Cvoice24.com

নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে, ঘোষণা কবে জানেনা কেউ

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ২৭ জুলাই ২০২১
নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে, ঘোষণা কবে জানেনা কেউ

গত ১৯ জুন ‘ভার্চুয়াল’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারেনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ। দুই পদের বিপরীতে ৭৫ জন আগ্রহী পদ প্রত্যাশীর বায়োডাটা নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে স্বেচ্ছাসেবক লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা সিভয়েসকে জানিয়েছিলেন, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে ২০ বছরের জট খুললো। এখন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সেক্রেটারি মহানগর কমিটিতে সভাপতি ও সেক্রেটারি হতে আগ্রহী ৭৫ জনের বায়োডাটা যাচাই করবেন। তারপর চট্টগ্রামের নেতাদের পরামর্শ নিয়ে ঐক্যমতের কমিটি ঘোষণা দেয়ার চেষ্টা করবেন। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে আমরা নেত্রীর দ্বারস্থ হবো। তিনি যার হাতেই নেতৃত্ব দিবেন সেটাই হবে।’

তিনি আরও জানিয়েছিলেন, সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ঘোষিত হবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের আংশিক কমিটি। তবে ৬ সপ্তাহ পার হতে চললেও কমিটি পায়নি চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ। আদৌ কখন কমিটি হবে সেই বিষয়েও স্পষ্ট জানাতে পারছেন না কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ। কমিটি নিয়ে চট্টগ্রামের পদ প্রত্যাশী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের তদবিরের চোটে নেতৃত্ব নির্ধারণে এখন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার দ্বারস্থ হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি। এমন ধোঁয়াশা ও অনিশ্চিয়তার মধ্যেই কমিটিহীন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ প্রত্যাশীরা বিচ্ছিন্নভাবে যে যার মত করে ২৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছেন। নগরে যেহেতু কমিটি নেই, তাই নগর কমিটির ব্যানারে কোনও আয়োজনও নেই। 

কমিটি ঘোষিত না হওয়ায় পদ প্রত্যাশীরা যেমন হতাশ তেমনি বিদায়ী কমিটির নেতারাও হতাশ। পদ প্রত্যাশী বেশ কয়েকজন নেতা বলেছেন, ৪০ দিনের বেশি সময় পার হলেও কমিটি ঘোষিত হয়নি। ২৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করতে হচ্ছে যে যার মত করে। লকডাউনে যদি কমিটি না হয় আগস্টেও কমিটি হবার কথা নয়। সব মিলিয়ে বিষয়টি নিয়ে নেতাকর্মীরা হতাশ ও এক প্রকার অনিশ্চিয়তার মধ্যে আছে। অন্যদিকে প্রথম দিকে ঢাকায় পদ প্রত্যাশী নেতারা লবিং করলেও পরের দিকে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতেই যে নেতৃত্বে নাটাই সেটা বুঝে গেছেন। ফলে চট্টগ্রামের নেতা বিশেষ করে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের আর্শীবাদ পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। 

এই দুই নেতাসহ চট্টগ্রামের আরও কয়েকজন নেতা তাদের অনুসারীদের নেতৃত্বে আনতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের হাতেও তুলে দেন নিজ অনুসারীদের তালিকা। সেই তালিকা নিয়েই বিপাকে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ। কাকে রেখে কাকে আনবে নেতৃত্বে। এই সমীকরণে নিরুপায় হয়ে তারাও দ্বারস্থ হন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এখন প্রধানমন্ত্রীই নির্ধারণ করবেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্ব। তবে সেটা কখন কবে তা জানে না খোদ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও। 

কমিটি না থাকায় এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন কীভাবে হচ্ছে জানতে চাইলে বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দীন সিভয়েসকে বলেন, ‘যেহেতু আমাদের কমিটি বিলুপ্ত আর কভিড পরিস্থিতি তাই সীমিত আকারেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার কথা। তবে আমরা কোন কর্মসূচি পালন করছি না। এখন যারা পদ প্রত্যাশী তারাই নিজ নিজ উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করবেন।’

কমিটি গঠনে বিলম্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কমিটির ঘোষণা হওয়া জরুরি। তবে সেটা এখন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের হাতে। কখন দিবে সে বিষয়ে জানা নেই। এই দুই একদিনে না দিলে আগস্টেও হবে না।’

জানতে চাইলে সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় কমিটি ঘোষণা করেছি। চট্টগ্রাম মহানগর কমিটিও শিগগিরই করব। নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে জটিলতা চলছে তাই একটু সময় লাগছে। আর এখন কঠোর লকডাউন চলছে, এই সময়ে কমিটি দেওয়া সম্ভব নয়।’

তাহলে কখন কমিটি আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লকডাউন শেষ হলে আগস্ট মাস শুরু। তখন কমিটি দেওয়া হবে না। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে দিতে পারি। মূলত চট্টগ্রামের নেতাদের সুপারিশও বিবেচনায় নিতে হচ্ছে সে কারণে একাধিক শক্তিশালী ক্যান্ডিডেট থাকায় একটু বিলম্ব হচ্ছে।’

যদিও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন, ‘চট্টগ্রামের নেতাদের সুপারিশে একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় আমরা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছি। উনিই নেতৃত্ব নির্বাচন করে দেবেন।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়