনা, সাংবাদিকদের এ প্রশ্ন এড়িয়ে যান ডা. জাহিদ হোসেন।

একটি সূত্র জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার অক্সিজেন লেভেল ৯৩/৯৪ ওঠানামা করছিল। বাড়তি সতর্কতার কারণেই তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। সোমবার মধ্যরাতে অবশ্য জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। শ্বাসকষ্টও কিছুটা কমেছে।
  
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর গত ২৭ এপ্রিল খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিটি স্ক্যান (চেস্ট), হৃদযন্ত্রের কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়। 

খালেদা জিয়াকে তার পায়ের ব্যথাও বেশ ভোগাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যার কারণে তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। এ অবস্থায় গত রবিবার চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড বসে। 

জানা গেছে, এ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করে মেডিক্যাল বোর্ড। বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ, ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডা. সিনা, ডা. ফাহামিদা বেগম, ডা. মাসুম কামাল, ডা. আল মামুন, সাদিকুল ইসলাম এবং ডা. তামান্না। 

প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকে এসব চিকিৎসক খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানতে তার বিভিন্ন মেডিক্যাল টেস্ট পর্যবেক্ষণ করেন। 

এ বিষয়ে ডা. জাহিদ হোসেন জানান, মেডিক্যাল বোর্ড যখন সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখে খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ সুস্থ মনে করবে তখনই বাসায় নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। গত রবিবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নতুন কিছু পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছে বোর্ড।  
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। করোনা আক্রান্তের ১৪ দিন পার হওয়ার পরে খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট করা হয়েছিল, কিন্তু ফল পজিটিভ আসে।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়